আবাসিক এলাকায় ভূমি জবর দখল করে শিল্প স্থাপন বন্ধ কর

আবাসিক এলাকায় ভূমি জবর দখল করে শিল্প স্থাপন বন্ধ কর
সাভারের হেমায়েতপুরে জনতা হাউজিং আবাসিক এলাকায় হলমার্ক গ্র“প কর্তৃক অবৈধভাবে পুকুর, লেক ও চলাচলের রাস্তা দখল-ভরাট করে শিল্প কারখানা স্থাপন করছে।  প্লট মালিকদের সীমানা দেয়াল বাড়িঘর ও অন্যান্য স্থাপনা ভাংচুর এবং প্লটে বসবাসরত ভাড়াটিয়াদের জোর পূর্বক উচ্ছেদ করে কারখানাসহ বৃহৎ গরুর খামার গড়ে তুলতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এই ভূমিদস্যুরা। অবিলম্বে এই দখলযজ্ঞ বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া দরকার। ০৯ মে ২০১২, সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা এবং জনতা হাউজিং পরিবেশ রক্ষা ফোরামের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে উক্ত অভিমত জানানো হয়। 

উক্ত প্রেস কনফারেন্সে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান কার্যকরী কমিটির সদস্য মহিদুল হক খান। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জনতা হাউজিং পরিবেশ রক্ষা ফোরামের সক্রিয় সদস্য উইং কমান্ডার মো: হাসান মাসুদ খান। উপস্থিত ছিলেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, পবার সম্পাদক হাফিজুর রহমান ময়না, পীসের মহাসচিব ইফমা হোসাইন, জনতা হাউজিং পরিবেশ রক্ষা ফোরামের সভাপতি অলিজা হাসান, সহ-সভাপতি বদর উদ্দিন আল হাসান, সাধারণ সম্পাদক রেফাতুল আলম, সহকারী ট্রেজারার আজাদ প্রমুখ। 

সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়-প্রায় সোয়া ছয়শত বিঘা জমির উপর অবস্থিত জনতা হাউজিং লিমিটেড  হাউজিং এর নকশা বা লেআউট প্ল্যান অনুসারে ৩, ৫ ও ৮ কাঠার ২১৮৪ টি প্লট বিভিন্ন পেশার লোকজনের কাছে বিক্রি করে। তারা প্রায় ৩০ বছর যাবত স্ব স্ব প্লট নির্বিঘেœ ভোগ দখল করে আসছে।  সম্প্রতি প্রকল্প এলাকায় হল মার্ক গ্রুপের ভূমিদস্যুরা কয়েকটি প্লট কিনে এবং বহু প্লট জোর জবর দখল করে আবাসিক এলাকাটিতে শিল্প কারখানা স্থাপনের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। সেই সাথে ভয় ভীতি দেখিয়ে অনেক প্লট মালিকের জমি দখল করে বৃহৎ গরুর খামার করছে। বিভিন্নভাবে হয়রানি শুরু করেছে।  চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছে, জীবনের হুমকি দিচ্ছে, প্লট মালিককে বাধ্য করছে প্লট বিক্রি করতে। প্লট মালিকদের সীমানা প্রাচীর, নির্মিত বা নির্মিতব্য বাড়িঘর ভেঙ্গে দিচ্ছে। ধলেশ্বরী নদী থেকে বেআইনীভাবে ৮ টি ড্রেজার দিয়ে জনতা হাউজিং এর সকল লেক, পুকুর ও জলাশয় বালু দিয়ে ভরাট করেছে। যা পরিবেশ আইন ১৯৯৫, পরিবেশ নীতিমালা, বেঙ্গল ক্যানেল এ্যাক্ট ১৮৬৪, মহানগরী, বিভাগীয় শহর ও জেলা শহরের পৌর এলাকাসহ দেশের সকল পৌর এলাকার খেলার মাঠ, উন্মুক্ত স্থান, উদ্যান এবং প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০ এর সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির জোরালো ভূমিকার অভাবে হলমার্ক গ্র“প দিনে দিনে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তবে পরিবেশ অধিদপ্তর ইদানিং হলমার্কের এই পরিবেশ বৈরি কার্যকলাপ বন্ধে বেশ তৎপর হয়েছে। ৩ মে ২০১২ তারিখে গ্র“পটিকে ৪০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে। এবং জনতা হাউজিং এর অভ্যন্তরে তাদের সকল কার্যকলাপ ০৬ মে ১২ তারিখের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। সেখান থেকে তাদের সকল সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি ঐ তারিখের আগেই সরিয়ে ফেলার আদেশ দিয়েছে। কিন্তু তারা তাদের কোন কর্মকান্ডই বন্ধ রাখে নাই। 

একটি প্রভাবশালী মহলের যোগ সাজসে হলমার্ক গ্র“প জনতা হাউজিং এ যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, তা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করছে। এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির উপর থেকে মানুষের আস্থা গুড়িয়ে দিচ্ছে। অবিলম্বে আবাসিক এলাকায় শিল্প কারখানা স্থাপন ও সাধারণ মানুষের উপর হয়রানি বন্ধ করা হোক। এবং দায়ীদের শাস্তির আওতায় এনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হোক যাতে আর কেউ এমন ধৃষ্টতা দেখাতে না পারে।