উচ্ছেদ উচ্ছেদ খেলা নয় পুণ:রুদ্ধার করে শুভাঢ্যা খাল বাঁচাও

উচ্ছেদ উচ্ছেদ খেলা নয়
পুণ:রুদ্ধার করে শুভাঢ্যা খাল বাঁচাও

শুভাঢ্যা খালসহ  বুড়িগঙ্গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদকৃত স্থানে ময়লা আবর্জনা ফেলে ও ভবন নির্মাণের মাধ্যমে পূণ:দখলের মহোৎসব চলছে। কেরানীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শুভাঢ্যা খালটির অবৈধ দখল উদ্ধার করে কিছুদিন আগে সচল করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে অব্যাহত দখলের মাধ্যমে খালটি আবার বন্ধ হয়ে গেছে। পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এইসব জলাধার রক্ষায় কেবল উচ্ছেদ উচ্ছেদ খেলা নয়, নিয়মিত তদারকি ও আইনের কঠোর বাস্তবায়ন দরকার। আজ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, সকাল ১১ টায় শুভাঢ্যা খালের মুৃখে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং  কেরানীগঞ্জ শপিং ব্যাগ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লি: এর যৌথ উদ্যোগে শুভাঢ্যা খাল বাঁচাও দাবীতে জনসমাবেশ ও নৌ-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উক্ত দাবী জানানো হয়। বাংলাদেশের বরেণ্য লোক সঙ্গীত স¤্রাট কুদ্দুস বয়াতী ও তার দল দখলের প্রতিবাদে গানে গানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন।

পবার নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো: আবদুস সোবহানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সমন্বয়কারী আতিক মোরশেদ, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন,  কেরানীগঞ্জ শপিং ব্যাগ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লি: এর উপদেষ্টা মো: শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, কেরাণীগঞ্জের শুভাঢ্যা খালটি দখল ও ভরাট হতে হতে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল যে গত ছয়-সাত বছর ধরে কোন নৌকা চলাচল করতে পারতো না। ময়লা, আবর্জনার দূর্গন্ধে ঐ স্থানে যাওয়া যেত না। এছাড়া খালের পাড়ে গড়ে উঠেছিল অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন পবাসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন, মিডিয়া ও স্থানীয় এলাকাবাসীর জোরালে দাবীর প্রেক্ষিতে সরকার কেরানীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শুভাঢ্যা খাল উদ্ধার হয়েছিল। উদ্ধার হওয়ার কিছুদিন পরেই ক্রমাগত দখলের মাধ্যমে খালটি আবারও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শুভাঢ্যা খালের ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গা ভরাট করে পাকাপাকি ভাবে মার্কেট নির্মাণ করে ব্যক্তিগত ভাবে দখল করে নিয়েছে ভূমিদস্যুরা। সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে উদ্ধার করা খালগুলো পুনরায় দখল হয়ে যাচ্ছে। সরু বক্্র কালভার্ট নির্মাণ, খালের উপর সড়ক নির্মাণ, খাল দখল করে ভবন নির্মাণসহ বিভিন্নভাবে বন্ধ করা হচ্ছে এ খালগুলো। সেই সাথে পাল্ল¬া দিয়ে ভরাট-দখল করছে খাল পাড়ের স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যু ও স্বার্থান্বেষী মহল। এ সকল দখলদারদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে খালগুলোকে রক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত জরুরী।       

ঢাকা শহরের ভিতরের ও চারপাশের খালগুলো রক্ষা এবং সচল করতে না পারলে আগামী দিনে ঢাকা শহর বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। খাল ও জলাশয় উদ্ধার বা সংস্কার কেবল মহানগরীর পানি ও বর্জ্য চলাচলের জন্যই প্রয়োজন এমন নয়; জলাবদ্ধতা সমস্যা ছাড়াও জলাশয়বিহীন রাজধানী এই জনপদ ও জনজীবনের জন্যই বিপদের কারণ হয়ে উঠবে। দেখা দিবে ভূমিকম্প, ক্ষতিগ্রস্থ হবে জীববৈচিত্র। ভূগর্ভস্থ পানি নিচে নেমে যাওয়া, তাপমাত্রা বৃদ্ধি সহ নানা পরিবেশ সংকটের জন্ম দেবে এবং ইতোমধ্যে সংকট শুরু হয়ে গেছে। যা শুধু পরিবেশ নয় জনজীবন ও অর্থনীতির উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

আমাদের দাবী-
১.    কেরানিগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শুভাঢ্যা খাল পুণ:খনন করা।
২.    খালে বর্জ্য আবর্জনা ফেলা বন্ধ করা।
৩.    বর্ষা মৌসুম আসার আগেই ঢাকার চারপাশের নদীর সাথে যুক্ত খালগুলোর দখল দ্রুত উচ্ছেদ করে সচল করা।
৪.    খালের জায়গায় নতুন করে যাতে কোন স্থাপনা গড়ে উঠতে পারে তার ব্যবস্থা নিতে হবে।