সীতাকুন্ডে নির্বিচারে গাছ হত্যা ও হাওরে অতিথি পাখি নিধন বন্ধ কর
সীতাকুন্ডে নির্বিচারে গাছ হত্যা ও হাওরে অতিথি পাখি নিধন বন্ধ কর
 
সীতাকুন্ডের বিভিন্ন এলাকার সমুদ্র উপকূলে বিরামহীনভাবে হাজার হাজার গাছ হত্যার মহাযজ্ঞ চলছে। বাংলাদেশের নানা প্রান্তের পাহাড়, সমতলভূমি ও বনাঞ্চলও রক্ষা পাচ্ছেনা গাছ হত্যাকারীদের ভয়াল/হিংস্র থাবা থেকে। দেশের পরিবেশ সংরক্ষণে বনায়ন কর্মসূচী ও বৃক্ষরোপন কার্যক্রম যেখানে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর জোরালোভাবে অব্যাহত সেখানে এ ধরণের হাজার হাজার গাছ হত্যায় আমরা  উদ্বিগ্ন। প্রাকৃতিক কারণে শীতের সময়ে অতিথি পাখিগুলো বাংলাদেশের বিস্তীর্ন প্রান্তরে আসে। বিশেষ করে হাওর, নদী ও সমুদ্র এলাকায় এ অতিথি পাখিগুলোর আগমন ঘটে সবচেয়ে বেশি। কিন্তু কিছু সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী, সৌখিন শিকারীরা হাকালুকি হাওর সহ অন্যান্য হাওরে নির্বিচারে পাখি নিধনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। যারা দেশের আইন প্রণেতা, আইনের রক্ষক, বুদ্ধিমান ও সভ্য বলে স্বীকৃত সূধীজন এবং স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিগণও শীতের পাখি নিধন করে চলেছে। অবিলম্বে বিরামহীনভাবে হাজার হাজার গাছ হত্যাকরী ও হাকালুকি হাওর সহ অন্যান্য হাওরে নির্বিচারে পাখি নিধনকরীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান জরুরী। আজ ২৯ ডিসেম্বর ০৯ সকাল ১১:০০টায় ঢাকার মুক্তাঙ্গনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠানে এ অভিমত ব্যক্ত করা হয়। 
 
মানববন্ধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন-পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সিপিবি সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান খান, সিপিবি ঢাকা জেলার জেনারেল সেক্রেটারী আহসান হাবিব লাভলু, পবা’র সাধারণ সম্পাদক কামাল পাশা চৌধুরী, পবা’র সহ: সম্পাদক ইবনুল সাঈদ রানা, পীস এর মহাসচিব ইফমা হোসেন, পবা’র সদস্য মোসাদ্দেক আহমেদ পলাশ এবং অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পবা’র সহ: সম্পাদক তৌফিকুর রহমান সেন্টু। এয়াড়াও সিপিবির উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সদস্য ও গ্রীন বেল্ট (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের) সদস্যগণ।     
 
ভৌগলিক কারণে আমাদের দেশে প্রায়ই ঝড় জলোচ্ছাসের কবলে পড়তে হয়। আর এ প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে বিশেষ করে উপকুল এলাকায় গাছ-পালার প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। অথচ বিশেষ মহল বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে এবং এলাকার সাধারণ মানুষকে টাকার লোভে তারা গাছ হত্যার মতো পরিবেশ বিধ্বংসি কার্যকলাপ সংঘটিত করে চলেছে। দুষ্ট রাজনৈতিক নেতাদের চাপে বন বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগসাজসে বন কেটে উজাড় করছে। সীতাকুন্ডের সোনাইছড়ি উপকুলের এই গাছ হত্যার কারণে পরিবেশ বিপর্যয় ও বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এ গাছ হত্যাকারীদের অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে আর কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি এ ধরণের নৃশংস ঘটনা ঘটানোর সাহস না করে।     
 
প্রাকৃতিক বৈচিত্রে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর-বাওরের অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা আমাদের অনেক এলাকা। এ সকল অঞ্চল মুখরীত হয়ে ওঠে শীতের অতিথি পাখিদের আগমনে। অথচ সামান্য ভোগের কারণে প্রকৃতির এ অমূল্য সম্পদকে নিধন করছে কতিপয় হায়েনা। সম্প্রতি হাকালুকি হাওরে অবাধে অতিথি পাখি নিধন করছে যারা দেশের আইন প্রণেতা, আইনের রক্ষক, বুদ্ধিমান ও সভ্য বলে স্বীকৃত সূধীজন। সৌখিন শিকারীরা দল বেধে অতিথি পাখি নিধনে যাচ্ছে হাওর এলাকাগুলোতে। অবিলম্বে এ সকল অতিথি পাখি নিধন কারীদের এবং গাছ হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি প্রদান করা জরুরী। প্রাণীকুল ও গাছপালা জীববৈচিত্রের বিরাট অংশ জেনেও আইন প্রয়োগে কঠোরতা নেই বলেই আমরা হারাচ্ছি আমাদের জীববৈচিত্র এবং নিজের হাতেই আমরা ধংস করছি আমাদের পরিবেশ।