“ধুলা-ধোঁয়ামুক্ত ঢাকা মহানগর চাই”
ঢাকা মহানগর দূষিত নগরের মধ্যে অন্যতম। এর প্রধান কারণ ধুলা-ধোঁয়া দূষণ। ঢাকা মহানগরে সঠিক পরিকল্পনা ও সমন্বয় ছাড়াই গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ সুউচ্চ ইমারাত নির্মাণে বিভিন্ন সেবা দানকারী সংস্থাগুলো কাজ করে যাচ্ছে। ফলে ভৌত অবকাঠামোগত সংস্কার, মেরামত বা নতুন করে স্থাপনার জন্য যত্রতত্র খোঁড়াখুঁড়ি, ইট-পাথর ভাঙা থেকে শুরু করে যত্রতত্র বালি, মাটি রাস্তার পাশেই স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। অন্যদিকে ঢাকায় মাত্রাতিরিক্ত যানবাহনের কালো ধোঁয়াসহ ঢাকার চারপাশে গড়ে উঠা অসংখ্য ইটভাটা ও শিল্পকারখানার কালো ধোঁয়ায় এ মহানগর এখন ধুলা-ধোঁয়ায় ঢাকা। ফলে এর প্রভাব পড়েছে জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির উপর। এসকল নেতিবাচক প্রভাব বিবেচনায় অবিলম্বে ঢাকা মহানগরের ধুলা দূষণ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা অতীব জরুরী। ধুলা-ধোঁয়ামুক্ত শহরের স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারের পাশাপাশি প্রয়োজন জনসচেতনতা বৃদ্ধি। জনউদ্যোগ, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), স্টামফোর্ড বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ ও বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ-এর যৌথ উদ্যোগে আজ ০৪ মে ২০১৮, শুক্রবার, সকাল ০৯.৩০টায়, শাহবাগস্থ জাতীয় জাদুঘরের সামনে “ধুলা-ধোঁয়ামুক্ত ঢাকা মহানগর চাই”-দাবীতে সাইকেল র‌্যালীতে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ ও পরিবেশবাদীরা উক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন। উল্লেখ্য র‌্যালীটি শাহবাগস্থ জাতীয় জাদুঘর থেকে টিএসসি হয়ে পুনঃরায় শাহবাগস্থ জাতীয় জাদুঘরের সামনে সমাপ্ত হয়।
 
সাইকেল র‌্যালীর শুরুতে স্ট্যামফোর্ড বিশ^বিদ্যালয়-এর ভিসি প্রফেসর মো. আলী নকী-র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি  হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)-র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, একুশে পদক প্রাপ্ত নাট্যব্যাক্তিত্ব ড. ইনামুল হক, স্টামফোর্ড বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামন মজুমদার, পবা’র সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ, আই ই ডি-এর নির্বাহী পরিচালক নুমান আহমেদ খান, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি আমিনুল ইসলাম টুব্বুস, দৃকের প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট ফটোগ্রাফার শহীদুল আলম, জনউদ্যোগের আহবায়ক ডা. মুশতাক হোসেন, সদস্য সচিব তারিক হোসেন মিঠুল প্রমুখ। 
 
বক্তারা বলেন, বর্তমানে ধুলা দূষণ প্রকট আকার ধারণ করেছে। ধুলা দূষণে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে রোগ-ব্যাধির প্রকোপ। রাস্তার পাশের দোকানের খাবার বিষাক্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। শ^াস প্রশ^াসের মাধ্যমে রোগ জীবাণু মিশ্রিত ধুলা ফুসফুসে প্রবেশ করে সর্দি-কাশি, ফুসফুসের ক্যান্সার, ব্রঙ্কাইটিস, হাপানি, যক্ষা, এলার্জি, চোখ জ¦ালা, মাথা ব্যাথা, বমি ভাব, চর্মরোগসহ নানা জটিল রোগের সৃষ্টি করছে। শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ ব্যাক্তিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ায় ধুলা দূষণের ফলে তার বেশি ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে। যা জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। তাই পরিসেবার অবকাঠামো তৈরি, সম্প্রসারণ ও মেরামত করার সময় খননকৃত মাটি ও অন্যান্য সামগ্রী রাস্তায় ফেলে না রেখে বিধি মোতাবেক দ্রুত অপসারণ করতে হবে। রাস্তাঘাট ও ফুটপাত নিয়মিত পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও মেরামত করতে হবে। ধুলা দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইনসমূহ বাস্তবায়ন এবং সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে তাদের উপর অর্পিত আইনানুগ দায়িত্ব আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, সততা ও স্বচ্ছতার সাথে পালন করতে হবে।