জাতীয় হাওর উৎসব ২০০৮ এর ঘোষণা প্রকাশ ঃ সংবাদ সম্মেলন
জাতীয় হাওর উৎসব ২০০৮ এর ঘোষণা প্রকাশ ঃ সংবাদ সম্মেলন
 
নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জে গত ২২, ২৩, ২৪ আগস্ট/০৮ তিনদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় প্রথম জাতীয় হাওর উৎসব। হাওর অঞ্চলের লক্ষ জনতার অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানাদির পাশাপাশি ও সর্বস্তরের পেশাজীবী ও বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞগণের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মতবিনিময়মূলক বৈঠক। বৈঠক সমূহে উত্থাপিত হাওর অঞ্চলের বিরাজিত শতাধিক সমস্যাবলী ও দাবী-দাওয়া উঠে আসে। উক্ত দাবী ও চিহ্নিত সমস্যাগুলোর বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মহলের সাথে আলোচনার মাধ্যমে ‘মোহনগঞ্জ ঘোষণা’ নামে সংকলিত করা হয়। আজ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৮ মঙ্গলবার, সকাল ১১:০০ টায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির ভিআইপি লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তা প্রকাশ করা হয়। ঘোষণাটি আগামীকাল সরকারের নিকট পেশ করা হবে। 
 
ঘোষণার শতাধিক সমস্যা চিহ্নিতকরণ সহ যে দাবী সমূহ উত্থাপিত হয় তার মধ্যে থেকে আশু করণীয় হিসাবে নির্ধারণ করা হয় নিুোক্তগুলি ঃ 
১. বোরো ফসল রক্ষার জন্য বেড়িবাঁধগুলো সংস্কার কাজে স্থানীয় কৃষকদের যুক্তকরা, প্রয়োজনে যৌথ বাহিনীর তত্ত্বাবধান;
২. সুরমা-ধনু-ঘোড়াউত্রা নদী (মুলত: একই নদী) ভৈরব পর্যন্ত খনন;
৩. কংস নদ দুর্গাপুর থেকে ধনু-সংযোগ পর্যন্ত খনন। (উল্লেখ্য: একবছরের ফসল হানীতে যে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় তা দিয়ে নদী খনন ব্যায়ের তুলনায় অনেকগুন বেশি তাছাড়া উপরে উল্লেখিত নদী খননের ফল স্বরুপ ঢাকার সঙ্গে সমগ্র হাওর এলাকার সারা বছর নৌ-যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে)
৪. ছোট জলাশয়গুলো উপজেলা প্রশাসন তথা যুব উন্নয়ন দপ্তর থেকে লিজ দেয়া হচ্ছে, যাতে সাধারণ দরিদ্র কৃষক-জনতার মাছ ধরা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে। ফলে শিশুসহ নিুবিত্ত পরিবারে সকলে বঞ্চিত হবে প্রোটিন যোগান থেকে। অবিলম্বে এই লিজ বন্ধ করা প্রয়োজন;
৫. ময়মনসিংহ-মোহনগঞ্জ ও ঢাকা-মোহনগঞ্জ সড়কটি অবিলম্বে সংস্কারের প্রয়োজন। ঢাকা-মোহনগঞ্জ সরাসরি ট্রেন চালু প্রয়োজন;
৬. মৎস্য আড়ত কেন্দ্রগুলোতে বিশেষভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা; 
৭. গাগলাজুর বাজার পর্যন্ত ডুবো রাস্তাটির কাজ সম্পন্ন করা;
৮. হাওরের কেন্দ্র এলাকায় অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের একটি দপ্তর স্থাপন করা;
৯. পরীক্ষামূলকভাবে ভাসমান স্বাস্থ্য সেবা ইউনিট চালু করা;
১০. হাওরে সমৃদ্ধ সংস্কৃতি রক্ষার জন্য একটি হাওর সংস্কৃতি একাডেমি স্থাপন;
১১. আপাতত সুনামগঞ্জ জেলার ধরম পাশা উপজেলার ‘শয়তানখালি বিল’ নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলার ডিঙ্গাপোতা হাওরের ‘বৈঠাখালি বিল’ ও কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার ‘শুকবিল সানিন্দা’ (সাইন্ন্্যার বিল) এই তিনটি বিলকে মাছ, পাখি সহ সকল প্রানীর জন্য ‘অভয়াশ্রম’ হিসাবে ঘোষণা করা;
১২. মোহনগঞ্জ উপজেলাকে হাওর উপজেলা হিসাবে ঘোষণা করা;
১৩. হিজল-করচের বনায়ন করা ও হাওর উপযোগি বৃক্ষের একটি (আপাতত) নার্সারী স্থাপন করা।
 
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- হাওর উৎসব কমিটি ও পবা এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সদস্য সচিব কামাল পাশা চৌধুরী, সমন্বয়কারী আতিকুর রহমান খান পূর্নিয়া, অন্যতম সদস্য ছবি বিশ্বাস ও ড. হালিম দাদ খান।