বিষাক্ত খাদ্য নীরব গণহত্যাগণহত্যাকারীদের নাম মাত্র জরিমানা নয় চাই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও পর্যাপ্ত অর্থদণ্ড
বিষাক্ত খাদ্য নীরব গণহত্যা
 
গণহত্যাকারীদের নাম মাত্র জরিমানা নয় চাই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও পর্যাপ্ত অর্থদণ্ড
 
অবিলম্বে একটি কমিশন গঠন করে কোন কোন খাদ্যে বিষাক্ত পদার্থ বিদ্যমান তা চিহ্নিত করে দায়ী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান ও পর্যাপ্ত অর্থদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে, খাদ্যে গুণগত মান নিয়ন্ত্রণের জন্য পৃথক একটি স্থায়ী কমিশন/প্রতিষ্ঠান গঠন করতে হবে এবং কমিশনের অনুমতি ব্যতিত খাদ্যের বিপনন এবং প্রচার নিষিদ্ধ করতে হবে। ভেজাল খাদ্য নিয়ন্ত্রণে মাঝে মাঝে সরকার ভেজাল বিরোধী অভিযান কার্যক্রম পরিচালনায় শাস্তি স্বরুপ সামান্য অর্থদণ্ড জরিমানা করে। খাদ্যে ভেজাল ও গণহত্যাকারীদের সামান্য অর্থদন্ড শাস্তি যথেষ্ট হতে পারেনা এবং সামান্য অর্ধদণ্ড পরিশোধ করতে গণহত্যাকারীদের কোন সমস্যাই না বরং এ অর্থ প্রদান করে তারা বিষাক্ত খাদ্য প্রস্তুত ও সরবরাহের আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন কিনে নিচ্ছে। খাদ্যে ভেজাল প্রয়োগকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় না এনে নীরব গণহত্যাকে আরও তরান্বিত করতে চাইÑনা এ ব্যাধিকে নির্মূল করতে চাই, এ প্রশ্নের উত্তর আজ অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। আজ ১৬ সেপ্টম্বর/০৯ বুধবার সকাল ১১:০০ টায় শাহবাগস্থ চারুকরা ইনস্টিটিউটের সামনে আমতলায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে “গণহত্যাকারীদের নাম মাত্র জরিমানা নয়Ñচাই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও পর্যাপ্ত অর্থদন্ড” শীর্ষক মানববন্ধনে আলোচকগণ এ অভিমত ব্যক্ত করেন। 
 
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেনÑপবা এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, লোকসঙ্গীত শিল্পী কুদ্দুস বয়াতী, সিটিজেন রাইচস মুভমেন্টের মহাসচিব তুষার রেহমান, পীস এর মহাসচিব ইফমা হোসেন, এ্যাডভোকেট শিলা, নগরবাসী সংগঠনের সভাপতি হাজী আনসার আলী, সেল্টার ফর দ্যা পোওর এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রায়হান আল বিরুনী এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পবা’র প্রোগ্রাম অফিসার তৌফিকুর রহমান সেন্টু প্রমুখ।   
 
ভেজাল খাদ্য গ্রহণের কারণে মানুষের শরীরে প্রতিনিয়ত বিষ জমা হচ্ছে এবং বিষক্রিয়ায় বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দূর্বল হচ্ছে ফলে মানুষের ক্যান্সার সহ নানা ধরণের দুরারোগ্য জটিল রোগের প্রাদুর্ভাব আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে রোগী এবং রোগীর আত্বীয় স্বজনের ভুগান্তি বাড়ছে এবং অনেক কর্মশ্রমঘন্টা নষ্ট হচ্ছে। রোগীর চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে যেয়ে রোগী সহ অনেক আত্বীয়-স্বজন সর্বশান্ত হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া রাষ্ট্রকে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। এভাবেই ভেজাল ও বিষাক্ত খাদ্য খেয়ে লক্ষ লক্ষ লোক মারা যাবে, জনগোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ভবিষ্যতে কর্মক্ষমতাহীন ও পরনির্ভরশীল হয়ে জীবন-যাপন করবে যা গণহত্যায় রুপান্তরিত হবে এবং বর্তমানে নীরব গণহত্যা চলছে।
 
ভেজাল/বিষাক্ত, মেয়াদউত্তীর্ন, নোংরা অপরিচ্ছন্ন স্থানে তৈরি ক্ষতিকর খাবারের ব্যবসা দীর্ঘদিন যাবত এবং বর্তমানেও রমরমা। খাদ্যে বিষাক্ত ভেজাল প্রয়োগের কারণে শিশুসহ সকল মানুষের জীবন আজ ভয়াবহভাবে সংকটাপন্ন। বাজারে বিভিন্ন ধরণের বাহারী রঙ্গের প্যাকেটজাত খাদ্য সামগ্রী বাইরে থেকে অত্যন্ত্য আকর্ষনীয় করে বিক্রীর উদ্দেশ্যে বাজারজাত করছে। কিন্তু ভিতরে নানা ধরণের রাসায়নিক দ্রব্য ও কেমিক্যাল মেশানোর কারণে সে খাদ্য হয়ে যাচ্ছে বিষ। আর উপরের চাকচিক্য দেখে এবং লোভনীয় বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে শিশুসহ বড়রাও এ মরণ ফাদে আটকিয়ে নানান দুরারোগ্যে রোগের রোগীতে পরিণত হচ্ছে। যা এখন ধিরে ধিরে জাতীয় ব্যাধীতে রুপান্তুরিত হবে। ভ্রাম্যমান আদালত দোষীদের স্বল্প অর্থদণ্ড করাতে গণহত্যামূলক এ অপরাধের শাস্তি হাস্যকর ও লোকচক্ষে ধূলো দেবার সামিলে পরিণত হয়েছে। প্রহসনমূলক শাস্তির কারণে ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না করার ফলে তাদের তান্ডবতা বেড়েই চলছে। 
 
এছাড়াও বাজারে প্রায় সমস্ত ফলমূল, শাক-সবজি, মাছ, মাংস প্রভৃতি খাদ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যে/হরমন বা জীবানুতে ভরপুর। প্রক্রিয়াজাত খাদ্য বা প্যাকেটজাত বিভিন্ন খাদ্যে ও ফাস্টফুডে রং সহ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মিশ্রিত এবং বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জনসাধারণকে বিষ খেতে প্রলুদ্ধ করা হচ্ছে। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঢাকার শতকরা ৯২টি ফাস্টফুডের দোকানে কমপক্ষে ২ থেকে ৫ দিনের বাসী খাবার তাৎক্ষনিকভাবে গরম করে পরিবেশন করা হয় এবং এই রমজান মাসে এ পরিসংখ্যান আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।