বিষাক্ত ভেজাল প্রতিরোধ মান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বতন্ত্র “খাদ্য ও ঔষধ বিষয়ক কমিশন গঠন কর”
বিষাক্ত ভেজাল প্রতিরোধ মান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বতন্ত্র 
“খাদ্য ও ঔষধ বিষয়ক কমিশন গঠন কর”
 
খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলতে সঠিকভাবে সংরক্ষণ, গুদামজাতকরণ ও বিতরণ সব কিছুই ভোক্তার জন্য নিশ্চিত করা। কিন্তু আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা নাই বল্লেই চলে ফলে আমরা প্রতিনিয়ত বিষাক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছি। বাজারে ফলমূল, শাক-সব্জি, মাছ-মাংসসহ প্রায় সমস্ত খাদ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থে ভরপুর। প্রক্রিয়াজাত খাদ্য বা প্যাকেট জাত বিভিন্ন খাদ্য ও ফাস্টফুড ক্ষতিকারক রং সহ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত। রোগ নিরাময়ের জন্য ঔষধ সেবন করতে গিয়ে সেখানেও বিষাক্ত ঔষধের কবলে পড়ে শিশু ও বয়স্করা অকালে মৃত্যু বরণ করছে। ফলে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন মারাত্বক রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই বিষাক্ত ভেজাল প্রতিরোধ মান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বতন্ত্র “খাদ্য ও ঔষধ বিষয়ক কমিশন গঠন কর” আজ ৪ আগস্ট ২০১০ বুধবার সকাল ১১:০০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স রুমে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে “বিষাক্ত খাদ্যের ব্যাপকতা ও ভয়াবহতা আমাদের করণীয়” শীর্ষক সেমিনারে আলোচকগন এ অভিমত ব্যক্ত করেন। 
 
 
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন,  খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগ, বিসিএসআইআর এর সাবেক পরিচালক, ড.কে এম ফরমুজুল হক, আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কলামিষ্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, পরিবেশ  বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, জাতীয় ভোক্তামঞ্চ এর মহাসচিব এস. এম সৈকত, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট এর চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পবা এর স্বাস্থ্য বিষয়ক টিম এর আহবায়ক অধ্যাপক ড. অরূপ রতন চৌধুরী।
 
ড.কে এম ফরমুজুল হক তাঁর মূল প্রবন্ধ বলেন,  আমাদের দেশে প্রায় বিভিন্ন সবজি খামারে কীটনাশক ও বালাইনাশক ব্যবহার করা হয়। এগুলির মধ্যে আছে ব্রিনকড, সিমবুন, সুনিসাইডইং, হেপ্টাক্লোর, টায়াডিন, ডিডিটি ইত্যাদি নামে পরিচিত। সব কীটনাশকেরই একটি কার্যকারিতার মেয়াদকাল থাকে অর্থাৎ প্রয়োগের পর কোনটি ৩ দিন কোনটি ৭ দিন বা ২১ দিন হতে পারে। অথচ আমাদের কৃষকরা এইসব নিয়মনীতি উপেক্ষা করে কীটনাশক প্রয়োগের ২-১ দিনের মধ্যে বাজারে বিক্রয় শুরু করে দেয়। 
বিভিন্ন ফলমূল একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের সাহায্যে (ক্যালসিয়াম কার্বাইড়, ইথিলিন, ইথারেল, টমটম) ইত্যাদি দিয়ে কৃত্তিমভাবে পাকায়। ইতিপূর্বে আমরা দেখেছি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাছ ও দুধে বিষাক্ত ফরমালিন দিয়ে সংরক্ষণ করা হতো। এক ড্রাম দুধের মধ্যে একফোটা ফরমালিন দিয়ে দুধ সংরক্ষণ করা যায়। অথচ এই এক ফোটা ফরমালিন একটি মারাত্মক ক্যান্সার ও কিডনি রোগ উৎপত্তির জন্য সূক্ষ ভূমিকা পালন করে।
ঢাকার আশপাশের অঞ্চল থেকে প্রচুর পরিমাণ শাকসবজি যেমন সাভার, ধামরাই, টঙ্গী বিভিন্ন বাজার থেকে। এ সমস্ত এলাকায় শাকসবজি উৎপন্ন হয় সেই এলাকাতেই প্রচুর পরিমাণ টেক্সটাইল ও ডাইং ইন্ডাস্ট্রি আছে। এই টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি থেকে বিভিন্ন ধরণের বর্জ্য নদীতে ফেলা হয়। এবং এই নদীর পানি যখনি শাকসবজিতে ব্যবহার করা হয় এর মধ্যে হেভিমেটালস যেমন লেড, আর্সেনিক কেডমিয়াম ও মারকারী এই সব সবজির মধ্যে মিশ্রণ ঘটে যা আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর এছাড়াও লাল শাকের মধ্যে লাল রং গ্রহণে অল্প বয়সের শিশুদের মস্তিষ্কের স্বাভাবিকক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে মাথা ধরা ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এছাড়া একটি গবেষণায় সমীক্ষায় দেখা গেছে বাংলাদেশে বিভিন্ন উপক’লে যে মাছ সুষ্ককরণ পদ্ধতি প্রক্রিয়াজাত করা হয তার মধ্যে সহনীয় মাত্রার চাইতে বেশি পরিমাণ ডিডিটি ও হেপ্টাক্লোরের  উপস্থিতি পাওয়া গেছে। অথচ এই কিটনাশকযুক্ত মাছ খেলে মানবদেহে হৃদপিন্ড, লিভার এর বিভিন্ন সমস্যা ছাড়াও ক্যান্সার ও চর্ম রোগ হবার সম্ভাবনা আছে। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির উৎপাদিত প্যাকেটজাত খাদ্য যেমন ফলের রস স্ন্যাকফুড, গ্রীনপী, জ্যাম-জেলী, আচার-চাটনী বিভিন্ন ধরণের রং ব্যবহার করা হয়।
 
দাবীসমূহ: 
 
১। তাই অবিলম্বে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বিষাক্ত ভেজাল প্রতিরোধ মান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বতন্ত্র “খাদ্য ও ঔষধ বিষয়ক কমিশন গঠন করতে হবে; ২। যতক্ষন পর্যন্ত খাদ্য ও ঔষধ বিষয়ক কমিশন গঠন করা না হচ্ছে ততক্ষন ভোক্তা অধিকার আইন সহ  এ সংক্রান্ত অন্যান্য আইনের কঠোর বাস্তবায়ন চাই; ৩। ভেজাল বিরোধী অভিযানকে ত্বরান্বিত করা ও খাদ্যেভেজালকারীকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে; ৪। ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ব্যাবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়ে খাদ্য সংরক্ষণে গবেষনার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে; ৫। খাদ্য প্রস্তুতকারী শিল্প কারখানায় ক্ষতিকর রং এর পরিবর্তে ঋড়ড়ফ এৎধফব ঈড়ষড়ৎ এর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে; ৬।  খাদ্য বিষক্রিয়ার বিরুদ্ধে সরকারীভাবে ব্যাপক গণসচেতনতা তৈরী করা।
বিষাক্ত ভেজাল প্রতিরোধ মান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বতন্ত্র 
“খাদ্য ও ঔষধ বিষয়ক কমিশন গঠন কর”
 
খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলতে সঠিকভাবে সংরক্ষণ, গুদামজাতকরণ ও বিতরণ সব কিছুই ভোক্তার জন্য নিশ্চিত করা। কিন্তু আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা নাই বল্লেই চলে ফলে আমরা প্রতিনিয়ত বিষাক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছি। বাজারে ফলমূল, শাক-সব্জি, মাছ-মাংসসহ প্রায় সমস্ত খাদ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থে ভরপুর। প্রক্রিয়াজাত খাদ্য বা প্যাকেট জাত বিভিন্ন খাদ্য ও ফাস্টফুড ক্ষতিকারক রং সহ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত। রোগ নিরাময়ের জন্য ঔষধ সেবন করতে গিয়ে সেখানেও বিষাক্ত ঔষধের কবলে পড়ে শিশু ও বয়স্করা অকালে মৃত্যু বরণ করছে। ফলে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন মারাত্বক রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই বিষাক্ত ভেজাল প্রতিরোধ মান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বতন্ত্র “খাদ্য ও ঔষধ বিষয়ক কমিশন গঠন কর” আজ ৪ আগস্ট ২০১০ বুধবার সকাল ১১:০০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স রুমে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে “বিষাক্ত খাদ্যের ব্যাপকতা ও ভয়াবহতা আমাদের করণীয়” শীর্ষক সেমিনারে আলোচকগন এ অভিমত ব্যক্ত করেন। 
 
