হাওর উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে
সঠিক কর্মকৌশল ও বাজেটে তার প্রতিফলন নিশ্চিত করতে হবে
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৭টি জেলার ১.৯ মিলিয়ন হেক্টর ভূমি নিয়ে হাওর অঞ্চল
গঠিত। এই এলাকায় উপন্ন উদ্বৃত্ত ফসল ও মাছ অন্যান্য অঞ্চলের প্রয়োজন পূরণ করে।
কিন্তু অপরিণামদর্শী উন্নয়ন প্রকল্প ও জন-সচেতনতার অভাবে দিনের পর দিন নষ্ট
হয়ে চলেছে হাওরের চরিত্র, প্রাকৃতিক সম্পদ ও অপার সৌন্দর্য্য। দীর্ঘদিনের দাবি
ও প্রচেষ্টায় হাওরাঞ্চলের জন্য সম্প্রতি একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
২০১২-১৩ থেকে ২০৩১-৩২ অর্থবর্ষ ব্যাপী বাস্তবায়নযোগ্য মহাপরিকল্পনার প্রথম
বর্ষের বাজেটও ইতোমধ্যে পাশ হয়েছে। হাওর উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে
সঠিক কর্মকৌশল ও বাজেটে তার প্রতিফলন নিশ্চিত করতে হবে। ৩০ জুলাই
২০১২, সোমবার, সকাল ১০:৩০ টায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও জনউদ্যোগ
এর যৌথ আয়োজনে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক আলোচনা সভা
থেকে উক্ত অভিমত ব্যক্ত করা হয়।
পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সভায় মূল আলোচনা উপস্থাপন
করেন সেন্টার ফর এনভারনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিস
(সিইজিআইএস)-এর নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী গিয়াসউদ্দীন আহমেদ
চৌধুরী। সভায় উপস্থিত ছিলেন সুনামগঞ্জ সদরের সাংসদ মতিউর রহমান,
জনউদ্যোগের আহবায়ক অধ্যাপক এইচ কে আরেফিন, হাওর উন্নয়ন বোর্ডের
সাবেক মহাপরিচালক মেজর (অব) গোলাম কিবরিয়া বিআইডব্লিউটিএ-র সাবেক
সচিব সৈয়দ মনোয়ার হোসেন, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আবুল কাশেম,
আইইডির নির্বাহী পরিচালক নুমান আহম্মদ খান, জল পরিবেশ ইন্সটিটিউটের
চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ম ইনামুল হক। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ,
জনপ্রতিনিধি, হাওরবাসী ও পরিবেশ রক্ষায় নিবেদিত নাগরিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
গিয়াসউদ্দীন আহমেদ চৌধুরী বলেন, হাওর বিষয়ে বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্নভাবে
কাজ করছে এই আলাদা আলাদা উদ্যোগগুলোর সমন্বয় দরকার। হাওর উন্নয়ন বোর্ড
এই উন্নয়নসমন্বয় মনিটরিং করতে পারে।
আবু নাসের খান বলেন, হাওরের উন্নয়ন ভাবনায় ইকোসিস্টেমের দিকটি বিশেষ
গুরুত্ব দিতে হবে। শুধু কাঠামোগত উন্নয়ন নয় হাওরের প্রকৃতিকে বুঝে,
প্রাধান্য নির্ধারন করে মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী হাওর উন্নয়নে কাজ করতে হবে।
বক্তারা বলেন, সাতটি জেলার ৩৭৩ টি হাওরের প্রায় দুই কোটি মানুষ অন্যান্য
অঞ্চলের মানুষ তুলনায় দরিদ্র কিন্তু সম্পদে সমৃদ্ধ। যে মহাপরিকল্পনা হাওর উন্নয়নে
করা হয়েছে তার যথাযথ বাস্তবায়নে যেমন দারিদ্র দূর হবে তেমনি অর্থনৈতিক
প্রবৃদ্ধিতে তা?পর্যপুর্ণ অবদান সৃষ্টি হবে। সময়ের প্রয়োজন অনুযায়ী
মহাপরিকল্পনার আপডেট করতে হবে। হাওরবাসীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে এই
মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়নে। সেই সাথে হাওর উন্নয়ন বোর্ডকে শক্তিশালী করা দরকার,
আইনের মাধ্যমে হাওর উন্নয়ন বোর্ডকে প্রতিষ্ঠিত করা দরকার। বিপুল সম্ভাবনার
দিকটি বিবেচনায় হাওর বিষয়ে আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করা দরকার।