ঐতিহ্যবাহী হিঙ্গা বিবি মসজিদ রেখেও নতুন মসজিদ নির্মাণ কাজ করা সম্ভব

পুরান ঢাকার কে. পি. ঘোষ রোড়ের হিঙ্গা বিবি মসজিদটি সুদৃশ্য কারুকাজ, দৃষ্টিনন্দন অলংকরণ আর নির্মাণ শৈলীতে মোগল স্থাপত্যরীতির পূর্ণ প্রকাশ। প্রায় ৩০০ বছরের পুরানো এ ঐতিহাসিক স্থাপত্যটি ভেঙ্গে নতুন করে বহুতল বিশিষ্ঠ মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। ঐতিহ্যগত অবস্থান বিবেচনায় হিঙ্গা বিবি মসজিদটি যদিও আংশিক ভাঙ্গা হয়েছে এখনও এটি সংরক্ষণ করে নতুন মসজিদ নির্মাণ কাজ করা সম্ভব। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন পবা’র ঐতিহ্য সংরক্ষণ বিষয়ক একটি বিশেষজ্ঞ টিম আজ ১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৪, মঙ্গলবার, সকাল ১১:৩০ টায় ঐতিহ্যবাহী হিঙ্গা বিবি মসজিদ সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করে। 

পবার ঐতিহ্য সংরক্ষণ টিমের আহবায়ক বিশিষ্ট স্থপতি অধ্যাপক সামসুল ওয়ারেসের নেতৃত্বে পরিদর্শন টিমে অংশ নেন স্থপতি সাজ্জাদুর রশিদ, পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, সমন্বয়কারী আতিক মোরশেদ প্রমুখ।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়-পুরোনো মসজিদে মুসল্লিদের জায়গা হয় না বিধায় মসজিদটি ভেঙ্গে বহুতল করা হচ্ছে। পুরনো মসজিদ সংরক্ষণ করেও নতুন মসজিদ নির্মাণ কাজ করা সম্ভব এটি জানানো হলে তারা এ ঐতিহাসিক মসজিদ ভাংগার জন্য উদ্যোক্তাদের অজ্ঞতার নিন্দা করেন। পবার টিমের নিকট তারা মসজিদটি সংরক্ষণেরও দাবী জানায়। 
পরিদর্শন ও প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়- মোগল আমলে নির্মিত ঢাকায় সেই সময়ের বাসিন্দা কোনো এক হিঙ্গা বিবি মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করে ৩১ কাঠা জায়গাসহ এটি ওয়াক্ফ করে যান। বহুদিন সংস্কার না করায় ভেতর থেকে সুরকি, পলেস্তারা খসে পড়ছে। ছাদও ধসে পড়ার আশষ্কা। এসব বাস্তব কারণে, দেখিয়ে মসজিদের ব্যবস্থাপনা কমিটি গত বছর থেকে সম্প্রসারণের কাজ শুরু করে। ওয়াক্ফ করা জায়গা দখল করে সেখানে ২১টি দোকান ও একটি তিনতলা বাড়ি করা হয়েছে। এগুলো ভেঙে নতুন মসজিদ না করে ৩০০ বছরের পুরনো এ ঐতিহ্যবাহী মসজিদ ভাঙ্গা কোনভাবেই গ্রহণ যোগ্য নয়। তাছাড়া হিঙ্গা বিবি মসজিদ সংরক্ষণ করেই নতুন মসজিদ নির্মাণ করা সম্ভব বলে জানান স্থা+পত্যবিদ সামসুল ওয়ারেস। মসজিদের জায়গা অবৈধভাবে দখলকারীদের উচ্ছেদের জন্য মুসল্লিদের প্রতি আহবান জানানো হয়। 


প্রতœতত্ব অধিদপ্তরের নির্লিপ্ততা এবং ঐতিহ্য বিষয়ক সচেতনতার অভাবে হিঙ্গা বিবি মসজিদের মতো বহু ঐতিহাসিক স্থাপনা সংরক্ষণ কঠিন হয়ে পড়ছে। আমাদের গৌরবময় অতীতকে জানতে ও অতীতের সাথে আমাদের সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে ঐহিত্য বিষয়ক জ্ঞানের প্রসার জরুরী।