আবারো দখল ও ধ্বংসের পায়তারা মিরপুর (২ নং সেকশনের) সবুজ চত্ত্বর
আবারো দখল ও ধ্বংসের পায়তারা মিরপুর (২ নং সেকশনের) সবুজ চত্ত্বর
 
“সবুজ চত্ত্বর ধ্বংস করা চলবেনা” “সবুজ চত্ত্বর ধ্বংস করে মার্কেট নির্মাণ বন্ধ কর” “সবুজ চত্ত্বর ধ্বংস কারীদের শাস্তি চাই-দিতে হবে” ইত্যাদি এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শত শত ছেলে মেয়ে ও সর্বস্তরের জনসাধারণের সম্মিলিত কন্ঠের শ্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে মিরপুর ৭ নং ওয়ার্ডস্থ সবুজ চত্ত্বর প্রাঙ্গন। আজ ২৭ অক্টোবর/০৯ সকাল ১১:০০ টায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও সবুজ চত্ত্বর রক্ষা ও পার্ক বাস্তবায়ন কমিটি এর উদ্যোগে “আবারো দখলের পায়তারা মিরপুর সবুজ চত্ত্বর” প্রতিবাদে জনসমাবেশ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। 
 
পবা এর সাধারণ সম্পাদক কামাল পাশা চৌধুরী বলেন:- ২০০৭ সালে ১৬ এপ্রিল কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক মিরপুর ২ নং সেকশনে অবস্থিত সবুজ চত্ত্বরটি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে শত শত গাছ হত্যা করে বাণিজ্যিক মার্কেট নির্মাণের চেষ্টা করে। কতিপয় অসাধু সরকারী কর্মকর্তার যোগসাজসে এবং পুলিশ বাহিনীর সহায়তায় দুনীতিবাজ ভূমিদসুরা সবুজ চত্ত্বরের গাছ হত্যার জন্য বুলড্রোজার দিয়ে অসংখ্য গাছ হত্যা করে ফেলে। এলাকাবাসী প্রতিবাদ করতে গেলে পুলিশ বেধড়ক লাঠি চার্য শুরু করে এবং কয়েকজনকে গাছের সাথে বেধে রাখে। এ সংবাদ জানতে পেরে পবিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর টিম উক্ত স্থানে উপস্থিত হয় এবং এলাকাবাসীদের সাথে নিয়ে এ বর্বর তান্ডবতার তিব্র প্রতিবাদ জানানোর ফলে সাময়িকভাবে গাছ হত্যা বন্ধ হয়। সবুজ চত্ত্বর রক্ষায় ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলে তৎকালীন তত্বাবধায়ক সরকারের দুইজন উপদেষ্টা সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে সবুজ চত্ত্বরের স্থলে বাণিজ্যিক মার্কেট নির্মাণের সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে এবং পরবর্তি সময়ে উচ্চতর আদালত ‘মিরপুর সবুজ চত্ত্বরটি ধ্বংস করা যাবেনা’ মর্মে আদেশ জারি করে। এ আন্দোলনের সমর্থনে সে সময় মিডিয়ার ভুমিকা ছিল অত্যন্ত উজ্জলতর। কিন্তু দীর্ঘ সময় নিরব থাকার পর আবার পূনরায় স্বার্থান্বেষী মহল ভূমিদস্যুরা সবুজ চত্ত্বরটি বিনাশ করে মার্কেট নির্মাণের আবারো পায়তারা চালাচ্ছে। আবারো শত শত গাছ হত্যা করা হবে। নির্মাণ করা হবে অপ্রয়োজনীয় মার্কেট। আইনগতভাবে এবং আন্দোলনের মাধ্যমে এ পরিবেশ বিধ্বংসী অপতৎপরতা প্রতিহত করতে হবে।  
 
পবা এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন:- মহানগরীর পরিবেশ ও নাগরীক জীবনে সবুজ চত্ত্বর, গাছপালার গুরুত্ব অপরিসীম। শহরাঞ্চলে এলাকাভিত্তিক অনেকটুকু জায়গা জুড়ে পাছপালা থাকলে তা বাতাসের দূষিত গ্যাস শোষণ করে নির্মল বাতাস দেয়। বাতাসে ধুলিকনা কমায়, বাতাসের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। মেঘকে আকৃষ্ট করে বৃষ্টিপাতের মাত্রা বাড়ায়, বৃষ্টির পানি ধীরে ধীরে পড়ে বিধায় অনেকক্ষণ যাবত পানি শোষণ করার সুযোগ পেয়ে ভূগর্ভস্থ পানির পূন:ভরণ মাত্রা বাড়ায় এবং জলাবদ্ধতা কমায়। সবুজ চত্ত্বরের গাছের ছায়ায় বাচ্চাসহ অন্যান্যদের খেলাধুলা, হেটে বেড়ানোর বা বিশ্রামের সুযোগ সৃষ্টি করে। শিশু ও অন্যান্যদের শারীরিক বিকাশ ঘটায়, এলাকাবাসীর মানসিক প্রশান্তি এনে দেয় এবং বুদ্ধি বৃত্তি চর্চায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে। পার্ক এবং খোলা জায়গা থাকার ফলে এলাকার সামাজিক বন্ধন বৃদ্ধি পায়। এলাকার শিশুদের মধ্যে বাড়ে পরস্পরের প্রতি সহমর্মিতা যা আমাদের ভবিষ্যতে সুনাগরীক পেতে সহায়ক হবে।
 
ঢাকা শহরকে বসবাসের অযোগ্য করতে আর কত সবুজ চত্তর, খোলা জায়গা, পার্ক, নিচু এলাকা, জলাধার, খাল, নদী দখল এবং ধ্বংস করা প্রয়োজন? মাননীয় প্রধানমন্দ্রীর খেলার মাঠ ও জলাধার সংরক্ষণের নির্দেশনার কার্যকরভাবে    বাস্তবায়নে আর কতদিন অপেক্ষা! শুধুমাত্র বাণিজ্যিক মার্কেট আর বিল্ডিং স্থাপন করলেই উন্নয়ন এবং আমরা সভ্য জাতি  হিসেবে আত্বতৃপ্তিপে সন্তষ্ট থাকবো? যারা সবুজায়ন দখল-ধ্বংসের খেলায় মত্ত হবে তাদের কি আইনগত শাস্তি প্রদান করা হবে না ? তাই আমাদের পরম বন্ধু গাছ এবং স্বাভাবিক জীবন-যাপনের অতি প্রয়োজনিয় খোলা জায়গা মিরপুর সবুজ চত্ত্বরটি রক্ষা করতে মাননীয় প্রধানমন্দ্রীর হস্তক্ষেপ জরুরী। 
বার্তা প্রেরক