নিরাপদ-আরামদায়কভাবে পায়ে হেঁটে চলাচলের সুব্যবস্থা চাই
নিরাপদ-আরামদায়কভাবে
পায়ে হেঁটে চলাচলের সুব্যবস্থা চাই
 
ফুটপাত প্রশস্ত করা ও ছায়ার জন্য পর্যাপ্ত গাছ লাগানো ও সংরক্ষণ এবং আলোর ব্যবস্থা করা। শহরের সকল এলাকায় হাঁটার পরিবেশ তৈরি করা। রাস্তা পারাপারে কিছুক্ষণ পর পর জেব্রা ক্রসিং এর ব্যবস্থা করা। সিগন্যালে হেঁটে চলাচলকারীদের প্রাধান্য দেওয়া। ফুটপাতে গাড়ি পার্কিং নিষিদ্ধ করা এবং কার্যকরভাবে তা বাস্তবায়ন করা। ফুটপাথে কনস্ট্রাকশনের জিনিসপত্র এবং ময়লা আবর্জনামুক্ত রাখা। আজ ১১ নভেম্বর ০৯ সকাল ১১:০০ টায় শাহবাগ বাসস্ট্যান্ড (পূবালী ব্যাংকের সামনে) পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে “নিরাপদেÑআরামদায়কভাবে পায়ে হেঁটে চলাচলের সুব্যবস্থা চাই” শীর্ষক মানববন্ধনে উপস্থিত বক্তাগণ এ অভিমত ব্যক্ত করেন। 
 
পবা এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেনÑপৃথিবীর উন্নত দেশগুলিতে নগরকেন্দ্রিক যাতায়াত ব্যবস্থায় হাঁটাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু ঢাকা শহরে সমন্বিত পরিকল্পনা ছাড়াই নির্মিত অবকাঠামো, প্রাইভেট কারের ব্যবহার বৃদ্ধি, ফুটপাত ভেঙ্গে ফেলা, ফুটপাতে গাড়ি পার্কিং ও কনস্ট্রাকশনের জিনিসপত্র-ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখা, রাস্তা পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রিজ এর ব্যবস্থা করাসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ হাঁটার অধিকার খর্ব করছে। ঢাকায় গাড়ির হর্ন-শব্দ, বায়ূদূষণ আর দূর্ঘটনার ভয় মানুষকে হাঁটতে শঙ্কিত ও নিরুৎসাহিত করছে। রাস্তার মাঝখানে গ্রিল দিয়ে মানুষকে ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে পার হতে বাধ্য করা হচ্ছে। ভেবে দেখা প্রয়োজন শিশু, নারী, বৃদ্ধ, অসুস্থ, প্রতিবন্ধি মানুষসহ মালামাল নিয়ে ফুটওভার ব্রিজ পার হওয়া সম্ভব কি না? এ ধরনের ব্যবস্থা  শহরে মানুষকে হেঁটে চলাচলে নিরুৎসাহিত করছে এবং স্বল্প দুরত্বে হেঁটে যাওয়ার সুব্যবস্থা না থাকা ও পর্যাপ্ত পরিমাণে গণপরিবহন সুবিধা না পাওয়ায় মানুষ প্রাইভেট কার ব্যবহারে উৎসাহিত হচ্ছে। যার ফলে ঢাকার যানজট ক্রমান্বয়ে ভয়াবহ রুপ ধারণ করছে। প্রাইভেট কার কেন্দ্রীক যাতায়াত ব্যবস্থাকে বন্ধ করে অধিক মানুষের যাতায়াতে পায়ে হাটার বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে। 
 
পবা এর কেন্দ্রীয় কমিটি’র সহ: সম্পাদক আমিনুর রসুল বলেনÑ হাঁটার জন্য প্রয়োজন সুন্দর, নিরাপদ, আকর্ষনীয়, মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশ। যাতে মানুষ কোন ধরণের ওঠানামা ছাড়াই নির্বিঘেœ হাঁটতে পারে। ফুটপাথের পাশে গাছ লাগানো এবং পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখা জরুরী। হাঁটার জন্য শুধুমাত্র ফুটপাথের উন্নয়ন করলেই যথেষ্ট নয়, এর সঙ্গে রাস্তা পারাপারেও হেঁটে চলাচলকারীদের প্রাধান্য দিতে হবে। রাস্তা পারাপারের জন্য কিছুদুর পর পর সমতলে জেব্রা ক্রসিং এর ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ৯৫ ভাগ মানুষের যাতায়াত (মাত্র ৫ ভাগ মানুষ প্রাইভেট কারে যাতায়াত করে) সুবিধার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও যানজট নিরসনে এবং পায়ে হাঁটার বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরিকল্পনা গ্রহন স্বল্প সময়ে অল্প খরচে অতি দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব। 
ঢাকা শহরে অধিকাংশ যাতায়াত দুই থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যে। উপযুক্ত পরিবেশ পেলে এই দুরত্বে অনায়াসে হেঁটে যাতায়াত করা সম্ভব। হাঁটার কারণে মানুষের রোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি যাতায়াত খরচ, জ্বালানীর ব্যবহার কম, পরিবেশ দুষণ ও দুর্ঘটনা হ্রাস এবং সামাজিক সম্পর্ক ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করবে।        
আরও বক্তব্য রাখেন-বিশিষ্ট লোকসঙ্গীত শিল্পী কুদ্দুস বয়াতী, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. নুরুদ্দীন, পবা’র সহ: সম্পাদক আমীর হাসানÑইবনুল সাঈদ রানা, পবা’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইফমা হোসেনÑক্ষীরোদ রায়Ñসদরুল আনামÑআশিকুর রহমান ভুলু, সিটিজেন রাইটস মুভমেন্টের মহাসচিব তুষার রেহমান এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পবা’র সহ: সম্পাদক তৌফিকুর রহমান সেন্টু।