পুরানো কারাগারের স্থানে বাণিজ্যিক ভবন নয়, ঐতিহাসিক স্থাপনা সংরক্ষণসহ
পুরানো কারাগারের স্থানে বাণিজ্যিক ভবন নয়, ঐতিহাসিক স্থাপনা সংরক্ষণসহ 
খেলার মাঠ, পার্ক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাই
 
নাজিমুদ্দিন রোড়স্থ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার দেশের প্রাচীনতম এবং সর্ববৃহৎ কারাগার। ঐতিহাসিক এই কারাগার থেকে বন্দীদের কেরাণীগঞ্জে নবনির্মিত কারাগারে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। স্থানান্তর পরবর্তী এই জায়গা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের চেষ্টা চলছে। ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ঐতিহ্য সম্মুন্নত রেখে পরিত্যক্ত জায়গা ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকার মানুষের জন্য খেলার মাঠ, শিশুপার্ক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সবুজ বলয় গড়ে পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করা জরুরী। এতদ্বব্যতীত কোন ধরণের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান করা হলে ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকার নাগরিক দূর্ভোগ আরও চরমে উঠবে। পুরান ঢাকাসহ ঢাকা মহানগরীর পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় নিয়ে কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় অবস্থিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান কারা স্মৃতি যাদুঘর ও জাতীয় চার নেতার কারা স্মৃতি যাদুঘর দুটি সংরক্ষণসহ পার্ক, জলাধার, খেলার মাঠ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে একবিংশ শতাব্দির উপযোগী সবুজ বলয় গড়ে তোলা হোক। ০১ আগস্ট ২০১৬, সোমবার, সকাল ১১টায় শাহবাগস্থ চারুকলা অনুষদের সামনে পরিবেশবাদী ও সামাজিক ১৩ টি সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ উক্ত দাবী জানান। 
 
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পবার সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য এডভোকেট হাসান তারিক চৌধুরী, সমন্বয়কারী আতিক মোরশেদ, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি রাজিয়া সামাদ, পল্লীমা গ্রীণের সদস্য সচিব আনিসুল হোসেন তারেক, নাসফের হাজারীবাগ শাখার সহ-সভাপতি জি এম রুস্তম খান, মডার্ণ ক্লাবের সভাপতি আবুল হাসনাত, পবার সহ-সম্পাদক মো: সেলিম, গ্রীণ এনভায়রনমুভমেন্টের সভাপতি মঞ্জুর হাসান চৌধুরী, বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার সংস্থার সভাপতি মো: বাবুল, সুবন্ধন সমাজ কল্যাণ সংগঠনের সভাপতি হাবিবুর রহমান, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, ইয়থ সানের সদস্য এরশাদ আলম নুমান প্রমুখ। 
 
বক্তারা বলেন-সর্বসাধারণের ব্যবহার উপযোগী উম্মুক্ত এলাকা জনসাধারণের মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধি করে এবং সকল নাগরিকের স্বাস্থ্য, শান্তি, কল্যাণ ও মঙ্গল নিশ্চিত করে। সেই সাথে বিনিয়োগ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, পরিবেশগত স্থায়িত্ব লালন করে। সু-পরিকল্পিত ও পরিচালিত উম্মুক্ত এলাকা একটি নগরীর বাসযোগ্যতার মূল চালিকা শক্তি। ঢাকা পৃথিবীর জনঘনত্বসম্পন্ন নগরীর একটি। এখানে উম্মুক্ত এলাকা একটি অপরিহার্য ও দুর্লভ সম্পদ।  দ্রুত নগরায়নের সাথে সাথে খোলা জায়গার পরিমাণ ধীরে ধীরে হ্রাস পাচ্ছে। বর্তমানে একটি আদর্শ নগরীর জন্য ২৫% খোলা এলাকা রাখার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ঢাকা স্ট্রাকচার প্লানে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ২০% খোলা এলাকা রাখা হয়েছে (ডিএমডিপি ১৯৯৫)। কিন্তু বাস্তবে এলক্ষ্যে কোন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি। বরং এসব এলাকা সরকারি ও বেসরকারিভাবে দখলের ফলে প্রতিনিয়ত হ্রাস পাচ্ছে। 
 
কেন্দ্রীয় কারাগার এলাকায় অবস্থিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান কারা স্মৃতি যাদুঘর ও জাতীয় চার নেতার কারা স্মৃতি যাদুঘর দুটি সংরক্ষণসহ পার্ক, জলাধার, খেলার মাঠ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে একবিংশ শতাব্দির উপযোগী সবুজ বলয় গড়ে তোলা প্রয়োজন। যা পুরান ঢাকাসহ ঢাকা মহানগরীর পরিবেশ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। একই সাথে নগরবাসীর জনস্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাবে, সামাজিক বন্ধন সুদৃঢ় করবেএবং সামাজিক অস্থিরতা দূরীকরণে সহায়ক ভ’মিকা পালন করবে। 
দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা