পরিবেশ ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের উদ্যোগ নিতে হবে

পরিবেশ ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের উদ্যোগ নিতে হবে

জাতীয় উন্নয়ন ‘ধারণা’ যুব সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া অর্জনসাধ্য নয়। বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ যুবক এবং আনুমানিক এদের সংখ্যা প্রায় ৫ কোটি। তরুণদের শক্তি, বুদ্ধিমত্তা, প্রতিভা, অপার সম্ভাবনা সঠিকভাবে বিকাশ ও ব্যবহার করে দেশের পরিবেশ বিপর্যয় রোধ এবং উন্নয়ন করা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় তরুণদের বিকাশের যথাযথ সুযোগ সৃষ্টি। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও বাংলাদেশ সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস এন্ড ডেভেলপমেন্ট (বিসিএইচআরডি)-র যৌথ উদ্যোগে আজ ০৯ এপ্রিল ২০১৩, মঙ্গলবার, বিকাল ৩:৩০ টায় পবার যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে পবা কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা উক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন।


আলোচনায় অংশ নেন ম. আ কাশেম মাসুদ, প্রকল্প পরিচালক, ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসন প্রকল্প, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, আলহাজ মোহাম্মদ ফজলুল হক, চেয়ারম্যান, জাতীয় তরুণ সংঘ, বিসিএইচআরডির নির্বাহী পরিচালক মো: মাহবুল হক, পবার কো-অর্ডিনেটর আতিক মোরশেদ, মডার্ণ ক্লাবের সভাপতি আবুল হাসনাত।


আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক, প্রকৌশলী মো: আবদুস সোবহান। তিনি তার প্রবন্ধে বলেন, জাতীয় উন্নয়নকে একটি দীর্ঘ রিলে দৌড় হিসাবে হৃদয়ঙ্গম করা যেতে পারে। পুরানো প্রজন্ম অপেক্ষারত তরুণ দলের কাছে বেটন পাস করবে। তরুণদের রয়েছে সংঘঠনশীল স্বপ্ন; আবেগ এবং আশা। বাংলাদেশের একটি সমৃদ্ধ ঐতিহাসিক ঐতিহ্য ও শক্তিশালী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং মূল্যবোধ রয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত উন্নয়নশীল। ২০১১-২০১২ অর্থ বছরে মাথাপিছু আয় ছিল ৮৪৮ মার্কিন ডলার। গোল্ডম্যান শ্যাস এর মতে ২১ শতকের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকার  পাশাপাশি বাংলাদেশ, মিসর, ইন্দেনেশিয়া, ইরান, মেক্সিকো, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিফাইন, তুরস্ক, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভিয়েতনাম উচ্চ সম্ভাবনার দেশ হয়ে উঠছে।


তারুণ্য হচ্ছে জীবনের বসন্ত। এটা আবিষ্কার এবং বড় স্বপ্ন দেখার বয়স। প্রগতিশীল তরুণেরা যখন স্বপ্ন দেখে - তারা শুধুমাত্র নিজেদের ভবিষ্যতের জন্য স্বপ্ন দেখে না; জাতি এবং সমগ্র মানবতার উন্নতশীল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে। তারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম  অসম্ভবকে সম্ভব করার প্রচেষ্টা করে এবং তা অর্জন করে। তরুণেরা সুস্পষ্ট কারণে সকল দেশের ভবিষ্যত নেতা এবং তাদের শক্তি, বুদ্ধিমত্তা, প্রতিভা, অপার সম্ভাবনা সঠিকভাবে বিকাশ ও ব্যবহার করা হলে তারা নিজ নিজ দেশের উন্নয়ন ও প্রগতিতে যথাযথ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।


বাংলাদেশ বিশে^র ঘনবসতিপূর্ণ দেশসমূহের মধ্যে অন্যতম । এই বিশাল জনসংখ্যার এক উল্লেখযোগ্য অংশ যুব সমাজ। এই তরুণ হৃদয় ও মনই হবে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের রূপকার। যদি এই বিশাল জনগোষ্ঠী একত্রিত হয় তবে বিশ^ উষ্ণায়ন মোকাবেলার মাধ্যমে এক পরিবেশ বান্ধব প্রজšম তৈরি সম্ভবপর হবে। বাংলাদেশের যুব সমাজের এই শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে এবং প্রধান পরিবেশগত ও উন্নয়ন বিষয়সমূহ সম্পর্কে তাদের সচেতন করে দেশের সার্বিক উন্নয়ন তরান্বিত করা সম্ভব।


আমাদের  নদীগুলোর পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য নদীর তলদেশে জমে থাকা পলি অপসারণ অপরিহার্য।এ পলি অপসারণের জন্য প্রয়োজন ড্রেজিং। দীর্ঘ নদীপথ ড্রেজিং অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং বর্তমানে যে হারে ড্রেজিং হচ্ছে তাতে কোনভাবেই নদীগুলো সজীব ও সচল করা সম্ভব নয়। শুকনো মৌসুমে আমাদের অনেক নদী শুকিয়ে যায় এবং এগুলো দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করে। এ সব নদীগুলো শারিরীকভাবে খনন করা যেতে পারে। আমাদের ডিগ্রী পর্যায় থেকে উচ্চ শিক্ষায় অধ্যয়নরত ২২ লক্ষ শিক্ষার্থ ীকে কাজে লাগানো যেতে পারে। শিক্ষার্থীদের  উদ্ভুদ্ধ করে স্বেচ্ছাশ্রম ভিত্তিতে এবং কাজের বিনিময়ে খাদ্যের  সাহায্যে এ কার্যক্রম হাতে নেয়া যেতে পারে। এতে যুব সমাজের মধ্যে মানসিক ও সামাজিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম জাগ্রত হবে।