জলাধার ভরাট করে আবাসিক এলাকায় শিল্প স্থাপন বন্ধ কর

সাভারের হেমায়েতপুর আবাসিক এলাকায় হলমার্ক গ্র“প অবৈধভাবে পুকুর, লেক ও চলাচলের রাস্তা দখল-ভরাট করে শিল্পকারখানা স্থাপন করছে। এ পরিবেশ বৈরি কার্যক্রম চার মাসের জন্য বন্ধ রাখতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিলেও হলমার্ক গ্র“প পুরোদমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এবং আবাসিক এলাকার ভূমি মালিকদের নানাভাবে হয়রানি করে যাচ্ছে। ভূমি জবর দখল করে আবাসিক এলাকায় শিল্প স্থাপনের নামে পরিবেশ বিধ্বংসী তৎপরতা রুখতে হবে এবং প্রচলিত আইন লংঘনের দায়ে হলমার্ক গ্র“পের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। আজ ০৬ আগস্ট ২০১২, সোমবার, সকাল ১১:০০ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহবাগস্থ চারুকলা ইনস্টিটিউটের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন পবা’র উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে উক্ত দাবী জানানো হয়।

পবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন নাসফের সভাপতি ও পবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান ময়না, পবা’র কো-অর্ডিনেটর আতিক মোর্শেদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সেরাজুল ইসলাম, পীসের মহাসচিব ইফমা হোসাইন, নাসফের সাধারণ সম্পাদক ইশরাত জাহান, বাপার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মফিদুল হক খান। উপস্থিত ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন অলিজা হাসান, বাবর হোসেন, মো: হাসান মাসুদ, মো:আবুল হাশেম, নুরুল আমিন খোকা।

হলমার্ক গ্র“প দেশের প্রচলিত আইন, ঢাকা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান লংঘন করে গরীব মানুষের জমি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁক-কাম-সড়কের জমি দখল করে একটি তথাকথিত ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক নির্মাণের অশুভ ও পরিবেশ বিনাসী অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে। পরিবেশগত ছাড়পত্র ব্যতিরেকে হলমার্ক গ্র“প শিল্প প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করতে থাকলে পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্ট এন্ড মনিটরিং টিম গত ১১ অক্টোবর, ২০১১ পাঁচ লক্ষ টাকা এবং ৩ মে ২০১২ চল্লিশ লক্ষ টাকা জরিমানা করে এবং কোম্পানী কর্তৃক ভরাটকৃত বালি/মাটি ভরাট কাজে ব্যবহৃত ড্রেজার পাইপ লাইন প্রভৃতি ঐ স্থান হতে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়। এনফোর্সমেন্ট এন্ড মনিটরিং টিমের এই আইনানুগ ও যথাযথ পদক্ষেপকে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের আপীলেট কর্তৃপক্ষ যুক্তিসংগত আইনী কারণ ছাড়া অবৈধ ভাবে জরিমানার পরিমান চল্লিশ লক্ষ টাকা হতে কমিয়ে চার লক্ষ টাকা ধার্য করে। হলমার্ক গ্র“প পরিবেশ বিধ্বংসী তৎপরতা অব্যাহত রাখলে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন আদালতের শরনাপন্ন হয় এবং হাইকোর্ট একটি রীট পিটিশন করতে বাধ্য হয়। মহামান্য আদালত পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের আবেদনে সন্তুষ্ট হয়ে স্থগিতাদেশ জারী করে। 

অলিজা হাসান জানান, পরিবেশ অধিদপ্তর হলমার্ককে প্রথমে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করে উক্ত সময়ের মধ্যে হলমার্ক তার অবৈধ স্থাপনা অপসারণ না করায় পরবর্তীতে আবার ৪০ লক্ষ টাকা জরিমান করে। হাইকোর্টও কেবল স্থগিতাদেশ দিয়েছে। জবরদস্তি করে অপরের জমি দখল করে শিল্প স্থাপনের বিরুদ্ধে এভাবে কেবল জরিমানা এবং কঠোর পদক্ষেপের বিপরীতে দীর্ঘসূত্রীতা চলতে থাকলে অন্যান্য ভূমিদস্যুরাও উৎসাহিত হবে। 
আমাদের দাবী-
১.    ভূমি জবর দখল করে আবাসিক এলাকয় শিল্প স্থাপনের নামে পরিবেশ বিধ্বংসী তৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
২.    প্রচলিত আইন লংঘনের দায়ে হলমার্ক গ্র“পকে দন্ড প্রদান করতে হবে।
৩.    দন্ড হ্রাসকারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৪.    হেমায়েতপুর-সিংগাইর-মানিকগঞ্জ সড়কের নিকটবর্তী স্থানে হলমার্কের নির্মিত সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে। 
৫.    পানি উন্নয়নর বোর্ডের বাঁধ-কাম-সড়ক রক্ষা করে মানুষকে জলাবদ্ধতার হাত হতে মুক্ত করতে হবে।