‘‘রেল সবচেয়ে নিরাপদ-চাই রেলকেন্দ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা, আর নয় কান্না-চাই নিরাপদ ও সুস্থ যাতায়াত ব্যবস্থা’’
‘‘রেল সবচেয়ে নিরাপদ-চাই রেলকেন্দ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা,
আর নয় কান্না-চাই নিরাপদ ও সুস্থ যাতায়াত ব্যবস্থা’’
 
রেল ও নৌপথকে উপেক্ষা করে সড়ক কেন্দ্রীক যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে দ্রুত বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা, বাড়ছে যানজট। রাস্তার পরিমান বৃদ্ধি করা সম্ভব নয় সীমিত জায়গার কারনে। ফলে কম জায়গায় অধিক গাড়ী প্রতিযোগিতা ভিত্তিক চলাচলে বেড়ে যাচ্ছে সড়ক দূর্ঘটনা। পাশিাপাশি অপরিপক্ক গাড়ীচালক, মানুষ হত্যা করেও শাস্তির শৈথিল্য, অবকাঠামোগত ত্র“টি, গাড়ী চালনায় সুষ্ঠু নীতিমালা না থাকায় প্রতিবছর বেড়েই চলছে সড়ক দূর্ঘটনা। কেড়ে নিচ্ছে অসংখ্য প্রান, বাড়ছে কান্না, বাড়ছে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের দূর্বিসহ বেদনা। তারপরেও পরিবর্তন হচ্ছেনা বর্তমান সড়ক কেন্দ্রীক যোগাযোগ ব্যবস্থার। যোগাযোগের ক্ষেত্রে সড়ক পথকে অধিক মাত্রায় প্রাধান্য দেওয়ায় রেলকেন্দ্রীক যোগাযোগ ব্যবস্থা যা তুলনামূলক অধিক নিরাপদ, পরিবেশ বান্ধব, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী ইত্যাদি সুবিধা থাকা সত্বেও পরিকল্পিকতভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে রেলকেন্দ্রিক যাতায়াত ব্যবস্থাকে। বিগত দিনে রেল ও নৌপথ যাতায়াত ব্যবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে আসলেও কতিপয় ব্যবসায়ী স্বার্থান্বেষী মহলের চক্রান্তে আজ রেল ও নৌপথ ব্যবস্থা ধ্বংসের দারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার যাতায়াত নিশ্চিত করতে অনতিবিলম্বে রেলকেন্দ্রীক যোগাযোগ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে পাশাপাশি নৌপথ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং সড়ক পথকে রেল ও নৌপথের সাথে সমন্বয় করে পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতে হবে। আজ ৩ আগস্ট ২০১০ মঙ্গলবার সকাল ১০:৩০ টায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘‘রেল সবচেয়ে নিরাপদ-চাই রেলকেন্দ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা, আর নয় কান্না-চাই নিরাপদ ও সুস্থ যাতায়াত ব্যবস্থা’’ শীর্ষক এক মানববন্ধনে এ দাবী জানানো হয়। 
 
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, লোকসঙ্গীত শিল্পী কুদ্দুস বয়াতী, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা, পীস এর মহাসচিব ইফমা হোসেন, মানবিক এর অর্থ সম্পাদক আফরোজা খানম হাসি, সাবিনা নাইম, গাজী লুৎফুল কবীর সুমন, নাজিম উদ্দীন, হাজী আনসার আলী, এম এ করিম এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন তৌফিকুর রহমান সেন্টু।   
 
দেশে গত ১৫ বছরে সড়ক দূর্ঘটনায় প্রান হাড়িয়েছে প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ। গত ১৫ বছরের দেশের সড়ক আধুনিকীকরণে ব্যয় করা হয়েছে হাজার কোটি টাকা। অপরদিকে যোগাযোগের আরাম, নিরাপদ, অর্থসাশ্রয়ী বাহন রেল উন্নয়নের নামে নানা ধরনের ফন্দি এটে নানা অজহাতে অপপ্রচার চালিয়ে এর পথ বন্ধ করা ছাড়া আর কিছুই করা হয়নি। গত ১৫ বছরে নতুন করে কোন জনবল নিয়োগ করা হয়নি বরং ছাটাই করে অনেকগুলো ষ্টেশন বন্ধ করা হয়েছে। অনেকগুলো ট্রেনকে চলাচলের অনুপযোগী ঘোষনা করা হয়েছে। অনেক দৃরপাল¬ার ট্রেন ট্রিপ কমিয়ে দেয়া হয়েছে বাস মালিকদের কারসাজিতে। 
 
দেশের বেশী সংখ্যক মানুষের জন্য প্রয়োজন বিচেনায় বিভিন্ন রেল স্টেশন ও নৌঘাট এর সাথেই থাকতে হবে সড়ক পথের সুব্যবস্থা যাতে রেল ও নৌযান হতে নেমেই সহজে গন্তব্যে যাতায়াত করা সম্ভব। আমাদের যাতায়াত ব্যবস্থার এই করুন ভগ্ন দশা থেকে উত্তরনের জন্য প্রয়োজন সড়ক কেন্দ্রীক যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিবর্তন করা, তারসাথে প্রশিক্ষিত গাড়ীচালক আবশ্যক, নিয়ম ভঙ্গকারীর জন্য দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির বিধান, আইন প্রয়োগকারীর দায়িত্বপুর্ন আদর্শ। 
 
চার বা আট লেনের রাস্তা কোন সমস্যা সমাধান করবে না। বরং সড়ক নির্ভর পরিবহন ব্যবস্থা দূঘর্টনা, পরিবহন খরচ, পরিধবেশ দূষণ, দুনীতি, অপরাধসহ নানা সমস্যা বৃদ্ধি করবে। আর এ সমস্যাগুলো হ্রাসের অন্যতম উপায় সমন্বিত রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। সভায় বক্তারা রেলের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন, রেলের মাষ্টার প¬ান জনগনের জন্য উম্মুক্তকরণ, কমলাপুর রেলস্টেশন স্থানান্তর সংক্রান্ত চিন্তা পরিহার, রেলের বিরাষ্ট্রীয়করণের পরিকল্পনা বন্ধের সুপারিশ করেন।