 
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন,  খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগ, বিসিএসআইআর এর সাবেক পরিচালক, ড.কে এম ফরমুজুল হক, আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কলামিষ্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, পরিবেশ  বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, জাতীয় ভোক্তামঞ্চ এর মহাসচিব এস. এম সৈকত, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট এর চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পবা এর স্বাস্থ্য বিষয়ক টিম এর আহবায়ক অধ্যাপক ড. অরূপ রতন চৌধুরী।
 
ড.কে এম ফরমুজুল হক তাঁর মূল প্রবন্ধ বলেন,  আমাদের দেশে প্রায় বিভিন্ন সবজি খামারে কীটনাশক ও বালাইনাশক ব্যবহার করা হয়। এগুলির মধ্যে আছে ব্রিনকড, সিমবুন, সুনিসাইডইং, হেপ্টাক্লোর, টায়াডিন, ডিডিটি ইত্যাদি নামে পরিচিত। সব কীটনাশকেরই একটি কার্যকারিতার মেয়াদকাল থাকে অর্থাৎ প্রয়োগের পর কোনটি ৩ দিন কোনটি ৭ দিন বা ২১ দিন হতে পারে। অথচ আমাদের কৃষকরা এইসব নিয়মনীতি উপেক্ষা করে কীটনাশক প্রয়োগের ২-১ দিনের মধ্যে বাজারে বিক্রয় শুরু করে দেয়। 
বিভিন্ন ফলমূল একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের সাহায্যে (ক্যালসিয়াম কার্বাইড়, ইথিলিন, ইথারেল, টমটম) ইত্যাদি দিয়ে কৃত্তিমভাবে পাকায়। ইতিপূর্বে আমরা দেখেছি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাছ ও দুধে বিষাক্ত ফরমালিন দিয়ে সংরক্ষণ করা হতো। এক ড্রাম দুধের মধ্যে একফোটা ফরমালিন দিয়ে দুধ সংরক্ষণ করা যায়। অথচ এই এক ফোটা ফরমালিন একটি মারাত্মক ক্যান্সার ও কিডনি রোগ উৎপত্তির জন্য সূক্ষ ভূমিকা পালন করে।
ঢাকার আশপাশের অঞ্চল থেকে প্রচুর পরিমাণ শাকসবজি যেমন সাভার, ধামরাই, টঙ্গী বিভিন্ন বাজার থেকে। এ সমস্ত এলাকায় শাকসবজি উৎপন্ন হয় সেই এলাকাতেই প্রচুর পরিমাণ টেক্সটাইল ও ডাইং ইন্ডাস্ট্রি আছে। এই টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি থেকে বিভিন্ন ধরণের বর্জ্য নদীতে ফেলা হয়। এবং এই নদীর পানি যখনি শাকসবজিতে ব্যবহার করা হয় এর মধ্যে হেভিমেটালস যেমন লেড, আর্সেনিক কেডমিয়াম ও মারকারী এই সব সবজির মধ্যে মিশ্রণ ঘটে যা আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর এছাড়াও লাল শাকের মধ্যে লাল রং গ্রহণে অল্প বয়সের শিশুদের মস্তিষ্কের স্বাভাবিকক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে মাথা ধরা ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এছাড়া একটি গবেষণায় সমীক্ষায় দেখা গেছে বাংলাদেশে বিভিন্ন উপক’লে যে মাছ সুষ্ককরণ পদ্ধতি প্রক্রিয়াজাত করা হয তার মধ্যে সহনীয় মাত্রার চাইতে বেশি পরিমাণ ডিডিটি ও হেপ্টাক্লোরের  উপস্থিতি পাওয়া গেছে। অথচ এই কিটনাশকযুক্ত মাছ খেলে মানবদেহে হৃদপিন্ড, লিভার এর বিভিন্ন সমস্যা ছাড়াও ক্যান্সার ও চর্ম রোগ হবার সম্ভাবনা আছে। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির উৎপাদিত প্যাকেটজাত খাদ্য যেমন ফলের রস স্ন্যাকফুড, গ্রীনপী, জ্যাম-জেলী, আচার-চাটনী বিভিন্ন ধরণের রং ব্যবহার করা হয়।
 
