প্রভাবশালীদের প্লট নিশ্চিত করা নয় পরিকল্পিত উন্নয়নের মনোনিবেশ করাই রাজউক

বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যস্ত থাকার কারণে একটি পরিকল্পিত নগরায়নে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) তার পরিকল্পনা প্রণয়ন, উন্নয়ন ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণে কোন ভূমিকা রাখতে পারছে না। নগর পরিকল্পনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত এ সংস্থার পরিকল্পানা প্রণয়ন ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা না থাকায় বাসস্থান, যাতায়াত, বিনোদন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশসহ মৌলিক ও প্রয়োজনীয় চাহিদা পুরণে নাগরিকদের নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রভাবশালীদের প্লট নিশ্চিত করা নয় পরিকল্পিত উন্নয়নের মনোনিবেশ করাই রাজউকের প্রধান কাজ হওয়া উচিত। ২৭ অক্টোবর ২০১১, বৃহস্পতিবার সকাল ১০:৩০ টায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও বুয়েটের নগর ওঅঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের যৌথ উদ্যোগে আয়াজিত এক সেমিনারে বক্তারা উকত্ অভিমত ব্যক্ত করেন।

বিশিষ্ঠ সাংবাদিক কামাল লোহানীর সভাপতিত্বে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, অধ্যাপক স্থপতি সামসুল ওয়ারেস, ইষ্টার্ণ ইউনির্ভাসিটির উপাচার্য ড. নুরুল ইসলাম, বুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ইশরাত ইসলাম, বাংলাদেশ প্ল্যানার্স ইনন্সিটিউটের সাবেক সভাপতি গোলাম রহমান, রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন) এম মাহবুবুল আলম প্রমুখ।

সেমিনার থেকে বলা হয়, শহরের জীবনযাত্রার মান, সামাজিক এবং পারিপার্শ্বিক অবকাঠামো, নগরীর ভবিষ্যত শৃংখলা ফিরিয়ে আনা, বিস্তার, উন্নত শাসন এবং নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বাহ্যিক এরিয়া নিয়ন্ত্রণ রাজউকের প্রধান কাজ হওয়া উচিত। অথচ রাজউকের প্রকল্পের তালিকা দেখলে দেখা যাবে রাজউক অতীতে অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্যও তাদের বিশাল এক প্রকল্পের তালিকা রয়েছে। এ সকল তালিকার মধ্যে রয়েছে আবাসিক প্লট, রাস্তা তৈরি, পার্ক তৈরি, ব্রিজ তৈরি, এপার্টমেন্ট তৈরি, পার্কিং তৈরি, স্যাটেলাইট সিটি তৈরিসহ নানা প্রকল্প। রাজউকের মানব সম্পদের একটি বড় অংশ ব্যয় হচ্ছে এই সকল কর্মকান্ডের জন্য। সরকারের অন্যান্য সংস্থাগুলো বিভিন্ন কার্যক্রমের সাথে নগর উন্নয়ন পরিকল্পনার সমন্বয় সাধন এই সংস্থার দায়িত্ব হলেও এক্ষেত্রে সংস্থাটি ব্যর্থ হচ্ছে ।

সুপারিশ সমূহ:
১.    ওয়াসা, ডেসা, ডিসিসি, গৃহায়ন কর্তৃপক্ষসহ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিকল্পনা সমূহের  সমন্বয় সাধন করে মহানগরীর সামগ্রিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন তদারকী করাই রাজউকের প্রধান কাজ হওয়া উচিত।
২.    রাজউককে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য নগরপরিকল্পনাবিদ, স্থপতিসহ বিভিন্ন পেশাজীবির সমন্বয়ে একটি নীতিনির্ধারণী পরিষদ গঠন করতে হবে।
৩.    রাজউককে শক্তিশালী করতে পর্যাপ্ত পরিমাণ নগরপরিকল্পনাবিদসহ  সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে একে ঢেলে সাজাতে হবে।
৪.    আবাসিক সহ বিভিন্ন প্লট বা ফ্ল্যাটের বরাদ্দের কাজ রাজউকের বদলে গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের উপর ন্যস্ত করা যেতে পারে।
৫.    জরুরী ভিত্তিতে ড্যাপ বাস্তবায়ন করা।
৬.    বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম মাষ্টারপ্ল্যান এবং ড্যাপের আলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা।