ক্রেতাদের স্বার্থ রক্ষার্থে অসাধূ ডেভেলপারদের চাপের কাছে মাথা নত নয়, “রিয়েল এস্টেট অধ্যাদেশ ২০০৮” কে আইনে পরিনত কর
ক্রেতাদের স্বার্থ রক্ষার্থে অসাধূ ডেভেলপারদের চাপের কাছে মাথা নত নয়,
“রিয়েল এস্টেট অধ্যাদেশ ২০০৮” কে আইনে পরিনত কর
 
ডেভেলপারদের দ্বারা ক্রেতা সাধারণ প্রতারণা বা জালিয়াতির স্বীকার হলে আইনের সহায়তা ও প্রতিকার পেতে সুস্পষ্ট আইনের কোন বিধান ছিলনা। খুব কম নজির আছে অসাধু রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীরা সঠিক সময়ে চুক্তি মোতাবেক নির্ধারিত সময়ে ক্রেতাকে প্লট বা ফ্লাট বুঝিয়ে দেওয়ার। দীর্ঘদিন যাবত ভূমি দস্যুতার মাধ্যমে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে এবং যথাযথ আইনী কাঠামোর অভাবে ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করছে। অসাধু রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীদের প্রতারণামূলক কর্মকান্ডকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং এদেরকে আইনী প্রক্রিয়ার মুখোমুখি করতে ২০০৮ সালের শেষ দিকে “রিয়েলস্টেট অধ্যাদেশ ২০০৮” অধ্যাদেশটি করা হয়। এক ধরণের স্বার্থন্বেষী মহল ডেভেলপারদের স্বার্থ রক্ষার্থে ক্রেতাসাধারণ প্রতারিত হলে সরাসরি আইনের আশ্রয় ও স্বার্থ সুরক্ষার বিষয়টিকে বাদ দেওয়ার জোর চক্রান্ত চালাচ্ছে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী এবং সাংসদদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করছি যেন শুধুমাত্র ডেভেলপারদের স্বার্থ রক্ষা না করে ক্রেতা সাধারণের স্বার্থের প্রতিও সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। 
 
আজ ১৫ ফেব্র“য়ারী সকাল ১১ টায় শাহবাগের জাতীয় যাদু ঘরের সামনে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সিএলএনবি সংগঠনের অংশগ্রহণে আরো উপস্থিত ছিলেন, পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, সিটিজেন রাইটস মুভমেন্টের মহাসচিব তুষার রেহমান, নগরবাসী সংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদক হাজী আনসার আলী ও নাজিম উদ্দীন, সিএলএনবি এর জনাব হারুন, পবা’র প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর কামাল পাশা চৌধুরী, তৌফিকুর রহমান সেন্টু প্রমুখ। 
 
এটি সর্বজনবিদিত যে, অসাধু রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন যাবত ভূমি দস্যুতার মাধ্যমে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে এবং যথাযথ আইনী কাঠামোর অভাবে ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করছে। ২০০৮ সালের শেষ দিকে “রিয়েলস্টেট অধ্যাদেশ ২০০৮” অধ্যাদেশটিতে ক্রেতাসাধারণের স্বার্থ সুরক্ষার বিষয়টি অনেকটা স্পষ্ট এবং প্রতারিত হলে আইনের আশ্রয় নেওয়ার অধিকার মোটামুটি উল্লেখ আছে। অসাধু রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীদের প্রতারণামূলক কর্মকান্ডকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং এদেরকে আইনী প্রক্রিয়ার মুখোমুখি করতে অধ্যাদেশটি প্রাসংগিক ও প্রয়োজনীয়। অধ্যাদেশটিতে শাস্তির বিধান থাকার ফলে অসাধু রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীদের অননুমোদিত কর্মকান্ড দ্বারা জনসাধারণকে প্রতারিত করা ও জনস্বার্থ বিঘিœত করার সুযোগ কমে আসবে। কোন পদ্ধতিগত কারণ দেখিয়ে এ অধ্যাদেশটি আইনে পরিণত করা না হলে তা অসাধু হাউজিং কোম্পানীগুলোর পক্ষেই যাবে এবং বিগত সরকারের শাসন আমলের মত ক্রেতাসাধারণকে প্রতিকারহীন অবস্থার মুখোমুখি করবে যা বর্তমান সরকারের কাছে মোটেও প্রত্যাশিত নয়। 
 
এ অধ্যাদেশ প্রণয়নের সময় রিহ্যাবের মতামত গ্রহণ করা হয়েছে যা বিভিন্ন সময়ে পত্রপত্রিকায় ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। রিহ্যাবের মূল দাবী ছিল শাস্তির বিধান রহিত করা। সংগত কারনেই এ অধ্যাদেশের উদ্দেশ্যকে সমুন্নত রাখতে সে দাবী সম্পূর্ণ গ্রহণ করা সম্ভব ছিল না। তা সত্ত্বেও রিহ্যাবের দাবী বিবেচনা করে জনসম্মুখে প্রকাশিত অধ্যাদেশটির খসড়ায় পরিবর্তন এনে বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে প্রথমে আপোষ ও আরবিট্রেশন এবং সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে মামলা দায়েরের বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করা হয়। রিহ্যাবের দাবী বিবেচনায় এ অধ্যাদেশে বিরোধ নিষ্পত্তি বিষয়ে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে তা অধ্যাদেশের বিভিন্ন খসড়া পর্যালোচনা করলেই স্পষ্ট হয়ে উঠবে। রিহ্যাব এযাবতকাল ভূমি দস্যুতা রোধে বা ক্রেতা স্বার্থ সংরক্ষণে কোন কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করেনি। উপরন্তু এ বিষয়ে সরকারের অবস্থানকে এবং আইনী কাঠামোকে দূর্বল করতে অসাধু প্রয়াসে লিপ্ত থেকেছে।
 
আমরা আশা করি উপরোল্লিখিত বাস্তবতা বিবেচনায় এবং আইনী ধারাবাহিকতা রক্ষায় এ মুহূর্তে রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০০৮-কে আইনে পরিণত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পরবর্তীতে অধ্যাদেশটির সুফল ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিতে বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে আরো কার্যকরী বিধান প্রণয়নের এবং রিহ্যাবের দাবীর প্রেক্ষিতে ক্রেতা কর্তৃক সরাসরি মামলার বিষয়টিকে পাশ কাটিয়ে আরবিট্রেশনের যে বিধান রাখা হয়েছে তা পুর্নবিবেচনার ব্যবস্থা নেয়া হবে। একইসাথে ভূমিদস্যুতা রোধ বিষয়েও বিধান সংযোজন করা অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে।