হাওর উৎসব/০৮ উদযাপনে করণীয় পন্থা নির্ধারণ
হাওর পরিবেশ উন্নয়নকল্পে আলোচনা সভায়
হাওর উৎসব/০৮ উদযাপনে করণীয় পন্থা নির্ধারণ
 
হাওর জীবন আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে: সমগ্র জাতিরই কর্তব্য প্রকৃতির অনন্য দান হাওরকে নিজ সম্পদ বিবেচনা করে আজ রক্ষা করা৯ জুলাই ২০০৮ বুধবার সকাল ১১:০০ টায় জাতীয় হাওর উৎসব কমিটি’র উদ্যোগে ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর ব্যবস্থাপনায় “হাওর-পরিবেশ উন্নয়নকল্পে করণীয়” শীর্ষক ‘জাতীয় হাওর উৎসব’২০০৮ আয়োজন উপলক্ষ্যে পবা মিলনায়তনে (৫৮/১ কলাবাগান, প্রথম গলি, ঢাকা) এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।  মেজর সৈয়দ আবু বকর সিদ্দুক পিএসসি (অব:) এর সঞ্চালনার মধ্যে দিয়ে আলোচনা সভার কাজ শুরু হয়। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাতীয় হাওড় উৎসব কমিটি’র সদস্য সচিব কামাল পাশা চৌধুরী। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রকৌশলী এনামুল হক, মহাপরিচালক, পানি সম্পদ উন্নয়ন সংস্থা, অধ্যাপক ফুলেহ হোসেন,  আলোচনায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের প্রাকৃতিক বৈচিত্রের অনন্য উদাহারণ এই হাওর। উদ্ভিদ,অর্থকরি ফসল ও জীব বৈচিত্রের এক সমৃদ্ধ ভান্ডার। সাতটি জেলার ৪০টি থানায় মোট ৪৭টি ছোট বড় হাওর রয়েছে। যার মাঝে সাপের মত পেচিয়ে আছে অসংখ্য খাল নদী এবং প্রায় ৬৩০০টি বিল। কিন্তু এর সংখ্যা দ্রুত কমছে।
 
আলোচকরা বলেন, বিপুল পরিমান মানুষ ও প্রাকৃতিক সম্পদ নিয়ে হাওর আজ সার্বিক অর্থেই বিপন্ন। ক্রমাগত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট দারিদ্র্যের ফলে অভাবী মুনষ বুঝে না বুঝে ধ্বংস করছে প্রকৃতি ও পরিবেশকে। অন্যদিকে জলাভুমি ইজারাদার ও লগ্নি ব্যবসায়ীর হাতে ধ্বংস হচ্ছে জলাভূমি ও মৎস্য সম্পদ, নানাভাবে লাঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি জন্ম দিচ্ছে স্থানীয় টাউট, যাদের অর্থ লুলপতা নানাভাবে বিপর্যস্ত করছে হাওর জীবনকে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সকল মৌলিক অধিকার থেকে সর্বাধিক বঞ্চিত ও অবহেলিত হাওর অঞ্চল।
 
উপরন্ত যে সকল সরকারী বা বেসরকারী সংস্থা বিগত পঞ্চাশ বছর হাওর অঞ্চলে নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে বা করার চেষ্টা করেছে তার অধিকাংশই আজ হাওরের বৈরী বলে প্রমাণিত। যার মাঝে উল্লেখযোগ্য, অপরিকল্পিত বাঁধ, রাস্তা বা ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ। খাস জমির বরাদ্দের মাধ্যমে বনাঞ্চল ধ্বংস। কীটনাশক ও রাসায়নিক সারের ব্যপক প্রয়োগে সরকারী উৎসাহ সহ আরো নানাবিধ অপপরিকল্পনা।  
এরকম অসংখ্য জানা ও অজানা সমস্যায় হাওর জীবন আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এ অবস্থায় সমগ্র জাতিরই কর্তব্য প্রকৃতির এই অনন্য দান হাওরকে নিজ সম্পদ বিবেচনা করে আজ রক্ষা করা। 
উল্লেখিত বিষয়াদি বিবেচনা করে হাওরকে রক্ষা করার জন্য হাওরের মানুষকে সম্পৃক্ত করে একটি সংগঠিত স্থায়ী কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে একটি উৎসবের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে।
হাওরে প্রচলিত নানা ধরনের লুপ্ত ও লুপ্তপ্রায় সাংস্কৃতিক বিষয় সমূহকে উপস্থাপনসহ হাওরের সাধারণ মানুষের সঙ্গে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে মত বিনিময়ের লক্ষেই মূলত আয়োজিত হবে এ উৎসব। যা’ হাওর উৎসব নামে আখ্যায়িত হবে। উৎসবের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে নেত্রকোনা জেলার মহোনগঞ্জ উপজেলায়। যা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২২,২৩,২৪ জুলাই ২০০৮ এ। 
আজকের সেমিনারসহ পরবর্তি সব আলোচনা ্ও হাওর উৎসব থেকে উঠে আসা সুপারিশ থেকে একটি হাওর ঘোষণাও চূড়ান্ত করা হবে।