যেখানে সেখানে কোরবানীর পশু জবাই করা যাবে না কোরবানীর পশুর আবর্জনা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সরিয়ে ফেলতে হবে
যেখানে সেখানে কোরবানীর পশু জবাই করা যাবে না
কোরবানীর পশুর আবর্জনা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সরিয়ে ফেলতে হবে
 
যত্রতত্র পশু কোরবানীর ফলে ঢাকা মহানগরীর পরিবেশের মারাত্বক অবনতি ঘটে, দ্রুত যথাযথ পরিচ্ছন্নতার অভাবে জনস্বাস্থ্য হুমকীর সম্মুখীন হয়। যদি যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমাদের কোরবানীর পশু নির্ধারিত স্থানে জবাই করা হয় তাহলে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ রোধ হবে অন্যদিকে জবাই পরবর্তী উচ্ছিষ্ঠ সমূহকে সম্পদে রূপান্তরিত করাও সম্ভব হবে। ফলে নগরী দূষণমুক্ত থাকবে, জনস্বাস্থ্য বিঘিœত হবেনা। অন্যদিকে কোরবানীর উচ্ছিষ্ঠ সমূহের সম্পদে রূপান্তরিত করার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা সহ কোটি কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে। আর এর সার্বিক ব্যবস্থা সিটি কর্পোরেশনকে গ্রহণ করতে হবে।  আজ ৪ ডিসেম্বর ০৮ বৃহস্পতিবার সকাল ১১:১৫ টায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে ঢাকা শাহবাগস্থ চারুকলা ইন্সটিটিউটের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে আলোচকগণ এ অভিমত ব্যক্ত করেন। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- পবা এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, প্রকৌশলী ইনামুল হক, পীস এর মহাসচিব ইফমা হোসেন, সিটিজেন রাইটস মুভমেন্টের মহাসচিব তুষার রেহমান, নগরবাসী সংগঠনের সভপতি ও সাধারণ সম্পাদক হাজী আনসার আলী ও জনাব নাজীম উদ্দীন, পবা’র প্রোগ্রাম অফিসার তৌফিকুর রহমান সেন্টু, সাবিনা নাঈম প্রমুখ। 
 
সারা বিশ্বের ইসলাম ধর্মালম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আযহা সমাগত প্রায়। ঈদ-উল-আজহার অন্যতম অনুসঙ্গ পশু কোরবানী দেওয়া। আমাদের বাংলাদেশেও হাজার হাজার পশু কোরবানী করা হয় এ সময়। কিন্তু প্রতি বছরই সঠিক ব্যবস্থাপনা ও সচেতনতার অভাবে ঢাকা মহানগরীসহ সর্বত্র কোরবানী পশুর রক্ত ও উচ্ছিষ্টাংশে মারাত্বক পরিবেশ দূষণের সৃষ্টি করে। মক্কা নগরীসহ মধ্য প্রাচ্যের প্রায় সকল নগরীতে নির্ধারিত স্থান ছাড়া কোরবানীর পশু জবাই করা নিষিদ্ধ এবং কোরবানী শেষে পশুর  রক্ত ও উচ্ছিষ্টাংশ খুব দ্রুত সরিয়ে ফেলা হয়। আমরাও যদি যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমাদের কোরবানীর পশু নির্ধারিত স্থানে জবাই দেই তাহলে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ রোধ হবে অন্যদিকে জবাই পরবর্তী উচ্ছিষ্ঠাংশ সমূহকে সম্পদে রূপান্তরিত করাও সম্ভব হবে। 
 
কোরবানীর উচ্ছিষ্ঠাংশ সম্পদে রূপান্তরিত করার মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা সহ কোটি কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে। কোরবানী পশুর রক্তে খুব উৎকৃষ্ট মানের সসেজ তৈরী সম্ভব যা উন্নত অনেক দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয়। পশুর ফেলে দেয়া নাড়ি-ভুড়ি থেকে মানুষের খাদ্য পাশাপাশি উৎকৃষ্ট মানের মাছের খাদ্য বা পশুখাদ্য তৈরী করা সম্ভব। একইভাবে পশুর হাড়ও গুড়া করে পশু খাদ্য বা উৎকৃষ্ট মানের সার তৈরী করা যায়। গোবর ও অন্যান্য উচ্ছিষ্ট  যা খোলা যায়গায় বা ড্রেনে ফেলা হচ্ছে তা প্রবল দুর্গন্ধ ছড়ানোর মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ করছে এবং ড্রেন বন্ধ করে জলাবদ্ধতা তৈরী করছে। অনেক সময় অনভিজ্ঞ লোকের দ্বারা কোরবানী পশুর চামড়া অপসারণ করা হয়। ফলে মূল্যবান চামড়া নষ্ট হয়ে যায় এতে চামড়ার দামও কমে যায়। অন্যতম রপ্তানী পন্য চামড়ার ক্ষতি জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কিন্তু নির্ধারিত স্থানে কোরবানীর ব্যবস্থা করলে চামড়া ছিলানোর অভিজ্ঞ লোকের সমাবেশ করা অনেক সহজ হয়। সঠিকভাবে চামড়া ছাড়ানো হলে এর মূল্য অনেক বেড়ে যায়। নির্ধারিত জায়গায় কোরবানী দিলে এসব আবর্জনা সহজে সংগ্রহ করে জৈব সার হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে। 
 
আজকের মানববন্ধনের মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশনকে বিগত দিনের তুলনায় যেখানে সেখানে কোরবানীর দেওয়া ও পশুর যাবতীয় আবর্জনা সরানোর বিষয়ে আরও স্পষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করার ব্যপারে জোর দাবী জানানো হয়।