মার্কেট নয় খেলার মাঠ চাই
মার্কেট নয় খেলার মাঠ চাই
 
আবারো মিরপুর ১২ নং এ ব্লকের লাল মাঠটি দখল হচ্ছে। আবারো মাঠ ধ্বংস করে পাকা মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। বিগত দিনে মাঠটি দখলের উপক্রম হওয়ায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও এলাকাবাসীর তিব্র প্রতিবাদ ও আন্দোলনের ফলে মাঠটি রক্ষা হয়েছিল। কিন্তু আবারো পূর্বের ধারাবাহিকতায় মাঠটি ধ্বংস করে মার্কেট নির্মাণ ইতোমধ্যে শুরু করেছে কতিপয় দুস্কৃতকারী ভূমিদস্যুরা। এ মাঠটি এলাকার একমাত্র উন্মুক্ত স্থান ও অসংখ্য শিশু কিশোরদের খেলার জায়গা এবং ঈদের জামাতও এখানে অনুষ্ঠিত হয়। এ মাঠের আশেপাশে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অবস্থিত হওয়ায় স্কুলগুলির বার্ষিক ক্রীড়া অনুষ্ঠান এখানে অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা এখানে কাঁচাবাজার বসিয়ে মাঠটির পশ্চিম পাশ দখল করে রেখেছে এবং তারা সাইনবোর্ড লাগিয়ে স্থায়ীভাবে দখলের পায়তারা চালাচ্ছে। আজ ৩১ অক্টোবর/০৯ সকাল ১১:০০টায় মিরপুর ১২ নং এ ব্লকের লাল মাঠ প্রাঙ্গনে পবা ও বর্ণক সমাজ কল্যাণ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন এর যৌথ উদ্যোগে জনসমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। জনসমাবেশে  আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার ছাত্র/ছাত্রী ও সর্বস্তরের জনসাধারণ হাতে হাত রেখে মাঠটিকে ৩ ঘন্টা যাবত ঘিরে রাখে এবং যে কোন মূল্যে মাঠ রক্ষার শপথ গ্রহণ করে। 
জনসমাবেশে বক্তব্য রাখেনÑ পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, ঢাকা ১৬ নং সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দীন মোল্লা, বর্ণক সমাজ কল্যাণ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন এর সভাপতি মাহমুদ হাসান খাঁন বাবু, সাধারণ সম্পাদক জাফরুল আহসান বাবুল, ভাইস প্রেসিডেন্ট সালাম চৌধুরী, বিশিষ্ঠ লোক সঙ্গীত শিল্পী কুদ্দুস বয়াতী, পবা’র সহ: সম্পাদক তৌফিকুর রহমান সেন্টু, সাবেক জাতীয় ফুটবল খেলোয়াড় ইমতিয়াজ সুলতান জনি, মুসলিম বাজার কমিটি’র সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ সেলিম, অভিনেতা মোঃ মনজুর হোসেন এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ও ছাত্র সংগঠণের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।     
পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেনÑ লাল মাঠটির বেশ কিছু অংশ দখল করে মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে। অবিলম্বে এ মাঠ থেকে মার্কেট উচ্ছেদ করে মাঠের জায়গা মাঠকে ফিরিয়ে দিতে হবে এবং ছেলেমেয়েদের খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। কোন সময় বেধে দিয়ে উচ্ছেদ নয় এখনি মাঠের দখল অংশ মুক্ত করতে হবে এবং দখলদারদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। ঢাকা মহানগরীতে পর্যাপ্ত পরিমাণে খোলা জায়গা ও খেলার মাঠ নেই। যেগুলো আছে তা দুর্নীতিবাজ ভূমিদস্যুরা দখল করছে। ফলে শিশুদের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পাশাপাশি সামাজিক বন্ধন থেকে মানুষ দুরে সরে যাচ্ছে। যা আমাদের সার্বিক পরিবেশের উপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে। 
ঢাকা ১৬ নং সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দীন মোল্লাÑলাল মাঠের জায়গায় কোন প্রকার মার্কেট নির্মাণ বরদাস্ত করা হবেনা। লাল মাঠ রক্ষার দাবীর প্রতি আমি সমর্থন জ্ঞাপন করছি এবং এ মাঠ দখল মুক্ত করতে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আসন্ন ঈদের পরে দখলদারদের স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।
বর্ণক সমাজ কল্যাণ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গন এর সভাপতি-সেক্রেটারী-সহ-সভাপতিগণ বলেনÑ আমাদের এ এলাকার প্রিয় মাঠটি রক্ষার্থে কতিপয় ভূদিস্যুদের প্রতিরোধে যে কোন আন্দোলন ও সংগ্রামের জন্য আমরা প্রস্তুত। 
সাবেক জাতীয় ফুটবল খেলোয়াড় ইমতিয়াজ সুলতান জনি বলেন- এ মাঠের ধুলাবালি আমার জাতীয় ফুটবল খেলোয়াড় হয়ে ওঠায় ভুমিকা রেখেছে তাই এ মাঠ দখল মুক্ত করতে আমার সর্বাত্বক সহযোগিতা থাকবে।  
মিরপুর ১২ নং লাল মাঠটি রক্ষায় এলাকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ক্রীড়া সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন ও এলাকাবাসী এ মাঠ দখলের প্রতিবাদে একাত্বতা প্রকাশ করছে। সাথে সাথে হাজার হাজার কন্ঠের উচ্চারণ “অবিলম্বে এ মাঠ দখলমুক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করুন।