ঐতিহ্যবাহী ধানমন্ডি ঈদগাহ মাঠ বিভিন্নভাবে দখলের পায়তারা

ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোড়ের ঈদগাহ মাঠটি মোগল স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন। ঐতিহাসিক এ ঈদগাহ মাঠটি এখনো পর্যন্ত টিকে থাকা মোগলদের প্রথম স্থাপত্যশৈলী। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় প্রায় ৪০০ বছরের পুরানো ইতিহাসখ্যাত এ ঈদগাহ মাঠটি অপরিকল্পিতভাবে সুউচ্চ ইমারত গড়ে এবং নানাভাবে দখলের প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া এর ভিতরে অবাধে চলছে বিভিন্ন অবৈধ কর্মকান্ড। যা মোগল স্থাপত্যের এই অদ্বিতীয় নিদর্শনটির ধ্বংস ত্বরান্বিত করছে। ঐতিহ্যগত অবস্থান বিবেচনায় ধানমন্ডি ঈদগাহ মাঠটির সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা জরুরী। ১৯ জুন ২০১২, মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন পবা’র উদ্যোগে বিশিষ্ট স্থপতি অধ্যাপক সামসুল ওয়ারেসের নেতৃত্বে একটি টিম পরিদর্শনে গিয়ে উক্ত অভিমত ব্যক্ত করেন।

পরিদর্শন কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী নিসার হোসেন, পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, কো-অর্ডিনেটর সাবিনা নাঈম, স্থপতি সাজ্জাদুর রশিদ, শিল্পী সাগর লোহানী, স্টেট ইউনির্ভাসিটির শিক্ষক স্থপতি তনিমা তাবাস্সুম প্রমুখ।

পরিদর্শন শেষে স্থপতি সামসুল ওয়ারেস জানান- ১৬৪০ সালে নির্মিত ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ধানমন্ডি ঈদগাহ মাঠটিকে আড়াল করে  পূর্ব পাশে মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। পশ্চিম দিকটায় পাঠাগারের নামে বিল্ডিং করে দখল করা হয়েছে। ওয়াসা এবং পিডবি-উডির খুড়াখুড়ি চলছে মাঠের দেয়ালের ঘেঁষে। বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রী যত্রতত্র ফেলে রাখা হয়েছে এবং ঈদগাহ মাঠের দেয়ালকে সাইড দেয়াল হিসেবে ব্যবহার করে কর্মচারীদের থাকার ঘর তৈরি করা হয়েছে। ফলে এখন আর ঈদগাহ মাঠের দেয়াল আলাদা করে দেখাই যায় না। তাছাড়া মাঠের সবদিকটাই অপরিচ্ছন্ন নোংরা আবর্জনায় ভরা। সব মিলিয়ে বুঝার উপায় নেই এখানে আমাদের ইতিহাসের গর্বের এক বড়  নিদর্শন রয়ে গেছে।  

পরিদর্শন থেকে আরও জানানো হয়- ঢাকা শহরের মাঝখানে অতি পুরানো এই স্থাপত্য আমাদের গর্বের। সঠিক পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে পর্যটকদের জন্য এটি একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান হতে পারে এবং অল্প খরচেই এটি করা সম্ভব। মাঠটির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মসজিদ কমিটি, পিডবি¬উডি, প্রতœতত্ত্ববিদ এবং পরিবেশবাদীদের সমন্বয়ে একটি কমিটি করা দরকার। অপ্রয়োজনীয় সকল স্থাপনা উচ্ছেদ করে দেয়ালগুলো ভেঙ্গে গ্রিল লাগিয়ে দিলে এবং উচ্ছেদকৃত খোলা জায়গায় বাগান করে সহজেই ঈদগাহ মাঠটিকে পর্যটক আকৃষ্ট দর্শনীয় স্থান করা সম্ভব।