ভ’মিদস্যু রূপে নয় রাজউককে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পরিকল্পনার প্রণয়ন ও তদারকের ভ’মিকায়

রাজধানীর উন্নয়নে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়ন মনিটরিং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর প্রধান কাজ হলেও মূল আদর্শ বিচ্যুত হয়ে রাজউক নিজেই উন্নয়ন বাস্তবায়নে নেমেছে। ফলে নতুন শহর গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের নামে রাজউক বিশাল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সমতালে চলছে জলাধার ভরাট, বন ধ্বংস, ভ’মি দখলসহ নানা পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যক্রম। আর তার এ এজেন্ডা বহির্ভূত কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে একটি অসাধু চক্র গড়ে উঠেছে, যারা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে। এর উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- নারায়নগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় গত ৩৩ বছরে স্থানীয় এলাকাবাসী নিজেদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিনিয়োগ, মেধা আর শ্রমের মাধ্যমে তিলেতিলে গড়ে তুলেছে হাজারো প্রজাতির গাছ-গাছালি পরিপূর্ণ লেক, টিলার অরণ্যে গড়া জিন্দা পার্কটি দখল করে ধ্বংসের পায়তারা। ভ’মিদস্যুতা রাজউকের কাজ নয়। আমরা রাজউককে রাজউকের সত্যিকার ভ’মিকায় দেখতে চাই। আমরা চাই রাজধানী উন্নয়নে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কার্যক্রম মনিটরিং করে রাজউক আমাদেরকে একটি পরিকল্পিত নগর উপহার দিবে। আজ ০৩ মার্চ ২০১৪, সোমবার বিকাল ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবি, রাজনৈতিক এবং পরিবেশবাদী সংগঠনসমূহের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে উক্ত দাবী জানানো হয়। 

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জিন্দা পার্কের কার্যক্রম পরিচালিত হয় গণতান্ত্রিক বিশেষ ব্যবস্থায়। বৃক্ষরোপনে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরষ্কারপ্রাপ্ত স্বপ্ন সাধনা ও ত্যাগের মহিমায় উজ্জ্বল এই পার্কে ২৫০ প্রজাতির ১০ হাজারেরও অধিক বৃক্ষ রোপন করা হয়েছে। পরিবেশসম্মত ও সম্পূর্ণ নিজস্ব প্রযুক্তিতে গড়ে উঠা পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে এসব মানুষ তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে। সমাজের বিত্তবান ও সুবিধাভোগীদের আবাসিক প্লট প্রদানের জন্য দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত জনগণের ভিটেমাটি অধিগ্রহণ করে রাজউক পূর্বাচল উপশহর গড়ে তোলে। রাজউকের এধরনের গণবিরোধী কর্মকান্ডের ফলে ভিটেমাটি হারা অনেক মানুষ আজ নিঃস্ব । পার্ক, মাঠ, জলাশয়, নি¤œাঞ্চল রক্ষায় রাজউক ইতোপূর্বে কোন ইতিবাচক দৃষ্টান্ত রাখতে সক্ষম হয়নি। পার্কটির মালিকানা রাজউকের থাকলেও আমরা চাই যাদের শ্রম ও আন্তরিকতায় আজকের এই জিন্দা পার্ক তাদের হাতেই এর ব্যবস্থাপনা থাকুক। মূল উদ্যোক্তাদের অপসারণ করা হলে পার্কটির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ব্যাহত হবে এবং প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশ ব্যবস্থা সমৃদ্ধ পার্ক ধ্বংস হয়ে যাবে। বিনোদন ও জ্ঞান আহরণের বিপরীতে পার্কটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। পূর্বাচল প্রকল্পে ভিটেমাটি হারা অনেক মানুষের জীবন জীবিকা ব্যাহত হবে। 
[
ভ’মিদস্যুতা রাজউকের কাজ নয়। আমরা রাজউককে রাজউকের সত্যিকার ভ’মিকায় দেখতে চাই। আমরা চাই রাজধানী উন্নয়নে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত সকল প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কার্যক্রম মনিটরিং করে রাজউক আমাদেরকে একটি পরিকল্পিত নগর উপহার দিবে। 

ঐক্যন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্রাচার্য্যের সভাপতিত্বে মানববন্ধন জনসমাবেশে রুপ নেয়। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন নাগরিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ এতে বক্তব্য রাখেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, বাংলাদেশ পরিবেশ  আইনজীবি সমিতির নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-র যুগ্ম-সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর ঐক্য ন্যাপ এর সদস্য সচিব প্রকৌশলী সাহবুদ্দিন আহমেদ, ঐক্য ন্যাপ এর যুগ্ম সম্পাদক হারুন অর রশিদ ভ’ইয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কাস পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য মাহমুদুল হাসান মানিক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য রহিন হোসেন প্রিন্স, সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মাহবুব আলম, নাসফ এর সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না, পবার সম্পাদক শামীম খান টিটো প্রমুখ।