নগরে গাড়ীর হর্ণের কারণে শব্দদূষণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। গাড়ীর উচ্চ হর্ণ বন্ধে অনতিবিলম্বে পরিবেশ অধিদপ্তর, বিআরটিএ এবং ট্রাফিক বিভাগের সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি। আজ আন্তর্জাতিক শব্দসচেতনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে “সুস্বাস্থ্যের জন্য শ্রবণশক্তি রক্ষা করুন” শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচীতে যানবাহনে উচ্চশব্দের হর্ণ বন্ধসহ শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের দাবিতে ২৫ এপ্রিল ২০১২, সকাল ১১টায় শাহবাগস্থ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর যৌথ উদ্যোগে অবস্থান কর্মসূচীতে বক্তারা উপরোক্ত দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, উচ্চশব্দের কারণে মানুষের মাথা ব্যথা, ঘুমের ব্যাঘাত, মেজাজ নিয়ন্ত্রণহীন হওয়া, কাজে মনসংযোগের ব্যাঘাত ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। যা মানুষের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এছাড়া শব্দদূষণের কারণে মানুষের শ্রবণক্ষমতা কমে যায়। হঠাৎ উচ্চশব্দের কারণে হৃদরোগীদের তাৎক্ষনিক মৃত্যুও হতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশে প্রাইভেট গাড়ির অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণে যানবাহনজনিত শব্দদূষণ মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই যানবাহনেও হর্ণ বন্ধ দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েয়র গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস এর সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, নাগরিক অধিকার সংরক্ষন ফোরাম এর সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর সম্পাদক আসলাম খান, পিস এর উপদেষ্ঠা ড: আব্দুল হাই মজুমদার, মর্ডান ক্লাব এর সভাপতি আবুল হাসনাত, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর কর্মসূচি সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম সুজন প্রমুখ। কর্মসূচী সঞ্চালনা করেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর কো-অর্ডিনেটর আতিক মোর্শেদ।
পরিবেশবিদ আবু নাসের খান বলেন, গাড়ী হর্ণ বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা প্রয়োজন। এছাড়া পরিবেশ আইনের বিদ্যমান ক্ষমতা ট্রাফিক পুলিশকে প্রদান করা হলে পুলিশ সরাসরি হর্ণ বাজানোর জন্য গাড়ীগুলোকে জরিমানা করতে পারে। এছাড়া সাধারণ মানুষ যাতে সরাসরি সহজে শব্দদূষণ বিষয়ে অভিযোগ দাখিল করতে পারে যে বিষয়গুলো নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
রুবায়েত ফেরদৌস বলেন, শব্দদূষণ ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ায় বিঘœ ঘটায়। শিশুদের মানসিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করে। যানবাহনগুলো উচ্চ শব্দের হর্ণ এর ব্যবহার বন্ধে আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি যানবাহনের লাইসেন্স নবায়ন এর ক্ষেত্রে উচ্চশব্দযুক্ত হর্ণ যেসব গাড়িতে রয়েছে তা অপসারণ করে লাইসেন্স প্রদান করার ব্যবস্থা নিতে বিআরটিএকে উদ্যোগ নিতে হবে।
বক্তারা শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা বাস্তবায়নে পরিবেশ অধিদপ্তরের পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ক্ষমতা প্রদান এবং জনগণকে শব্দদূষণ সৃষ্টিকারী গাড়ীর বিরুদ্ধে সার্জেন্ট বা ট্রাফিক পুলিশের নিকট অভিযোগ প্রদানে উৎসাহী করা, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা বাস্তবায়নে প্রত্যেকটি সগকে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা ও বাস্তবায়নে ব্যবস্থা গ্রহণ করা, উচ্চশব্দের হর্ণযুক্ত যানবাহনকে জরিমানা ও শাস্তির আওতায় আনা, গাড়ী চালকদের প্রশিক্ষণ ক্যারিকুলামে শব্দদূষণ এর ক্ষতিকর দিক ও শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা সম্পৃক্ত করা, প্রাইভেট কারসহ যে কোন যানবাহনের লাইসেন্স প্রদান ও নবায়নের সময়ে হর্ণ এর শব্দ পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করে উচ্চশব্দের হর্ণযুক্ত যানবাহনের লাইসেন্স বাতিল করা, মোবাইল কোর্ট এর মাধ্যমে যানবাহনের হর্ণ এর শব্দ পরীক্ষা করার দাবি জানান।