ঢাকা বাঁচাতে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও দূষণ বন্ধ করা জরুরী

বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলটি বেপরোয়া দখল ও দূষণের কবলে পড়ে এখন মৃত প্রায়। নদীর দুপাশের বসতি ও নদীর কোল ঘেষে অবস্থিত বিভিন্ন কলকারখানা গুলো হতে নদীতে নিয়মিত বর্জ্য-ময়লা ফেলা হচ্ছে। ফ্যাক্টরীগুলোর অপরিশোধিত তরল বর্জ্য ও কঠিন বর্জ্য অবাধে ফেলার কারণে দূষণ ও দখল ত্বরান্বিত হচ্ছে। এতে মো:পুর, রায়েরবাজার, হাজারীবাগ, কালুনগর, ভাগলপুর, নবাবগঞ্জ, শহীদনগর, কামালডাঙ্গা, ইসলামবাগসহ এ এলাকার জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের উপর মারাত্মক বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ঢাকার কোল ঘেষে বয়ে যাওয়া বুডিগঙ্গার আদি চ্যানেল দখল-দূষণের এ জঘন্য প্রতিযোগিতা বন্ধে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ, হাইকোর্টের নির্দেশনার পূর্ণ বাস্তবায়ন জরুরী। আজ ১০ নভেম্বর ২০১২, শনিবার, সকাল ১১:০০ টায় শাহবাগস্থ চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও গ্রীন মাইন্ড সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে উক্ত দাবী জানানো হয়।

পবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান ময়নার সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সম্পাদক আসলাম খান, গ্রীণমাইন্ড সোসাইটির সভাপতি আমির হাসান, সাধারণ সম্পাদক মো: ফারুক, ইউল্যাব ইউনির্ভাসিটির অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুসনে জাহান, সিক্কাটুলী মুসলিম যুব সংঘের সভাপতি আকবর হোসেন, কৃষ্টি পরিষদের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন, নাসফের সহ-সাধারণ সম্পাদক মো: সেলিম, পুরান ঢাকাবাসী হাজী আরমান প্রমুখ।

বক্তারা বলেন সোয়ারীঘাট-গাবতলী বেড়িবাঁধের দুপাশের একোয়ার করা জমি দ্রুত দখল-ভরাটের কবলে পড়েছে। ফলে এ এলাকা বর্ষার সময় সামান্য বৃষ্টিতেই ভয়াবহ জলাবদ্ধতার মুখে পড়ে। অধিক বৃষ্টিতে তলিয়ে যায় অজস্র ঘরবাড়ি যার প্রতিকারে ওয়াসা পাম্প লাগিয়ে পানি সেচের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দিতে চায়। অথচ জলাবদ্ধতাসহ পরিবেশ বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ জলাভূমি ভরাট, অপরিকল্পিত রাস্তা নির্মাণসহ অব্যাহত দূষণের বিরোদ্ধে জোড়ালো কোন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না।

তাছাড়া ঢাকার পশ্চিমাঞ্চলের খালগুলো ভরাটের খপ্পরে পড়েছে। যে বেপরোয়াভাবে দখল চলছে তা যদি বন্ধ করা না যায় তবে অল্প কয়েক দিন পরই আর এ জলাধারগুলির অস্তিত্ব বোঝার উপায় থাকবে না। সোয়ারীঘাট থেকে গাবতলী পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ টি স্লুইচ গেট রয়েছে অথচ দখল ভরাটের ফলে প্রায় সবগুলো স্লুইচ গেটের মুখ বন্ধ হয়ে রয়েছে ফলে পানি নিষ্কাশন হচ্ছেনা। যে নালাগুলো বেয়ে পানি স্লুইচ গেটে আসতো সেগুলো ভরাট করায় এ এলাকা বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ জলাবদ্ধতার শিকার হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড এর লোকদের হাত করে রাস্তা বানানোর নামে একোয়ারকৃত জমি লিজ নিয়ে ঘরবাড়ি, দোকানপাট গেড়ে বসেছে অনেকে।

নদী, জলাশয় ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা  সত্ত্বেও প্রশাসনের চোখের সামনে দখলদাররা মরিয়া হয়ে উঠেছে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলসহ বেড়িবাঁধের উভয় পাশের খাল-জলাশয়গুলোর শেষ স্পন্দনটুকু কেড়ে নেওয়ার জন্য। দখলের এ জঘন্য প্রতিযোগিতা বন্ধে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ গ্রহণ জরুরী। আজকের মানববন্ধন থেকে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের সকল অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও নদীর সর্বপ্রকার দূষণ বন্ধের জোর দাবী জানানা হয় ।