কোরবানী পশু জবাই ব্যবস্থাপনা ও আমাদের করণীয় বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠক
কোরবানী পশু জবাই ব্যবস্থাপনা ও আমাদের করণীয়
বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠক
 
আজ ১৭ ডিসেম্বর ২০০৭, সোমবার, সকাল ১১:৩০ মিঃ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশন এর যৌথ উদ্যোগে ‘কোরবানীর পশু জবাই ব্যবস্থাপনা ও আমাদের করণীয়” শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক বাংলাদেশ ফটোজার্নলিস্ট এসোসিয়েশস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
 
ইসলাম ধর্মের অনুসারী মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল আয্হা। এ ধর্মীয় উৎসবে মুসলমানেরা কোরবানীর জন্য পশু জবাই করে থাকে। পূর্বে মহানগরী ঢাকা শহরে জনসংখ্যা অল্প এবং লোকজনের সামর্থ্য কম থাকায় কোরবানীর পশু জবেহ হত কম। কিন্তু বর্তমানে জনসংখ্যা বহুগুন বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং মানুষের অর্থনৈতিক সামর্থ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় লোকজনের কোরবানী দেওয়ার পরিমানও বেড়েছে। প্রতি বছর কোরবানীর সময় ঢাকা শহরে যত্রতত্র পশু কোরবানী করার ফলে তার রক্ত ও উচ্ছিষ্টাংশ রাস্তা অথবা ড্রেনেই ফেলে রাখার কারণে পরিবেশ হয়ে ওঠে দূষিত ও দুর্গন্ধময় যা জনস্বাস্থ্যর জন্য মারাত্বক হুমকি স্বরুপ। যদিও বর্তমানে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি সচেষ্ট হয়েছে কিন্তু পরিস্থিতি সামাল দিতে সিটি কর্পোরেশনকে হিমসিম খেতে হচ্ছে এবং প্রচুর অর্থ ব্যয়ও হচ্ছে। আমরা জানি যে পূর্বে খোদ মক্কা শরীফেও যত্রতত্র কোরবানীর পশু জবেহ করা হতো কিন্তু এখন সৌদি আরব সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা আছে। ঈদ যেমন উৎসবের/আনন্দের তেমনি এই আনন্দ-উৎসব যাতে বিঘিœত হয় এমন কাজ করা উচিৎ নয়। আজকের গোলটেবিল বৈঠকে গৃহীত সুপারিশমালা:-
 
ক্স কোরবানী করা মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ন ধর্মীয় বিধান এবং কোরবানীর বর্জ্য পরিস্কার করা ও আরো আরো বেশি গুরুত্বপূর্ন;
ক্স ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগতভাবে কোরবানীর পশু ক্রয় ও অন্যান্য খরচের সাথে বর্জ্য পরিস্কারের জন্য একটি বাজেট রাখা প্রয়োজন;
ক্স কোরবানী করা যেমন ঈমানের দাবী এবং এর বর্জ্য পরিস্কার করাও তেমনি ঈমানের দাবী;
ক্স কোরবানীর পশুর বর্জ্য পরিস্কার করা কোরবানীরই অংশ;
ক্স পশুর রক্ত তাৎক্ষনিকভাবে পরিস্কার করা ও উচ্ছিষ্টাংশ ও অন্যান্য বর্জ্য ডাস্টবিনে ফেলে দেয়ার কাজ করার জন্য উপযুক্ত পারিশ্রমিক দিয়ে আগে থেকেই শ্রমিক/পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োগ করা;
ক্স নির্ধারিত স্থায়ী বা অস্থায়ী পশু জবাইখানায় পশু কোরবানী করা;
ক্স নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ের ফলে পশুর রক্ত, হাড়-হাড্ডি সংগ্রহ করে বিদেশে রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বা হাস-মুরগি বা মাছের খাদ্য তৈরিতে এবং নাড়ি-ভুড়ি, গো-ঘাষি সংগ্রহ করে সার হিসেবে ব্যবহার করা;
ক্স মসজিদের ঈমাম দ্বারা সচেতনতামূলক প্রচারনা বিষয়টি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনায় আনা;
 
গৃহীত সুপারিশমালা পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্ন সরকারী, বেসরকারী, সামাজিক সংগঠনসমূহে পাঠানো হবে এবং এটিকে একটি সামাজিক আন্দোলন হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহন করা হবে।  
 
গোলটেবিল বৈঠকে সঞ্চালকের ভূমিকা পালন করেন পবা’র আহ্বায়ক আবু নাসের খান, মূল বক্তব্য উপন্থাপন করেন  নয়াপল্টন জামে মসজিদের ঈমাম মাওলানা মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা, আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশ এর সভাপতি একেএম মহসিন, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও রয়টার্সে কর্মরত রফিকুর রহমান, বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসাসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মীর মোহাম্মদ মীরু, নগর সংগঠনের সভাপতি হাজী শেখ মোহাম্মদ আনসার আলী, নগর সংগঠনের মহাসচিব নাজিম উদ্দীন, ইয়াকুব আলী প্রমুখ।