শিশু-কিশোরদের শারিরীক এবং মানসিক বিকাশে পর্যাপ্ত পার্ক ও মাঠের দাবি
শিশু-কিশোরদের শারিরীক এবং মানসিক বিকাশে পর্যাপ্ত পার্ক ও মাঠের দাবি
 
শিশুদের আগামী প্রজন্ম বলে স্বীকার করা হলেও, তাদের শারিরীক ও মানসিক বিকাশের সুযোগ এই নগরে অপর্যাপ্ত। নগর পরিকল্পনায় যান্ত্রিক যানবহন অপেক্ষা মানবশিশু অনেকাংশে উপেক্ষিত। পরিকল্পনার এই দুর্বলতার কারণে দিন দিন নগরে পার্ক, মাঠ তথা শারিরীক ও মানসিক বিকাশের স্থান হ্রাস পাচ্ছে পার্ক, মাঠ তথা শারিরীক ও মানসিক বিকাশের স্থান।  
 
খেলার মাঠ, পার্ক, উন্মুক্তস্থানের ইজারা প্রথা বাতিল করা, রক্ষাবেক্ষণে স্থানীয় প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা,  খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ এর সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করা, শিশু-কিশোরসহ নগরবাসীর খেলাধুলা এবং বিনোদন সুবিধা প্রদানের স্বার্থে খেলার মাঠ, পার্ক এবং উন্মুক্তস্থ্ানগুলোর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের যৌথ আয়োজনে আজ সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের সম্মুখে এক মানববন্ধন কর্মসূচীর মাধ্যমে উক্ত দাবি জানানো হয়। 
 
বিভিন্ন পবিশেবাদী সংগঠন এই কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করে। কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, সিটিজেন রাইটস মুভমেন্টর মহাসচিব তুষার রহমান, বশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী কুদ্দুস বয়াতী, নিরাপদ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ইবনুল সাঈদ রানা, খিলগাঁও সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না. পিুরান ঢাকা উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি নাজিমউদ্দীন, এছাড়া উপস্থিত ছিলেন স্বভূমির সভাপতি এ্যডভোকেট মোজম্মেল হক,  মো: মোস্তাকিম মিলন, বস্তিবাসী সংগঠনের সভাপতি হাসিনুর রহমান, উবিনীগের সাহিনুর বেগমসহ আরো বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। 
 
পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, মানুষের পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশের জন্য খেলাধূলা এবং শরীরচর্চার গুরুত্ব অপরিসীম। ঢাকাসহ অন্যান্য শহরগুলোতে সুস্থ নির্মল বিনোদনের সুযোগ ক্রমশ সীমিত হয়ে পড়ছে। পর্যাপ্ত মাঠ, পার্কের অভাবে শিশু কিশোররা বাইরে খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যা তাদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে। 
 
ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সৈয়দ মাহবুবুবল আলম বলেন, বাইরে পর্যাপ্ত বিনোদনের সুযোগ কমে যাওয়ায মানুষ ঘরবন্দী হয়ে পড়ছে এবং ব্যয়ামের অভাবে মুটিয়ে যাওয়া, ডায়বেটিস, হৃদরোগসহ বিভিন্ন রকম জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এক্ষেত্রে শিশুরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এই সংকট মোকাবিলায় শৈশবকাল থেকেই উন্মুক্তস্থানে খেলাধুলার সুযোগ থাকা প্রয়োজন। শিশু-কিশোরদের খেলাধূলার সুবিধা প্রদান, নগরবাসীর বিনোদনের জন্য শহরগুলোতে পর্যাপ্ত পার্ক, খেলার মাঠ গড়ে তোলা এবং পুরোনোগুলোর সংস্কার অত্যাবশ্যকীয়। একই সাথে নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার কথা চিন্তা করে পায়ে হেঁটে চলাচল ও শরীরচর্চার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
 
সিটিজেন রাইট মুভমেন্ট এর মহাসচিব বলেন, শহরের অবকাঠামো নগরবাসীর শারীরিক ও মানসিক বিকাশকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। এক্ষেত্রে নগর পরিকল্পাপনায় নগরবাসীর জন্য বিনোদনের সুযোগ সুবিধা প্রদানের বিষয়টি বিশেষভাবে প্রাধান্য দেয়া প্রয়োজন। 
 
বক্তারা বলেন নগর পরিকল্পনায় যান্ত্রিক যানবাহন চলাচল, পার্কিংকে পরিকল্পনাবিদ ও সরকারী সংস্থাগুলো অগ্রাধিকার দিলেও মানুষকে সুস্থ্যভাবে বাঁচাকে অগ্রাধিকার দেয় না। গাড়ী না থাকলেও প্রতিটি বাড়ীতে পার্কিং থাকা বাধ্যতামূলক। অথচ প্রতিটি বাড়ী ও এলাকায় শিশু থাকা স্বত্বেও খেলা ধূলা ও বিনোদনের কোন স্থান নেই। এই নগরে গাড়ী অপেক্ষা মানব শিশু উপেক্ষিত। সবুজ চত্তর, পার্ক বলা হয় শহরের ফুসফুুস। শহরে পর্যাপ্ত পরিমাণে পার্ক, সবুজ চত্ত্বর গড়ে তোলার মাধ্যমে নগরবাসী যেমন সুস্থ থাকবে তেমনি শহরের বেশি গরম অনুভূত হবে না। 
 
কর্মসূচীতে  শিশুরা পর্যাপ্ত খেলাধূলার সুযোগ সৃষ্টির দাবীতে প্রতীকিভাবে খাঁচায় অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানায় ।