পরিবেশবন্ধব এবং নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থায় রেলের গুরুত্ব শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
পরিবেশবন্ধব এবং নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থায়
রেলের গুরুত্ব শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
 
যে কোন দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা তথা দীর্ঘস্থায়ী এবং নিরাপদ যাতায়াতের ক্ষেত্রে রেলের গুরুত্ব অপরিসীম। পরিবেশবান্ধব, জ্বালানী সাশ্রয়ী ও নিরাপদ যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে রেল একটি জনপ্রিয় পরিবহন। আমাদের সীমিত সম্পদ, জনসংখ্যার আধিক্য, নিম্ন আয় ও কৃষি নির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থায় রেলের গুরুত্ব ব্যাপক। যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করতে, বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থার, পণ্য পরিবহনে, অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞের ব্যাপক প্রসার এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নে রেলকে জনপ্রিয় করে তোলা অত্যন্ত জরুরি। আজ সকাল ১০ টায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তরা এ অভিমত ব্যক্ত করেন। 
 
বক্তারা বলেন, রেল সব সময়ই সড়ক অপেক্ষা বিমাতা সূলভ আচরণ পেয়ে থাকে। সড়ক উন্নয়নে যে ধরনের অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে তা অপেক্ষা অনেক কম অর্থ রেল উন্নয়নে বিনিয়োগ করা হয়েছে। অথচ সড়ক হতে সরকার সরাসরি রাজস্ব না পেলেও রেল হতে সরাসরি অনেক রাজস্ব পাচ্ছে। জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোর উন্নয়নের অংশ হিসেবে রেল উন্নয়ন জরুরি। বিগত দিনে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও নীতিনির্ধারকদের অদূরদর্শতার কারণে রেল আজ সংকটে। 
 
বক্তারা বলেন রেল রাষ্ট্রের সেবা খাত। রেল প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রাষ্ট্রের জনগণের সে সেবা দিয়ে যাচ্ছে তা হিসেব করা হলে রেল অনেক প্রতিষ্ঠান হতে লাভজনক হবে। বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ রেলে অনেক দক্ষ এবং অভিজ্ঞ কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছে। তাদের সঠিকভাবে কাজে লাগানো হলে রেল উন্নয়ন সম্ভব। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য রেল উন্নয়ন বা পরিকল্পনার ক্ষেত্রে রেলের লোকদের কোন মতামত গ্রহণ করা হয় না। বিগত দিনের অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায় রেল উন্নয়ন বা জনগণের সুবিধা বিবেচনা করে নয়। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় রেখে রেলকে আরো কিভাবে কার্যকরী সেবাখাতে পরিণত করা যায়, এ বিষয়ে কাজ করা জরুরি বলে সকলে মতামত ব্যক্ত করেন। 
 
বক্তারা বলেন জাতীয় দূর্যোগ বা রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিভিন্ন কার্যক্রমে রেল সেবা দিয়ে আসছে। জাতীয় স্বার্থেই রেলকে শক্তিশালী করতে হবে। বক্তারা বলেন রেল একটি স্থায়িত্বশীল অবকাঠামো, রেলে অনেক যাত্রী একসাথে পরিবহন করা যায় ফলে জ্বালানি, খরচ এবং ব্যবস্থাপনা খরচ সড়ক অপেক্ষা রেলে অনেক কম। কিন্তু কিছু স্বার্থ সংশ্লিস্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন ভ্রান্ত ও প্রবঞ্চনামূলক তথ্য প্রদান করে রেল উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করছে। সকল শ্রেণীর ও পেশার মানুষ সাথে যেহেতু রেল সম্পৃক্ত তাই রেল উন্নয়নে এ সকল ব্যক্তিদের মতামত নিয়ে রেল উন্নয়ন পরিকল্পনা করা জরুরি। 
 
রেল উন্নয়নে বক্তারা  রেলওয়ের দুরত্ব কমানো, এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করা, দক্ষতার সাথে ট্রেনের সময় ব্যবস্থাপনা করা, বগিসমূহ পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত করা, রেলওয়ের সুবিধাসমূহ মানুষকে জানানো, টিকিট চেকের ক্ষেত্রে কঠোরতা অবলম্বন, মালামাল পরিবহনের সুবিধা বৃদ্ধি, রেল উন্নয়নে রেলের ব্যক্তিদের মতামত গ্রহণ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের কাজের লাগানো, পরামর্শক ও বিশেষ্ণজদের জবাবদিহীতা বৃদ্ধি করার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। 
 
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জনাব আবু নাসের খান, আহবায়ক, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন, ইবনুল সাইদ রানা, উশিকা, মারুফ রহমান, মানুষের জন্য রাস্তা, জনাব মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ রেল শ্রমিক ইউনিয়ন, আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সেন্টার,  ওয়াচডগ, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, ঢাকা আহছানিয়া মিশন সহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।