দাবীসমূহ: 
 
১। তাই অবিলম্বে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বিষাক্ত ভেজাল প্রতিরোধ মান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বতন্ত্র “খাদ্য ও ঔষধ বিষয়ক কমিশন গঠন করতে হবে; ২। যতক্ষন পর্যন্ত খাদ্য ও ঔষধ বিষয়ক কমিশন গঠন করা না হচ্ছে ততক্ষন ভোক্তা অধিকার আইন সহ  এ সংক্রান্ত অন্যান্য আইনের কঠোর বাস্তবায়ন চাই; ৩। ভেজাল বিরোধী অভিযানকে ত্বরান্বিত করা ও খাদ্যেভেজালকারীকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে; ৪। ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ব্যাবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়ে খাদ্য সংরক্ষণে গবেষনার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে; ৫। খাদ্য প্রস্তুতকারী শিল্প কারখানায় ক্ষতিকর রং এর পরিবর্তে ঋড়ড়ফ এৎধফব ঈড়ষড়ৎ এর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে; ৬।  খাদ্য বিষক্রিয়ার বিরুদ্ধে সরকারীভাবে ব্যাপক গণসচেতনতা তৈরী করা।
বিষাক্ত ভেজাল প্রতিরোধ মান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বতন্ত্র 
“খাদ্য ও ঔষধ বিষয়ক কমিশন গঠন কর”
 
খাদ্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলতে সঠিকভাবে সংরক্ষণ, গুদামজাতকরণ ও বিতরণ সব কিছুই ভোক্তার জন্য নিশ্চিত করা। কিন্তু আমাদের খাদ্য নিরাপত্তার রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা নাই বল্লেই চলে ফলে আমরা প্রতিনিয়ত বিষাক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে বাধ্য হচ্ছি। বাজারে ফলমূল, শাক-সব্জি, মাছ-মাংসসহ প্রায় সমস্ত খাদ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থে ভরপুর। প্রক্রিয়াজাত খাদ্য বা প্যাকেট জাত বিভিন্ন খাদ্য ও ফাস্টফুড ক্ষতিকারক রং সহ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত। রোগ নিরাময়ের জন্য ঔষধ সেবন করতে গিয়ে সেখানেও বিষাক্ত ঔষধের কবলে পড়ে শিশু ও বয়স্করা অকালে মৃত্যু বরণ করছে। ফলে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন মারাত্বক রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই বিষাক্ত ভেজাল প্রতিরোধ মান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বতন্ত্র “খাদ্য ও ঔষধ বিষয়ক কমিশন গঠন কর” আজ ৪ আগস্ট ২০১০ বুধবার সকাল ১১:০০টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স রুমে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে “বিষাক্ত খাদ্যের ব্যাপকতা ও ভয়াবহতা আমাদের করণীয়” শীর্ষক সেমিনারে আলোচকগন এ অভিমত ব্যক্ত করেন। 
 
 
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন,  খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগ, বিসিএসআইআর এর সাবেক পরিচালক, ড.কে এম ফরমুজুল হক, আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কলামিষ্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, পরিবেশ  বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, জাতীয় ভোক্তামঞ্চ এর মহাসচিব এস. এম সৈকত, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট এর চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পবা এর স্বাস্থ্য বিষয়ক টিম এর আহবায়ক অধ্যাপক ড. অরূপ রতন চৌধুরী।
 
