‘‘পয়সা দিয়ে বিষ খেতে চাইনা, বিশুদ্ধ পানি চাই’
                         ‘‘পয়সা দিয়ে বিষ খেতে চাইনা, বিশুদ্ধ পানি চাই’
২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস। অথচ গ্রীষ্ম না আসতেই ঢাকা নগরীতে দেখা দিয়েছে পানীয় জলের সংকট। দিন দিন এ সংকট তীব্র হচ্ছে। কোথাও কোথাও সারা দিনেও মিলছে না পানির দেখা। আবার কিছু এলাকার মানুষ পানির অভাবে ছুটছেন শহরময়। এতে পানি পেলেও তা থেকে আসছে দুর্গন্ধ, স্বাভাবিক রঙের পরিবর্তে লালচে ও ময়লাযুক্ত পানি যা পান করা তো দুরের কথা ব্যবহারেরও অযোগ্য। সারা বছর সংকট থাকলেও ফেব্র“য়ারী, মার্চ ও এপ্রিলে এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। ফলে সব শ্রেণীর নগরবাসীর ভোগান্তি ওঠে চরমে। আজ ২১ মার্চ রবিবার ঢাকা ওয়াসা ভবনের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) শীর্ষক মানববন্ধনে এ কথাগুলো বলা হয়।
 
মানবন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সাধারণ সম্পাদক কামাল পাশা চৌধুরী, নিরাপদ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানা, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের মহাসচিব আমিনুর রসুল, বাউল সম্রাট কুদ্দুস বয়াতী, পবার সাবিনা নাঈম, স্থপতি শাহীন আজিজ, পীসের মহাসচিব ইফমা হোসেন সহ আরও অনেকে।
 
আবু নাসের খান বলেন, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমাগত নিচে নামছে। এর নাগাল না পাওয়ায় বাড়ছে সংকট। পানির নিষ্কাশন ব্যবস্থা ঠিক না থাকায় বর্ষায় মাটি পানি শোষণ করতে পারছে না। ফলে ভূ-গর্ভে পানি জমা হচ্ছে না। একটি আদর্শ নগরীতে মোট জনসংখ্যার তুলনায় যে পরিমাণ পানির প্রয়োজন তার আংশিক পাচ্ছি আমরা। বিভিন্ন জরিপে দেখা যাচ্ছে, এ শহরে ৫০ লাখের স্থলে প্রায় দেড় কোটি লোক বাস করছে। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য ওয়াসা যে পরিমাণ পানি সরবরাহ করে তা একেবারেই কম। এখন আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে, পানিতে ময়লা ও দূর্গন্ধ। এর প্রধান কারণ মাত্রাতিরিক্ত ক্লোরিন ব্যবহার। তাছাড়া পানির লাইনে ফাটল, ছিদ্র ও দুর্বল মেরামতের কারণেও পানি ময়লা হচ্ছে। লাইনগুলো যখন স্থাপন বা মেরামত করা হয় তখন কাজের মান বজায় রাখা হয় না। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই লাইনে ত্র“টি ধরা পড়ে। 
 
বক্তারা আরও বলেন, ঢাকার পানি সংকটের কারনে যেমন পয়নিষ্কাশন ব্যবস্থা জটিল থেকে জটিলতর আকার ধারন করছে তেমনি দূষণযুক্ত পানি ব্যবহারে পেটের পীড়া ডায়ারিয়া, আমাশয়সহ মারাত্বক ব্যাধিতে মহিলা, শিশু, আবাল-বৃদ্ধ বণিতাসহ সকলেই আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতিটি ঘর যেন এক একটি হাসপাতালে পরিণত হচ্ছে। চিকিৎসা গ্রহনের জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ অপ্রতুল চিকিৎসা কেন্দ্রে হানা দিচ্ছে।
 
 বিশেষজ্ঞদের আশংকা ঢাকাসহ বড় বড় শহরগুলোতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ পর্যাপ্ত পরিমান নিশ্চিত না হলে পানি বাহিত রোগসহ মারাত্বক রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে ঢাকাসহ সকল নগরী মহামারী আকার ধারন করবে। নাগরিক জীবনের সেবা নিশ্চিত করার জন্য যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার মধ্যে উলে¬খযোগ্য দায়িত্ব পালনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াসা। যার সেবার আওতায় প্রতিটি নাগরিকের জীবন-মৃত্যু সম্পর্কযুক্ত। এই সেবার মানের উপর নির্ভর করছে নাগরিক জীবনের শান্তি-শৃঙ্খলা এবং সুস্থতা। আজ ঢাকা শহরের প্রতিটি পাড়ায়-মহল¬ায় পানি সরবরাহের যে বিশৃঙ্খল চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে তাতে সচেতন মহলসহ সকলকে ভাবিয়ে তুলেছে। অবিলম্বে ঢাকা শহরের পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ওয়াসাসহ সংশি¬ষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানকে  নিজ নিজ দায়িত্ব সুষ্ঠভাবে বাস্তবায়ন করে নগর জীবনের জীবনযাত্রাকে সচল রাখার আহবান জানাচ্ছি।