বাংলাদেশে প্রথম প্রজাপতি প্রদর্শনী

২২ এপ্রিল ২০১০ বিকাল ০৪:৩০ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বাংলাদেশের প্রথম প্রজাপতি প্রদর্শনী উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথি বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী ড. হাসান মাহ্মুদ বলেন, জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব নিরূপনে জীববৈচিত্র নির্দেশক হিসেবে প্রজাপতির ভূমিকা আজ সর্বজন স্বীকৃত। পৃথিবীর অনেক দেশেই আজ প্রজাপতির পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। সেসব পার্কে প্রজাপতির জীবনযাত্রার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে জীবন্ত অবস্থায় সংরক্ষণ করা হচ্ছে অসংখ্য প্রজাতির প্রজাপতি। যা দেখতে প্রতিনিয়ত ভীড় জমাচ্ছে দেশ বিদেশের হাজার হাজার দর্শনার্থী পর্যটক এবং দেশের অর্থনীতিতে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। আমরা আমাদের দেশে আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে বিকল্প আয়ের উৎস হিসেবে প্রজাপতি লালন ও সংরক্ষণ এবং উৎপাদিত প্রজাপতির বহুবিধ ব্যবহার ও অপ্রচলিত পণ্য হিসেবে রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ ও বেকারত্ব দূর করতে পারি। সরকার বিষয়টি বিশেষ বিবেচনা হিসেবে দেখবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের আওতাধীন ইবিবিএল  ও পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলন (পবা) যৌথভাবে আজ বাংলাদেশে প্রথম প্রজাপতি প্রদর্শনীর আয়োজন করে। 

পরিবেশ বাচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন, পবার সাধারণ সম্পাদক কামাল পাশা চৌধুরী। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢা.বি.র উপাচার্য ড. আ.আ.ম.স. আরেফিন সিদ্দিকী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢা.বি.’র প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষক ড. এম. এ. বাশার, অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, ড. হারুন-অর-রশিদ। সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান সরকার, পবার সাগিরুজ্জআমান শাকিক, লুৎফুল কবির সুমন, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের আমিনুর রসুল প্রমুখ। 

প্রদর্শনীতে পরিবেশ বাচাঁও আন্দোলন পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, প্রকৃতির দৃষ্টিনন্দন প্রাণিদের মাঝে প্রজাপতি অনন্য। কিন্তু শুধু সৌন্দর্য ও বর্ণিল রঙের বাহারে মানুষকে মুগ্ধ করা ছাড়াও পরিবেশের জীববৈচিত্র্য অক্ষুন্ন রাখা ও প্রাকৃতিক জৈব সম্পদ সংরক্ষণের অন্যতম উপকরণ হিসেবেও প্রজাপতির গুরুত্ব অপরিসীম। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক  ড. এম. এ. বাশারের স্বাগত বক্তৃতায় বলেন, আমাদের দেশেও প্রায় দুই শতাধিক প্রজাতির প্রজাপতি রয়েছে যা দেশের অমূল্য সম্পদ। জীববৈচিত্র রক্ষায় বর্তমানে প্রজাপতি পার্ক এবং গবেষণা প্রয়োজন। বাংলাদেশে  ২০ জন গবেষক ১৯৯৯ সাল থেকে দীর্ঘ ১১ বছর নিরলস পরিশ্রম করে দেশের প্রত্যন্ত বনাঞ্চল থেকে সংগ্রহ করেছেন ৭ টি গোত্রের প্রায় ১৮০ টি প্রজাতির প্রজাপতি এবং অসংখ্য আলোকচিত্র। আমরা আমাদের ইকোটরিজম শিল্পকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য প্রজাপতি পার্ক গড়ে তোলতে পারি।

৩ দিন ব্যাপী এই প্রদর্শনী ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০:০০ থেকে ০৭:৩০ পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত ছিল।