সমৃদ্ধ দেশ গঠনে ঐতিহাসিক স্থাপনা, পুরাকীর্তি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ জরুরী

সমৃদ্ধ দেশ গঠনে ঐতিহাসিক স্থাপনা, পুরাকীর্তি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ জরুরী

গত ০৪ জুন ২০১০ শুক্রবার, সকাল ১০:৩০ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ’র উদ্যোগে ‘‘ঐতিহাসিক স্থাপনা, পুরাকীর্তি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণঃ আমাদের করণীয়’’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. আবু সাঈদ এম আহমেদ, চেয়ারম্যান, স্থাপত্য বিভাগ, এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়।

আলোচকবৃন্দ বলেন, সুপ্রাচীন সভ্যতার ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ আমাদের দেশ ও জাতি। যার প্রত্যক্ষ ইতিহাস ধারন করছে সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা প্রাচীন স্থাপত্য ও প্রতœসম্পদ। ঔপনিবেশিক আমল থেকে অবহেলার কারণে ধ্বংশ বা পাচার হয়ে যাচ্ছে আমাদের এই মহামূল্য সম্পদ। এ বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপও নিতান্ত অপ্রতুল। এ অবস্থায় প্রাচীন ঐতিহ্য ও প্রতœসম্পদ সংরক্ষণের জন্য একটি বাস্তবধর্মী নীতিমালা, টেকসই আইনী ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মাধ্যমে জরুরী ও দীর্ঘ মেয়াদী  পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা পেশ করা প্রয়োজন। এ সকল আলোচনার প্রেক্ষিতে সেমিনারে সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয় যে, প্রাচীন ঐতিহ্যসমূহ সঠিকভাবে সংরক্ষণ করার জন্য ‘‘বাংলাদেশ হেরিটেজ কমিশন’’ নামে একটি স্বাধীন ঐতিহ্য রক্ষাকারী কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। 

অধ্যাপক স্থপতি সামসুল ওয়ারেস এর সভাপতিত্বে সেমিনারে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, ড. এ. এম. এম. সফিউল্লাহ্, উপাচার্য, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়; শেখ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, আহবায়ক, তেল গ্যাস বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি; আবু নাসের খান, চেয়ারম্যান, পবা; ড. শামসুজ্জামান খান, মহাপরিচালক, বাংলা একাডেমী; অধ্যাপক শিল্পী হাশেম খান; অধ্যাপক ড. পারভীন হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; স্থপতি রবিউল হুসাইন; অধ্যাপক শাহেদা রহমান, প্রধান, স্থাপত্য বিভাগ, বুয়েট; ড. শহিদুল আলম, পরিচালক, দৃক গ্যালারী; বিশিষ্ট প্রতœতত্ত্ববিদ মোহাম্মদ জাকারিয়া; অধ্যাপক এ কে এম শাহ্ নাওয়াজ, প্রতœতত্ত্ব বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; স্থপতি লুভা নাহিদ চৌধুরী, মহাপরিচালক, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞবৃন্দ। 

ড. এ. এম.এম. সফিউল্লাহ বলেন, ঐতিহ্য সংরক্ষণ আমাদের দায়িত্ব। এর সাথে আমাদের গভীর সম্পৃক্ততা রয়েছে। ঐতিহ্য বলে দেয় আমরা কোথায় ছিলাম, কিভাবে এ অবস্থায় এসেছি। তিনি একটি কমিশন গঠনের সাথে সাথে কমিশনে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত রাখার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেন।  

শেখ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, অতীতকালে বুর্জোয়া শ্রেণী ঐতিহ্য সংরক্ষণে যতœশীল ছিল। বর্তমানের বুর্জোয়ারা ঐহিত্য ধ্বংসে সবচেয়ে এগিয়ে। এদেরকে ঠেকাতে হবে। তিনি আরও বলেন, ঐতিহ্য সংরক্ষণে বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন কমিশন গঠনসহ সচেতনতার মাধ্যমে গণজাগরণ তৈরি করতে হবে।