প্রতিবেশ ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে বিষাক্ত ও ক্ষতিকর পদার্থবাহী এম.টি এন্টারপ্রাইজ জাহাজটিকে

১৫ সেপ্টম্বর/০৮ সোমবার, সকাল ১১:০০ টায় ঢাকা বিম্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের সামনে ‘গ্রীনপিসের তালিকাভুক্ত বিষাক্ত জাহাজ আমদানী বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী’ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়।

আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদি সংগঠন ‘গ্রীনপিস’ এর তালিকাভুক্ত নিষিদ্ধ জাহাজ বাংলাদেশে আমদানি করা হচ্ছে। এম.টি এন্টারপ্রাইজ নামক বিষাক্ত একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থান করছে। এর পূর্ব নাম-নিউ আটলান্টা, এটি ভাঙ্গার সময় মারাত্মক পরিবেশ দূষণের আশংকা রয়েছে। আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীনপিস জাহাজটিকে ৫০টি ক্ষতিকর জাহাজের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। গ্রীনপিসের এ জাতীয় সতর্কতা থাকা সত্ত্বেও উক্ত জাহাজটি চট্টগ্রাম বহির্নোঙরে অবস্থান নিয়েছে, যা প্রতিহত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছে। 

বাংলাদেশের উপকূলে ভাঙার উদ্দেশ্যে গ্রীনপিস-এর তালিকাভুক্ত বিষাক্ত জাহাজগুলোকে আমদানি করতে একটি ন্যাস্ত স্বার্থগোষ্ঠী প্রথমথেকেই তৎপর। প্রথমে এসএস নরওয়ে নামক বিষাক্ত জাহাজটি  আমদানি করতে চাইলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে কর্তৃপক্ষ বিষাক্ত জাহাজটিকে বাংলাদেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। পরিবেশবাদীদের আন্দোলনের মুখে সরকারের এরূপ সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয় এবং শেষ পর্যন্ত এসএস নরওয়ে বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করতে পারেনি। পরবর্তীতে গ্রীনপিসের তালিকাভুক্ত এম.টি আলফা শিপ নামক অপর একটি পরিত্যক্ত অয়েল ট্যাংকারও বিষাক্ত বিধায়, সমুদ্র পরিবহণ অধিদপ্তর জাহাজটি ভাঙ্গার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের উপকূলে প্রবেশে এলসি খোলার অনুমোদন দিতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে এবং পরবর্তীতে এ বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশে জাহাজটি বাংলাদেশের জলসীমা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে।
এম.টি এন্টারপ্রাইজ নামক বিষাক্ত পণ্যবাহী জাহাজটি ভাঙ্গার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের উপকূলে প্রবেশে এলসি খোলার অনুমোদন প্রার্থনা করলে প্রথমে এলসি খোলার অনুমতি প্রদান করা হলেও এম.টি এন্টারপ্রাইজ নামক জাহাজটি গ্রীনপিসের তালিকাভুক্ত হওয়ায় এবং আবেদনের সাথে এ সংক্রান্ত ভুল তথ্য প্রদান করার সমুদ্র পরিবহণ অধিদপ্তর পরবর্তীতে অনুমতি বাতিল করে। কর্তৃপক্ষের এহেন সিদ্ধান্ত পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠনকে স্বস্তি প্রদান করেছিল। কিন্তু জানা যায় যে, সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর একটি সাজানো পরিদর্শনের মাধ্যমে জাহাজটিতে ক্ষতিকর বর্জ্য নেই মর্মে মত প্রকাশ করে বাতিলাদেশ প্রত্যাহার করেছে। এটি সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর-এর এখতিয়ার বহির্ভুত এবং অন্য তিনটি জাহাজের ক্ষেত্রে গৃহীত সিদ্ধান্তের চেয়ে ভিন্ন ও জনস্বার্থ পরিপন্থি।
মানববন্ধন কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেনÑ পবা এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, জাতীয় হাওর উৎসব কমিটির আহ্বায়ক কামাল পাশা চৌধুরী, কো-অর্ডিনেটর ড. হলিম দাদ খান, প্রোগ্রাম অফিসার তৌফিকুর রহমান সেন্টু, মিরপুর সবুজ চত্ত্বর রক্ষা কমিটির সভাপতি জনাব ইয়াকুব আলী, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের মারুফ রহমান ও শোভন। এছাড়াও বেলা, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, প্রত্যাশা, সুবন্ধন এ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।  

দাবীসমূহÑ
ক্স    প্রতিবেশ ও পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে বিষাক্ত ও ক্ষতিকর পদার্থবাহী এম.টি এন্টারপ্রাইজ জাহাজটিকে  অবিলম্বে বাংলাদেশ ত্যাগে বাধ্য করার দাবী জানাচ্ছি
ক্স    একইসাথে ভবিষ্যতে গ্রীন পিসের তালিকাভুক্ত কোন জাহাজ যাতে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে এবং ভাঙার উদ্দেশ্যে অন্য কোন জাহাজ যেন ক্ষতিকর পদার্থমুক্ত না হয়ে এ দেশে আসতে না পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানানো হচ্ছে।