ড.কে এম ফরমুজুল হক তাঁর মূল প্রবন্ধ বলেন,  আমাদের দেশে প্রায় বিভিন্ন সবজি খামারে কীটনাশক ও বালাইনাশক ব্যবহার করা হয়। এগুলির মধ্যে আছে ব্রিনকড, সিমবুন, সুনিসাইডইং, হেপ্টাক্লোর, টায়াডিন, ডিডিটি ইত্যাদি নামে পরিচিত। সব কীটনাশকেরই একটি কার্যকারিতার মেয়াদকাল থাকে অর্থাৎ প্রয়োগের পর কোনটি ৩ দিন কোনটি ৭ দিন বা ২১ দিন হতে পারে। অথচ আমাদের কৃষকরা এইসব নিয়মনীতি উপেক্ষা করে কীটনাশক প্রয়োগের ২-১ দিনের মধ্যে বাজারে বিক্রয় শুরু করে দেয়। 
বিভিন্ন ফলমূল একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের সাহায্যে (ক্যালসিয়াম কার্বাইড়, ইথিলিন, ইথারেল, টমটম) ইত্যাদি দিয়ে কৃত্তিমভাবে পাকায়। ইতিপূর্বে আমরা দেখেছি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাছ ও দুধে বিষাক্ত ফরমালিন দিয়ে সংরক্ষণ করা হতো। এক ড্রাম দুধের মধ্যে একফোটা ফরমালিন দিয়ে দুধ সংরক্ষণ করা যায়। অথচ এই এক ফোটা ফরমালিন একটি মারাত্মক ক্যান্সার ও কিডনি রোগ উৎপত্তির জন্য সূক্ষ ভূমিকা পালন করে।
ঢাকার আশপাশের অঞ্চল থেকে প্রচুর পরিমাণ শাকসবজি যেমন সাভার, ধামরাই, টঙ্গী বিভিন্ন বাজার থেকে। এ সমস্ত এলাকায় শাকসবজি উৎপন্ন হয় সেই এলাকাতেই প্রচুর পরিমাণ টেক্সটাইল ও ডাইং ইন্ডাস্ট্রি আছে। এই টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি থেকে বিভিন্ন ধরণের বর্জ্য নদীতে ফেলা হয়। এবং এই নদীর পানি যখনি শাকসবজিতে ব্যবহার করা হয় এর মধ্যে হেভিমেটালস যেমন লেড, আর্সেনিক কেডমিয়াম ও মারকারী এই সব সবজির মধ্যে মিশ্রণ ঘটে যা আমাদের দেহের জন্য ক্ষতিকর এছাড়াও লাল শাকের মধ্যে লাল রং গ্রহণে অল্প বয়সের শিশুদের মস্তিষ্কের স্বাভাবিকক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে মাথা ধরা ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এছাড়া একটি গবেষণায় সমীক্ষায় দেখা গেছে বাংলাদেশে বিভিন্ন উপক’লে যে মাছ সুষ্ককরণ পদ্ধতি প্রক্রিয়াজাত করা হয তার মধ্যে সহনীয় মাত্রার চাইতে বেশি পরিমাণ ডিডিটি ও হেপ্টাক্লোরের  উপস্থিতি পাওয়া গেছে। অথচ এই কিটনাশকযুক্ত মাছ খেলে মানবদেহে হৃদপিন্ড, লিভার এর বিভিন্ন সমস্যা ছাড়াও ক্যান্সার ও চর্ম রোগ হবার সম্ভাবনা আছে। এছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির উৎপাদিত প্যাকেটজাত খাদ্য যেমন ফলের রস স্ন্যাকফুড, গ্রীনপী, জ্যাম-জেলী, আচার-চাটনী বিভিন্ন ধরণের রং ব্যবহার করা হয়।
 
দাবীসমূহ: 
 
১। তাই অবিলম্বে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বিষাক্ত ভেজাল প্রতিরোধ মান ও মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য স্বতন্ত্র “খাদ্য ও ঔষধ বিষয়ক কমিশন গঠন করতে হবে; ২। যতক্ষন পর্যন্ত খাদ্য ও ঔষধ বিষয়ক কমিশন গঠন করা না হচ্ছে ততক্ষন ভোক্তা অধিকার আইন সহ  এ সংক্রান্ত অন্যান্য আইনের কঠোর বাস্তবায়ন চাই; ৩। ভেজাল বিরোধী অভিযানকে ত্বরান্বিত করা ও খাদ্যেভেজালকারীকে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে; ৪। ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ব্যাবহার না করে প্রাকৃতিক উপায়ে খাদ্য সংরক্ষণে গবেষনার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে; ৫। খাদ্য প্রস্তুতকারী শিল্প কারখানায় ক্ষতিকর রং এর পরিবর্তে ঋড়ড়ফ এৎধফব ঈড়ষড়ৎ এর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে; ৬।  খাদ্য বিষক্রিয়ার বিরুদ্ধে সরকারীভাবে ব্যাপক গণসচেতনতা তৈরী করা।