পাহাড় ধসের কারণ - বন উজাড় ও পাহাড় কাটা চলছেই পাহাড় ও বন খেকোদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই


পাহাড় ধসের কারণ - বন উজাড় ও পাহাড় কাটা চলছেই
পাহাড় ও বন খেকোদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই
 
অবাধে বন উজাড়, পাহাড় কেটে আবাসন কোম্পানির সুউচ্চ ভবন নির্মাণ, অপরিকল্পিত সড়ক নির্মাণসহ প্রভাবশালী দু®কৃতিকারীদের  নানা বেপরোয়া কর্মকান্ডে প্রতিবছর পাহাড় ধসে বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। অথচ পরিবেশগত এই বিপর্যয় ও পাহাড় ধসে বিপুল প্রাণহানি রোধে সরকারের ইতিবাচক কোন পদক্ষেপ নেই। অবিলম্বে পাহাড় ধসের মূল কারণ বন উজাড় ও পাহাড় কাটা বন্ধ করা হোক এবং এর সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হোক। আজ ০১ জুলাই ২০১২, রবিবার, সকাল ১০:৩০ টায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে উক্ত দাবী জানানো হয়।

পবা’র নির্বাহী কমিটির সদস্য ও পীসের মহাসচিব ইফমা হোসাইন এর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সহ-সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন সুমন, কো-অর্ডিনেটর সাবিনা নাঈম, আতিক মোর্শেদ, অধ্যাপক কামাল আতাউর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবির হিরু, বিসিএইচআরডির নির্বাহী পরিচালক মো: মাহবুল হক, শাহ আলম প্রমুখ।

আবু নাসের খান বলেন, নির্বিচারে বৃক্ষ কেটে পাহাড় ন্যাড়া করে ফেলায় প্রচন্ড গরমে পাহাড়গুলোতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ফাটল ধরে প্রবল বর্ষা শুরু হলে বৃষ্টির এসব ফাটলে পানি ঢুকে বৃহদাকার ধস নামায়। তেমনিভাবে বর্ষাকাল শুরু হওয়ার আগে গাছ-জঙ্গল সাফ করে ফেলায় বৃষ্টির পানি সরাসরি পাহাড়ের গায়ে আঘাত হানে এবং মাটিসহ পানির বাঁধাহীন প্রবল ধারা বইতে থাকে ফলস্বরূপ পাহাড় ধসে পড়ে। তাই যারা বন উজাড় করে এবং পাহাড় কেটে আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশে বিপর্যয় ডেকে আনছে এবং প্রাণহানি ঘটাচ্ছে তাদেরকে দৃষ্টান্তমুলক শান্তি দেয়া হোক।

মানববন্ধন থেকে জানানো হয়, চট্রগ্রামে একের পর এক পাহাড় কেটে ও বন উজাড় করে গড়ে তোলা হচ্ছে ইটভাটা ও বসতি। পাহাড়ের ঢালু অংশে বেড়া দিয়ে ঘর তুলে নিন্ম আয়ের মানুষদের ভাড়া দেয়া হচ্ছে। ফলে বৃষ্টি নামলেই পাহাড় ধসে শত শত মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। ৫ বছরে বৃহত্তর চট্রগ্রামে পাহাড় ধসে ৫ শ’রও বেশি লোকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা শতাধিক। পাহাড়খেকো রাঘববোয়ালরা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় থাকছে ধরা ছোয়ার বাইরে।

এমতাবস্থায় আমাদের সুপারিশসমূহ-
১.    পার্শ্ববর্তী দেশসমূহের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সুনির্দিষ্ট জাতীয় পাহাড় ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়ন করা।
২.    পাহাড় রক্ষায় পাহাড়ের গাছ এবং মাটি কাটা বন্ধ করা
৩.    পাহাড় ও পাহাড়ের গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তি, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা
৪.    বিভিন্ন পাহাড়ে যারা ঝঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন তাঁদের স্থানাস্তর ও পুর্ণবাসন করা
৫.    পাহাড়ি এলাকা আশপাশে ইটভাটা এবং হাউজিং এর অনুমোদন না দেয়া
৬.    পাহাড় কাটা বিষয়ক মামলা রুজু তদন্ত ও বিচার সুষ্ঠু এবং দ্রুততর করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরকে শক্তিশালী করা
৭.    এতদসংক্রান্ত আইন ও বিধি সংশোধন করে যুগোপযোগী ও কার্যকর করা