রেল দূর্ঘটনা ও অগ্নিসংযোগ পরিকল্পিত

রেল ধ্বংসের চক্রান্তকারীদের চিহ্নিত ও দায়ীব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই
গণমানুষের পরিবহন হিসেবে রেলের প্রয়োজন যখন ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে তখন রেলের সুনাম নষ্ট করতে একটি অসাধু চক্র বিভিন্নভাবে নাশকতা সৃষ্টি করছে।  রেলের বিভিন্ন দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে সড়ক পরিবহনের সাথে জড়িত একটি মহল রাষ্ট্রীয় এই সেবামূলক প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করতে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। অতিসত্বর রেলের নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে রেলে ডাকাতি, বগিতে অগ্নিসংযোগসহ নাশকতা ঘটানোর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। ১৫ মার্চ ২০১২, বৃহস্পতিবার, সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে উক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, নাসফের সভাপতি ও পবার সম্পাদক হাফিজুর রহমান ময়না, ডাব্লিউবিবির পরিচালক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, ন্যাশনাল এডভোকেসি অফিসার মারুফ রহমান, পীসের মহাসচিব ইফমা হোসেন। 
সংবাদ সম্মেলণ থেকে জনানো হয়, বিগত দিনের তুলনায় বর্তমান সময়ে রেলের বিভিন্ন সেক্টরে যন্ত্রপাতি, সরঞ্জামাদি চুরি ও দূর্ঘটনাসহ বিভিন্ন ধরনের অপতৎপরতা বেড়ে গেছে। এ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। রেলে দূঘর্টনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং দূর্ঘটনার হ্রাসের লক্ষ্যে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা জরুরি। কিন্তু দূঃখজনক ও বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে একটি চক্রান্তকারী মহল রেলের দূর্ঘটনাকে দায়িত্ব অবহেলা বা বিরাট সমস্যা হিসেবে বিভ্রান্তি ছাড়াচ্ছে।  রেলের নিজস্ব একটি মন্ত্রণালয় পেলেও রেলের পথ এখনো সুগম নয়। ঋণপ্রদানকারী ও তাদের দেশীয় সহচরের পরামর্শের কারণে রেলের আজ এই দৈন্য অবস্থা। কিন্তু এ ব্যক্তিগুলো এখনোর সক্রিয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে তথ্যে দেখা যায় ঋণপ্রদানকারী সংস্থা এবং দেশিয় কতিপয় পরামর্শকরা রেলকে লাভজনক করতে বেসরকারি করা প্রয়োজন বলে কর্মপ্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। রেল একটি রাষ্ট্রীয় যোগাযোগ নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানের যে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতায় ভুক্তভোগী হবে সারা দেশের মানুষ। 

আমাদের সুপারিশসমূহ:
১.    রেলকে অকার্যকর করতে নাশকতা কিনা তা গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত করা 
২.    ময়মনসিংহসহ সারাদেশে রেলে ডাকাতি এবং বগিতে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর ও কোন ধরনের সন্দেহজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।
৩.    অতিসত্বর রেলের নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ (লোকবল বৃদ্ধি, নিরাপত্তা ও কারিগরি উপকরন, পর্যাপ্ত রেলওয়ে পুলিশ, প্রশিক্ষন) গ্রহণ করা।
৪.    রেল বিভাগ কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অবিলম্বে প্রকাশ করা।
৫.    ট্রেন চলাচলের সাথে জড়িত পথগুলো অত্যাবশকীয় জরুরি সার্ভিস হিসেবে চিহ্নিত করে, এই সার্ভিসের লোকদের কর্তব্যরত অবস্থায় পোষাক পরিধান নিশ্চিত, মনিটরিং ও সুপারভিশন জরুরি।
৬.    টিকেটে যাত্রীর নাম পরিচয় রাখার বিধান বাধ্যতামূলক করা।
৭.    স্টেশন ব্যতীত রেলগাড়ি না থামানো এবং দরজা না খোলা।
৮.    রাতের বেলায় বগিতে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা এবং নিরাপত্তা বাহিনির সদস্যের উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
৯.    রেলের কর্মীদের মনোবল ও প্রেরণা বৃদ্ধিতে পরিকল্পনা গ্রহণ করা।
১০.    দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা চিহ্নিত এবং সেখানে নিরাপত্তা রক্ষীর ব্যবস্থা করা।