যানজট নিরসনে প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ ও গণপরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হোক
যানজট নিরসনে প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ ও গণপরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হোক
 
রাজধানীর সকল শ্রেনীর মানুষই প্রতিনিয়ত দুঃসহ যানজটের শিকার। আর যানজটের প্রধান কারণ গণপরিবহন ব্যবস্থার নৈরাজ্য ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে প্রাইভেট কার বৃদ্ধি পাওয়া। ঢাকা মহানগরীতে কম সংখ্যক রুটের তুলনায় বেড়ে গেছে যানবাহনের সংখ্যা। বিশেষ করে প্রাইভেট কার। লোকাল বাস সার্ভিস ও পাবলিক পরিবহনে ঢাকা শহরের অধিকাংশ মানুষ চলাচল করে। কিন্তু পাবলিক পরিবহন এখন একটি যন্ত্রণা ও শোষণের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। পবালিক পরিবহন ব্যবস্থায় নানা অনিয়মের কারণে যাত্রী সাধারণ তিক্তÑবিরক্ত। পাবলিক পরিবহনগুলিতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং স্বল্প দুরত্বে যেতেও একটি নির্ধারিত ভাড়া দিতে হয়। সিএনজি, ট্যাক্্িরক্যাবগুলো যাত্রীদের প্রয়োজনিয় নির্দিষ্ট গন্তব্যে যেতে চায় না এবং যেতে চাইলেও মিটারে না যেয়ে অধিক পরিমাণে টাকা আদায় করছে। যানজটের দোহাই দিয়ে স্বল্প দুরত্ত্বে যাতায়াতের প্রধান বাহন রিক্্রা অধিকাংশ রাস্তায় চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, তাতে জনদূর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া সন্ত্রাসীদের চাঁদাবজি বৃদ্ধি পাওয়ায় গণপরিবহনে নৈরাজ্যকর অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে অনেকেই প্রাইভেট কার ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে এবং উৎসাহিত হচ্ছে। এতে করে ঢাকা শহরের রাস্তাগুলিতে অতিমাত্রায় যানজট সমস্যা ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলছে।  
 
আজ ৫ আগস্ট ০৯ সকাল ১১:০০ টায় এমতাবস্থায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), সিটিজেন রাইটস মুভমেন্ট ও নিরাপদ ফাউন্ডেশন যৌথ উদ্যোদে রাসেল স্কয়ার, মিরপুর রোড (ধানমন্ডি লেকপাড়) যানজট নিরসনে প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ ও গণপরিবহণের উন্নয়নের দাবীতে এক মানববন্ধনের অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়। এ মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেনÑ পবা এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, বরেন্য লোক সঙ্গীত শিল্পী কুদ্দুস বয়াতী, সিটিজেন রাইটস মুভমেন্টের মহাসচিব তুষার রেহমান, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা মারুফ রহমান, সিনিয়র সাংবাদিক সদরুল আমীন, পীস এর মহাসচিব ইফমা হোসেন প্রমুখ। 
 
নগরীর যাতায়াত ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান নিয়ামক সুষ্ঠু ও পরিকল্পিত গণপরিবহন ব্যবস্থা। যানজট মুক্ত মহানগরীর জন্য গণপরিবহণ ব্যবস্থার নৈরাজ্য দুর করে পর্যাপ্ত পরিমাণে, আরামে, সুলভে সব জায়গায় যাওয়া যায় এ ধরণের বাসÑট্রেনÑনৌ যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ জরুরী। তাছাড়া হাঁটা, সাইকেল ও নিয়ন্ত্রিত রিকশা চলাচলের সুষ্ঠু ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। ঢাকার মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহরে অল্প জায়গায় বেশি মানুষ পরিবহণ করা যায় এমন বাহনের সুযোগ বাড়াতে হবে। একটি বাসে ৬০ থেকে ৮০ জন যাত্রী বহন করা সম্ভব। একই পরিমাণ যাত্রী পরিবহণের জন্য ৩০ থেকে ৪০টি প্রাইভেট গাড়ি ব্যবহার হয়ে থাকে। আর দুইটি প্রাইভেট গাড়ি যেহেতু একটি বাসের সমান জায়গা নেয়, সেহেতু প্রাইভেট গাড়ি নির্ভর পরিবহণ ব্যবস্থা সড়কের জায়গা সংকোচনের মাধ্যমে যানজট সৃষ্টি করে।
 
প্রাইভেট কারের পরিবর্তে মানুষকে বাসে চড়তে উৎসাহী করতে হলে বাস সার্ভিসের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ করা প্রয়োজন। অন্যান্য পরিবহণের সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাকার সর্বত্র বাসে চলাচলের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এছাড়া প্রয়োজন পর্যাপ্ত বাস, যাত্রী ছাউনী, বাসের জন্য পৃথক লেন। পাশাপাশি প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ এবং   প্রয়োজন  পাবলিক পরিবহণের মানোন্নয়ন ও যাত্রী সাধারণের সর্বোচ্চ সুযোগ সুবিধা।
 
জনসাধারণের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, ঢাকা শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণে প্রাইভেট কারের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এবং বাসের সেবামান বৃদ্ধিতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করুনঃ
 
১০যানজট নিরসনে গণপরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ করতে  হবে। ২) যাত্রী সাধারণের জন্য উপযোগী ও আরামদায়ক পাবলিক পরিবহণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে  হবে। ৩) অফিস সময়ে পাবলিক বাসের চলাচলে প্রধান্য দিয়ে অন্য সব পরিবহনের চলাচল নিযন্ত্রন করা হউক। ৪) অধিক ভাড়া আদায়কারী বাস কোম্পানির রুট পারমিট ও রেজিষ্ট্রেশন বাতিল করতে হবে। ৫) পাবলিক পরিবহনে যাত্রী হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং বাস রুটের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। ৬) ডিজিটাল পদ্ধতিতে উচ্চ ভাড়া আদায় বন্ধ করতে হবে।