বিষাক্ত ফল-নীরব ঘাতক ঘাতকদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত কর
বিষাক্ত ফল-নীরব ঘাতক
ঘাতকদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত কর
 
বাজারে আসতে শুরু করেছে মধুমাসের মৌসুমী ফল আম, লিচু, জাম, আনারস, কাঁঠাল ইত্যাদি সুস্বাদু ও তৃপ্তিদায়ক সব  ফল। উচ্চমূল্যে এই সমস্ত ফল কিনে খেলেও আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না এই ফলগুলো কি বিষাক্ত কেমিক্যালে পাকানো কিংবা সংরক্ষণ করা হচ্ছে কিনা ? কারণ মোবাইল কোর্ট চালু থাকলেও কিংবা হাইকোর্টের আদেশ থাকলেও হরহামেশাই ফলমূল বিষাক্ত কেমিক্যাল দ্রব্য দিয়ে পাকানো বা সংরক্ষণ করা হচ্ছে। শুধু ফলমূলই নয় প্রায় সব ধরণের খাদ্যই বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত কেমিকেলে ভরপুর। একারণে আমাদের স্বাস্থ্য আজ মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন। এমতাবস্থায় আজ ১৪ মে ২০১০, শুক্রবার সকাল ১০:৩০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও গ্রীণমাইন্ড সোসাইটি এর উদ্দ্্েযাগে “বিষাক্ত ফল-নীরব ঘাতক, বিষ মাখানো ফল নয়-বিশুদ্ধ খাদ্যের নিশ্চয়তা চাই” দাবীতে  মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, গ্রীণমাইন্ড সোসাইটির সভাপতি আমির হাসান, সহ সভাপতি মোরশেদ আলম, পবা’র সহ-সম্পাদক সৈয়দ সাগিরুজ্জামান সাকীক, পীস এর মহাসচিব ইফমা হোসেন, এনডিএফ এর সভাপতি ইবনুল সাঈদ রানা, সাংবাদিক সদরুল আনাম, শিল্পী মিজান শরীফ খোকা, নগরবাসী সংগঠনের সভাপতি নাজিম উদ্দিন প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে। 
 
বক্তারা বলেন, ব্যবসায়ীরা কৃত্তিম উপায়ে ফল পাকাতে কপার সালফেট, ক্যালসিয়াম কার্বাাইড, পটাশের লিকুইড সলিউশন, কপার সালফাইড, কার্বনের ধোঁয়া, কার্বাইডসহ বিভিন্ন ধরণের কীটনাশক ব্যবহার করছে। ফলগুলোকে টাটকা ও তাজা রাখতে ফরমালিন ব্যবহার করা হচ্ছে। কাঁচা ফলে জীবননাশক রাসায়নিক প্রয়োগের কারনে ফলের গায়ে খুব দ্রুত পাকা রং ধারন করে। দেখতে পাকা মনে হওয়ায় ব্যবসায়ীরা খুব দ্রুত এগুলো বাজারজাত করতে পারে। রং দেখে ক্রেতারা আকৃষ্ট হয়ে তা ক্রয় করে। অথচ এই রাসায়নিক বিষ মেশানো ফল খেয়ে মানুষ দীর্ঘমেয়াদী নানা রকম রোগে বিশেষ করে শ্বাসকষ্ট, এ্যাজমা, গ্যাস্ট্রিক, লিভার নষ্ট হয়ে যাওয়া, ক্যান্সারসহ নানা রকম ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। গর্ভবতী মহিলারা জন্ম দিতে পারে বিকলাঙ্গ শিশু। রাসায়নিক মেশানো ফল খেয়ে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। দীর্ঘদিন ধরে এসব ফল খাওয়ার ফলে বয়স্ক ও শিশুদের মধ্যে ক্যান্সার জাতীয় রোগের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে খুব বেশী। এছাড়াও চর্মরোগের আধিক্য বেড়ে যাওয়াসহ চামড়ার উজ্জ্বল্যতা নষ্ট এবং চামড়া খসখসে হয়ে যাওয়ার পেছনে বিষযুক্ত খাবার অনেকাংশে দায়ী। ভেজাল মিশ্রিত এইসব খাবার খেয়ে দিন দিন মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। এতে করে বেশি লাভের আশায় একশ্রেণীর অসৎ মানুষ নিজেদের পাশাপাশি ক্ষতি করছে গোটা জাতির । এ অবস্থা চলতে থাকলে ধীরে ধীরে আমরা পংঙ্গু জাতিতে পরিনত হব । বিষাক্ত খাদ্য নিরব ঘাতক হিসাবে কাজ করছে। 
 
বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য দিয়ে ফল পাকানোর বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করতে সরকারের সংশি¬ষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে ফলের আড়তগুলো প্রতিদিন পরীক্ষা ও দোষীদের বিরোদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া আদালত চারটি আদেশে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে। আমরা চাই হাইকোর্টের এই আদেশের সঠিক বাস্তবায়ন করা হোক। 
 
বক্তারা দাবী তোলেন-
খাদ্যে বিষ মেশানোর সাথে জড়িতদের সর্বনিু সাজা যাবত জীবন কারাদন্ড ও সমস্ত স্থাবর ও অস্তাবর সম্মত্তি বাজেয়াপ্ত করা। ফল সহ সকল খাদ্য মজুদকারী গুদাম/কারখানা/মোকাম নিয়মিতভাবে ভেজাল বিরোধী টিম পরিদর্শন বাস্তবায়ন। খাদ্যে বিষ মিশ্রন/ভেজালকারীদের ধরার জন্য একটি সেল গঠন করে ফোন/ফ্যাক্সসহ সাধারণ মানুষের কাছে থেকে সংবাদ গ্রহণের জন্য কন্ট্রোলরুম চালু করা।