খুলে দাও হাওরের বুকÑবাংলাদেশ দেখবে মুখ
খুলে দাও হাওরের বুকÑবাংলাদেশ দেখবে মুখ
পবা’র আয়োজনে জাতীয় হাওর উৎসব উদযাপন কমিটি’র সংবাদ সম্মেলন
 
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর আয়োজনে জাতীয় হাওর উৎসব উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে আজ ২০ আগস্ট ২০০৮ দুপুর ২:০০ টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলন এর আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে বক্তব্য পেশ করেন জাতীয় হাওর উৎসব উদযাপন কমিটির উপদেষ্টা বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাইদ, আহবায়ক পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সদস্য সচিব কামাল পাশা চৌধরী, সমন্বয়কারী আতিকুর রহমান খান প্রমুখ। 
 
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাঈদ সহ বক্তারা জাতীয় হাওর উৎসব এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। বক্তারা বলেন- পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক কারণে হাওর দেশের এক অনন্য সম্পদ তবে নানা ধরণের প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট সমস্যার কারণে হাওর আজ বিপন্ন এবং ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এই হাওরকে রক্ষা করতে হবে আর সে জন্য জাগাতে হবে হাওরের মানুষকে। এই উৎসব শুধু অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হবে না, উৎসবে নানা ধরণের আলোচনায় হাওরের যে সমস্যাগুলি চিহ্নিত হবে তা পরবর্তীতে একটি স্থায়ী কমিটি গঠন করে একটি দাবিনামা সরকারের কাছে পেশ করা হবে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য ক্রমাগত তাগাদা অব্যাহত রাখা হবে। 
 
বক্তারা আরো বলেন-হাওরসম্পৃক্ত জেলাসমূহের সমন্বয়ে ও হাওর জনপদের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হবে এই উৎসব। আগামি ২২, ২৩ ও ২৪ আগষ্ট ২০০৮, শুক্র, শনি ও রোববার নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জের ডিঙ্গাপোতা হাওরের পাড়ে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। হাওরের অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত গুরুত্ব অপরিসীম। জাতীয় অথনীতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হাওর। প্রতি বছর গোটা জাতির জন্য যোগান দিচ্ছে বিপুল পরিমাণ বোরো ধান, স্বাদু পানির মাছ, রবিশস্য; অন্যদিকে জারি, সারি, ভাটিয়ালি, বাউল, কিস্সা, গীত, পালা, কীর্তন সহ লোকায়ত শিল্পের এক জীবন্ত জাদুঘর হাওর জনপদ। অথচ এই হাওর আজ বিপন্ন। বিপন্ন হাওরের বৃক্ষ, লতা-গুল্ম, মাছ, জল, পশু, পাখি, সরীসৃপ, কীট-পতঙ্গ, সর্বোপরি মানুষ-তার জীবন ও সংস্কৃতি। তথাকথিত আধুনিকতার আগ্রাসন, রাজনৈতিক অপসংস্কৃতি, প্রসাশনিক অবহেলা, নানা মহলের অর্থলোলুপতা, অসাধুতা, কূপমন্ডুকতা এবং মুর্খতার কারণে দেশের এই অনুপম সম্পদ আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এ অবস্থায় হাওরকে রক্ষা করা আজ সমগ্র জাতির কর্তব্যই শুধু নয়, অলঙ্ঘনীয় দায়িত্ব।