পূর্বাচল প্রকল্পের নামে পরিবেশের ধ্বংস যজ্ঞ চলছে

“পূর্বাচল নতুন শহর” প্রকল্পের নামে রাজউক নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ ও গাজিপুরের কালিগঞ্জ থানার বিশাল এলাকার বৃক্ষ কর্তন ও বনরাজি ধবংশ, আবাদি জমি বিনষ্ট এবং ড্রেজার দিয়ে বেপরোয়াভাবে নদী-খাল ভরাট করে।  পরিবেশ আইন লঙ্ঘন ও আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাজউক পরিবেশ বিধবংশী এ ভয়ংকর ধবংস লীলা চালায়। পরিবেশবাদী সংগঠনের তীব্র প্রতিবাদের বিপরীতে রাজউক ঘটনা মিথ্যা দাবী  করে পত্রিকায় নোটিশ দেয়। এ প্রেক্ষিতে আজ ০৫ আগস্ট ২০১৩, সোমবার পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট (আইএবি) এর একটি বিশেষজ্ঞ দল সাংবাদিক সহযোগে উক্ত স্থান সরেজমিনে পরিদের্শনে যায়। পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান এর নেতৃত্বে পরিদর্শক দলে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি স্থপতি আবু সাঈদ আহমেদ, বাপার যুগ্ম সম্পাদক জে কে বরাল, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুল আলম, ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার মারূফ রহমান প্রমুখ।

প্রকল্প স্থান পারিদর্শন ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, পূর্বাচল প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নামে রাজউক বরকাউ, পর্বতা, কালিকুঠিসহ বিশাল এলাকার জলাধার, পুকুর বিল খাল এবং নদীর বিভিন্ন অংশ বালি দ্বারা ভরাট করছে। লিচুর বাগান বুলড্রোজার দিয়ে গুড়িয়ে দিয়ে গাছ মাটি চাপা দিয়েছে। আম জাম লিচু ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ঔষধি গাছ বুলড্রেজার দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়েছে, এলাকা হয়ে পড়ছে গাছশূন্য। অত্র এলাকায় আগে বানর, খরগোশ, মেছোবাঘ, সজারূ, সাপ, বিভিন্ন প্রজাতির পাখিসহ জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ ছিল। অথচ এখন দেখে বুঝারই উপায় নেই এখানে গাছপালা সমৃদ্ধ লোকালয় ছিল। এতো নিচু এলাকা ভরাট করা হয়েছে যে বিলের মাঝের বয়স্বী হিজল গাছের সম্পূর্ণটা বালি চাপা পড়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা কেটে বিরান ভূমি করা হয়েছে। আগে যেখানে সূর্যের আলো পৌছাতো না এখন সেখানে দিগন্ত জোড়া খালি মাঠ।

এলাকাŸাসী অভিযোগ করে বলেন, রাজউক এর ঠিকাদার কর্তৃক কৃষি জমি ভরাট, গাছ গাছালি কাটা এবং জলাধার নষ্ট হওয়ায় তারা কর্মহীন হয়ে পড়ছে। তাদের বিভিন্ন ধরনের মামলা ও হুমকি দিয়ে বসত-বাড়ী থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করা হচ্ছে। অনেকের বিরূদ্ধেই একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। প্রতিবাদ করতে গেলে সন্ত্রাসী কর্তৃক হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

নির্বিচারে গাছ কেটে, আবাদি জমিসহ নিচু জমি এবং জলাশয় ভরাট করে রাজউক পরিবেশ আইন লঙ্ঘন এবং মহামান্য হাইকোর্টের আদেশের অবমাননা করেছে। সেই সাথে নিরিহ গস্খামবাসেিক ভয় দেখিয়ে তাদেরকে ভিটেমাটি ছাড়া কওে অমানবিকতার পরিচয় দিয়েছে।

উক্ত পরিদর্শন শেষে পরিবেশবাদীরা দাবী করেন-
১.    রাজউক এর পরিবেশ বিধ্বংশী কার্যক্রম অবিলম্বে সম্পূর্ণ বন্ধ করা।
২.    পূর্বাচল প্রকল্পের নামে পরিবেশ বিধবংশী কর্মকান্ডের ক্ষতি নিরূপণ করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা।
৩.    পূর্বাচল প্রকল্পের নামে এরূপ বিধবংশী এবং অমানবিক কর্মকান্ডের জড়িত রাজউকের কর্মকর্তাকে দৃষ্টান্তমূলক শান্তি প্রদান করা।
৪.    নিরীহ এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে মিথ্যা হয়রানিমূলক মামলা নি:শর্তভাবে প্রত্যাহার করা।