রেলে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনে সুবিধা বৃদ্ধি জরুরী
রেলে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনে সুবিধা বৃদ্ধি জরুরী
 
রেলে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনের সুবিধা বৃদ্ধি করা সম্ভব হলে যানজট, দূঘর্টনা, পরিবেশ দূষণ, যাতায়াত ব্যয় এবং দ্রব্যমূল্য বহুলাংশে হ্রাস করা সম্ভব। আজ সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন, মেড ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট আয়োজিত সভায় বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।
 
বক্তারা বলেন, যানবাহনের যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানুষের প্রত্যাশা হলো স্বল্প খরচে, নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দে গন্তব্যে যাতায়াত করতে চায় এবং মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে স্বল্প মূল্যে, নির্দিষ্ট সময়ে, সহজে মালামাল পরিবহনকেই অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। রেলের উন্নয়নের মাধ্যমে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন সুবিধা বৃদ্ধির পাশাপাশি যানজট, দূঘর্টনা এবং দ্রব্যমূল্য হ্রাস করা সম্ভব হবে। রেল মান উন্নয়নের কথা বললেই অনেকেই অবকাঠামো এবং বড় বড় প্রকল্পের কথা নিয়ে আসেন। কিন্তু শুধুমাত্র অবকাঠামোর মাধ্যমে রেলের উন্নয়ন সম্ভব নয়, পাশাপাশি রেলের কর্মীদের মাঝে সেবার মানসিকতা বৃদ্ধি করা জরুরি। রেলে কর্মীদের নিকট হতে কাঙ্গিত সেবা না পাওয়ার কারণে বর্তমানে অনেক সুবিধা থাকা স্বত্বেও, অনেকেই রেল বিমুখ হয়ে থাকে। 
 
বক্তারা বলেন যানজট, দূর্ঘটনা, জ্বালানি সংকট, পরিবেশ দূষণ, মালামাল পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, পাবলিক পরিবহনের অনিয়ন্ত্রিত ভাড়া ইত্যাদি বিষয়গুলো বরাবরের মতোই সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ইতিপূর্বে এ সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো হাজার হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন পরিকল্পনার ও প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়ন করলেও সমস্যা সমাধান হয়নি বরং অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সমস্যাগুলোর মাঝে পিষ্ট হচ্ছে দেশের জনগণ। বিগত কয়েক দশকে যোগাযোগ খাতে হাজার হাজার কোটি টাকার খরচের পরও এ সমস্যাগুলো অব্যাহভাবে বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে আমাদের নিজেদের নতুন করে ভাবার সময় এসেছে আমাদের পরিকল্পনার ক্রুটিগুলো কোথায়। যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে পরিকল্পনা ও কাজের ফলাফল যদি বর্তমান অবস্থা হয়, তবে এ কথা বলার অবকাশ রাখে না যে আমাদের বিগত দিনের পরিকল্পনার বা লক্ষ্য সঠিক ছিল না। এ অবস্থা হতে উত্তোরণের জন্য আমাদের বিদ্যমান চিন্তার পরিবর্তন করা প্রয়োজন।
 
সভায় আলোচকগণ বলেন জাতীয় জীবনে রেল অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালণ করে আসছে। কিন্তু বিগত দিনে দাতা তথা ঋণ প্রদানকারী গোষ্ঠীর কারণে রেল অপেক্ষা সড়ক পথে অধিক বিনিয়োগ করা হয়েছে। রেলের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার করা হচ্ছে। ঋণপ্রদানকারী গোষ্ঠীর পরামর্শ অনুসারে সড়ক পথে যে অর্থ বরাদ্ধ করা হয় তা লোকসান হিসেবে বিবেচনা করা না হলেও, রেল ও নৌ পথে প্রদত্ত বরাদ্ধ লোকসান হিসেবে দেখানো হয়। দেশের জনগণের অর্থ, জনগণের প্রতিষ্ঠানে জনস্বার্থে বরাদ্ধের ক্ষেত্রে লাভ ও লোকসানের হিসেবে কেন কষা হয় তা বিস্ময়ের বিষয়। 
 
গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন আবু নাসের খান চেয়ারম্যান, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা, মোঃ নাজমুল করিম সবুজ। এ ছাড়াও আলোচনা করেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউআরপি ডিপার্টমেন্টর বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সারোয়ার জাহান, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফন্টের  সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, মেড এর নির্বাহী পরিচালক, রফিকুল ইসলাম সবুজ, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কর্মসুচী ব্যবস্থাপক, সৈয়দ মাহবুবুল আলম, ওয়াসার সাবেক প্রধান প্রকৌ: কাজী মো: শীশ, নারায়নগঞ্জ পৌরসভার নগর পরিকল্পনাবিদ, মোঃ মঈনুল হোসেন, বিলস এর সমন্বকারী মোঃ কবির হোসেন, ডেভেলপমেন্ট সেন্টার ইন্টারন্যাশনাল এর নির্বাহী পরিচালক ফকরুল ফেরদৌস।