জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় পাবলিক টয়লেটের গুরুত্ব অপরিসীম পবা’র সেমিনারে বক্তারা
জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় পাবলিক টয়লেটের গুরুত্ব অপরিসীম
পবা’র সেমিনারে বক্তারা
 
নগর জীবনে পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট থাকলে মানুষের মধ্যে যত্রতত্র মল-মূত্র ত্যাগের সম্ভাবনা কমবে, এতে জনস্বাস্থ্য এবং পরিবেশের উন্নতি ঘটবে। সুতরাং, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় যেমন স্বাস্থ্যকর পাবলিক টয়লেট গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি পরিবেশ রক্ষায়ও পাবলিক টয়লেটের গুরুত্ব অপরিসীম। আজ ২ আগষ্ট, বৃহস্পতিবার, বিকেল সাড়ে ৪টায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে পবা মিলনায়তনে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় পাবলিক টয়লেটের গুরুত্ব ও বর্তমান অবস্থা বিষয়ক এক সেমিনার বক্তারা উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। 
 
গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ফিরোজা সুলতানার সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ড. কাজী মোস্তফা আনোয়ার প্রিন্স। এতে মডারেটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পবার আহ্বায়ক আবু নাসের খান। আলোচনা করেন পীস এর মহাপরিচালক ইফ্মা হোসেন, প্রকৌশলী মোস্তাসিম আহমেদ, ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ এর প্রোগ্রাম অফিসার সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন, ড. জেসমিন আরা সাথী প্রমুখ। ঢাকা শহরের পাবলিক টয়লেটের অবস্থা : একটি সমীক্ষা শীর্ষক এই গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেন পবা’র স্বেচ্ছাসেবক দল এনভায়রনমেন্টাল ওয়াচডগ। 
 
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিদিন আমরা বিভিন্ন প্রয়োজনে ঘর ছেড়ে বাইরে আসি। কয়েক ঘন্টা পরপর প্রত্যেকেরই প্রাকৃতিক কার্য সম্পাদনের প্রয়োজন পড়ে। আমাদের ঢাকা শহরে পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেটের বড়ই অভাব। যেগুলো রয়েছে সেগুলোও ব্যবহার অনুপযোগী। পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট না থাকার কারণে পথচারী মানুষ যেখানে সেখানে প্রস্রাব করছে ফলে পরিবেশ হচ্ছে দূষিত এবং মারাত্বক সব রোগের জীবানু ছড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। 
 
গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়, যে টয়লেটগুলো রয়েছে সেগুলো পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন নয়, স্বাস্থ্যসম্মত নয় এবং কাঙ্খিত স্থানেও নয়। যে কারণে অধিকাংশ মানুষ এসব পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করে না। এছাড়াও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও স্বতন্ত্র প্রবেশপথ না থাকায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নারীরা এসব পাবলিক টয়লেট এড়িয়ে চলেন। গবেষণায় ৯২ ভাগ বলেছেন, ঢাকায় পাবলিক টয়লেট আরো বৃদ্ধি করা দরকার এবং ৯৮ ভাগ বলেছেন, পাবলিক টয়লেট পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া প্রয়োজন। 
এছাড়া জরিপে অংশগ্রহণকারীরা বলেছেন, নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর এবং সহজে চোখে পড়ে এমন স্থানে অর্থাৎ বাস টার্মিনাল, রেল স্টেশন, লঞ্চঘাট, পার্ক, বাজার, হাসপাতালের পাশে, প্রধান সড়কের পাশে, সভাস্থলসহ জনসমাগমপূর্ণ স্থানে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ করা দরকার।
 
বক্তারা বলেন, নগর জীবনে পাবলিক টয়লেটের গুরুত্ব অস্বীকার করার উপায় নেই। সুতরাং নগরীকে আধুনিক করতে হলে অবশ্যই পাবলিক টয়লেটের উন্নয়ন, সুষ্ঠু রক্ষণাবেক্ষণের দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। একইসঙ্গে জনগণকে উন্মুক্ত স্থানে মল-মূত্র ত্যাগের পরিবর্তে পাবলিক টয়লেট ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করে তুলতে গণমাধ্যমকেও এগিয়ে আসতে হবে। 
 
পবার আহবায়ক আবু নাসের খান বলেন, আমরা পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করি। কিন্তু কখনোই পাবলিক টয়লেট প্রসঙ্গটি পরিবেশদের আলোচনায় উঠে আসেনি। আশা করি, সংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে সচেতন হবেন। পাবলিক টয়লেটের গুরুত্ব অনুধাবন করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।