অবহেলিত রেলপথ ও নৌপথকে উন্নয়ন করা জরুরী
অবহেলিত রেলপথ ও নৌপথকে উন্নয়ন করা জরুরী
 
দেশের সাবির্ক উন্নয়নের স্বার্থে রেল ও নৌ-পথ উন্নয়নে যথেষ্ট অর্থ বরাদ্ধ করা প্রয়োজন। বিগত দিনে রেল ও নৌ-পথকে উপেক্ষা করা হয়েছে। পরিবেশ, অর্থনীতি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে রেল ও নৌ-পথের উন্নয়ন করতে হবে। আজ সকাল ১১ টায় রিপোর্টার্স ইউনিটিতে রেল ও নৌপথ রক্ষা ও উন্নয়ন জাতীয় কমিটি রেল ও নৌ উন্নয়নে করনীয় শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটি কমিটি ঘোষনা করে। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক খান সারোয়ার মুর্শিদ, প্রকৌ: শেখ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, বিচারপতি এম গোলাম রাব্বানী, অধ্যাপক ড. এ এম.এম. সফিউল্লাহ এবং আবু নাসের খান।
 
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক খান সারোয়ার মুর্শিদ বলেন, ৩৭ বছরে রেল ও নৌ পথে যে বর্তমান অবস্থা বিদ্যমান তা খুবই দূর্ভাগ্যজনক ও হতাশাব্যাঞ্জক। রেল ও নৌ পথকে উপেক্ষা করে এক তরফা সড়ক পথের উন্নয়ন করা হয়েছে। আমাদের যে নৌপথ ও যোগাযোগ বিদ্যমান আছে তা অত্যন্ত বৈরি ও ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিরাপদ অবস্থা বিরাজ করছে। আমরা জনবান্ধব পরিবেশবান্ধব ও মানববান্ধব যোগাযোগ চাই। সেক্ষেত্রে নৌ ও রেলপথকে অগ্রাভিকার ভিত্তিতে মানুষের নিরাপদভাবে গড়ে তুলতে হবে। 
 
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা: এ এম এম সফিউল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে রাষ্ট্রের একটি বৃহৎ সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। রেলকে অনেকে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে অবহিত করলেও, পরিবেশ, অর্থনীতি, জনসেবা, রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব, নিরাপত্তা, দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান ইত্যাদি বিষয়ে রেলের অর্থনৈতিক অবদান বিবেচনা করলে দেখা যাবে, রেল কখনোই অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ছিল না। রেলওয়েকে প্রাইভেটাইজেশনের কথা বলা হচ্ছে প্রাইভেটাইজেশনে শুধু ব্যবসায়িক লাভের কথা চিন্তা করবে, সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ সেবা পাবে না।  রেলওয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় সবচেয়ে কার্যকর হলেও বিগত দিনে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে সড়ক পথে। কারণ দাতারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই  ঋণ প্রদান করেন সড়কপথ উন্নয়ন জন্য। শুধুমাত্র সড়ক নির্ভর পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে  আমরা পরিবেশ, অর্থনৈতিক, সামাজিকভাবে ঝূঁকিপূর্ণ অবস্থার দিকে যাচ্ছি। প্রয়োজন রেল পথ, নৌপথ ও সড়ক পথকে সাথে সমন্বয় করে মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম গড়ে তোলা। 
 
আবু নাসের খান বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রাচীন কাল থেকেই ঐতিহ্যগতভাবে নৌপথ একটি নিরাপদ ও সাশ্রয়ী যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নৌপরিবহন ব্যবস্থাপনায় অপেশাদারী এবং মুনাফাকেন্দ্রিক মনোভাব ও  দুর্নীতির কারণে সেটি সবচেযে ঝুঁকিপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ঝুঁকির পেছনে প্রাকৃতিক দুর্যোগ যতটা না দায়ী তার চেয়ে বেশি দায়ী অতিরিক্ত ব্যবসায়িক মনোভাব, সংশ্লিস্টদের গাফলতি, দায়িত্বে অবহেলা ও প্রশাসনিক দূর্বলতা।
 
প্রকৌশলী শেখ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, বিগত দিনে নৌপথকে অবহেলিত করা হয়েছে। ফলে নদীগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে এবং নৌপথ ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তিনি নৌ ও রেলপথের উন্নয়নে সকলকে সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসার আহবান জানান। প্রকৌশলী কবির হোসেন বলেন, বিগত দিনে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে যারাই ছিলেন তারা বাস মালিকদের স্বার্থ সংরক্ষন করেছে। জনস্বার্থে রেলের মতো একটি পরিবেশবান্ধব বাহনকে গুরুত্ব বা অগ্রাধিকার প্রদান করেনি। 
 
সম্মেলনে রেল ও নৌপথের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক খান সারোয়ার মুর্শিদকে আহবায়ক, বিচারপতি এম গোলাম রাব্বানী, প্রকৌ: শেখ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, অধ্যাপক ড. এ এম.এম. সফিউল্লাহ, অধ্যাপক আনু মোহাম্মদকে যুগ্ম আহবায়ক করে ৩৭ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় কমিটি গঠনের ঘোষণা করা হয়। এ কমিটি রেল ও নৌপথের উন্নয়নের লক্ষ্যে জনমত সৃষ্টিতে দেশব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা করবে। 
 
[