প্রস্তাবিত নদী রক্ষা কমিশনের ক্ষমতায়ন করা জরুরি

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন ২০১৩ এর খসড়া দখল ও দূষণ রোধ কওে নদীকে বাচানোর জন্য উপযুক্ত নয়। কেবলমাত্র সুপারিশ প্রণয়নের জন্য কোন কমিশন গঠনের বিষয়টি অবান্তর, অযৌক্তিক এবং নিষ্প্রয়োজর। কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে সরকারের বাধ্যবাধকতার কোনো বিধান খসড়া আইেেন নেই। কমিশনের চেয়ারম্যান পদমর্যাদাও আইনে সুস্পষ্ট নয়। আইনে কমিশন গঠনের বিধানে পরিবেশবাদী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিত্বকে খর্ব করা হয়েছে। খসড়া আইনটিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন করে প্রধানমন্ত্রী ও স্পীকারের নিকট স্মারকলিপি প্রেরণসহ সকল সংসদ সদস্যের নিকট পাটানোর বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়। নদী কমিশন আইন চুড়ান্ত করার পুর্বে গণশুনানির ব্যবস্থা করা উচিত। বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে জাতীয় সংসদের সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটি এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। ০২ ফেব্রুয়ারী ২০১৩, শনিবার, সকাল ১০:৩০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি কক্ষে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও জনউদ্যোগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এই অভিমত ব্যক্ত করেন।

পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান এর সভাপতিত্ত্বে  বৈঠকে বক্তব্য রাখেন, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এম সফিউল্লাহ, পবার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনোয়ার হোসেন, বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক এমদাদুল হক, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ, এডভোকেট মনজিল মোরশেদ, জনউদ্যোগের আহবায়ক অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ আরেফিন, ডা: রশিদ ই মাহবুব, আইইডির নির্বাহী পরিচালক নুমান আহমেদ খান, পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো: আবদুস সোবহান, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সমন্বয়ক অজয় রায়, প্রকৌশলী ম ইনামুল হক প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, নদী কমিশনকে আমরা বাংলাদেশ নদীর অভিভাবক সংস্থা হিসেবে দেখতে চাই। দীর্ঘদিনের আন্দোলন ও আদালতের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে সরকার যে কমিশন গঠন করেছে তা প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু কমিশনের যে ক্ষমতা বা কার্যাবলী প্রদান করা হয়েছে, তাতে এ প্রতিষ্ঠান একটি নখদন্তহীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। নদী রক্ষায় সরকারের সদিচ্ছা বাস্তবায়নে এ কমিশনের চেয়ারম্যানের পদমর্যাদা, কমিশনের সদস্য সংখ্যা, কমিশনের নির্দেশ মানা বাধ্যতামূলক করা, নদীর সাথে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সরকারী সংস্থাগুলোর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ,  তদারকি বা মূল্যায়নে ক্ষমতা এবং নদী দখল দুষণকারীদের কার্যক্রম বন্ধ করার ক্ষমতা এ কমিশনের থাকা জরুরি। এছাড়া নদীর সম্পর্কিত বিভিন্ন আইন যেমন পোর্ট এ্যাক্ট, বেঙ্গল ক্যানেল এ্যাক্ট ইত্যাদিকে এ কমিশনের কার্যক্রম কার্য পরিধিতে সংযুক্ত করা প্রয়োজন।

নদী সাথে সংশ্লিষ্ট সরকারের একাধিক সংস্থা রয়েছে কিন্তু এ সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতা এবং দায়িত্বশীল আচরণের অভাবে নদীগুলো দখল, দুষণ ও ভারট অব্যাহত রয়েছে। এ সংস্থাগুলোর রয়েছে নদী রক্ষায় কারিগরি দক্ষতার অভাব। নদী রক্ষায় কমিশন এ সংস্থাগুলোর কার্যক্রমগুলোর মূল্যায়ণ করার ক্ষমতা থাকা জরুরি। আদালতের নির্দেশনা থাকা পরেও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো হীন স্বার্থে সিএ দাগ অনুসরণ না করে, নদীর ভিতরে গিয়ে সীমানা চিহ্নিত করছে। ফলে নদীর সংকুচিত হচ্ছে এবং জনগনের অর্থে অপচয় হচ্ছে। নদীর ভিতর সীমানা চিহ্নিত করার প্রেক্ষিতে দখলদারকারীরা নদীর পাড় দখল করার জন্য বৈধ সুযোগ পাচ্ছে। নদী রক্ষায় প্লাবন ভূমি পর্যন্ত নদীর সীমানা চিহ্নিত করা জরুরি এবং প্রয়োজনে নদীর তীর ভূমি একোয়ার করার লক্ষ্যে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।