অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকান্ড ও হতাহতে ১৭ সদস্যের নাগরিক তদন্ত কমিটি গঠিত
 
 
যাত্রীভর্তি ‘এমভি অভিযান-১০’ লঞ্চে অগ্নিকান্ড ও হতাহতের প্রকৃত কারণ উদঘাটন, দায়ীদের চিহ্নিতকরণ এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকিমুক্ত জনবান্ধব নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট নাগরিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়ন আন্দোলন এবং নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটিসহ ১৫টি সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি এবং পরিবেশ, নদ-নদী, নৌ যোগাযোগ ও নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়। মঙ্গলবার সকালে রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডির কলাবাগানে পবা কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির চেয়ারম্যান আবু নাসের খান কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কমিটি আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। 
 
নাগরিক তদন্ত কমিটির আহŸায়ক করা হয়েছে পবা চেয়ারম্যান আবু নাসের খানকে। কমিটির সদস্য সচিব ও প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্ব পেয়েছেন যথাক্রমে যথাক্রমে নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়ন আন্দোলনের সদস্যসচিব আমিনুর রসুল বাবুল এবং সাংবাদিক, লেখক ও নৌ পরিবহনবিষয়ক গবেষক আশীষ কুমার দে। কমিটিতে বিশেষজ্ঞ হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. মীর তারেক আলী, পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক এবং যুক্তরাজ্যের গøাসগো’র ভি শিপ্স এর সাবেক প্রধান নৌপ্রকৌশলী মো. আবদুল হামিদ। 
এছাড়া নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া, নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন, বিআইডবিøউএর সাবেক সচিব সৈয়দ মনোয়ার হোসেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নিশাদ মাহমুদ, কালের কন্ঠর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নিখিল ভদ্র, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের (নাসাফ) সাধারণ সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, আইনজীবী ও গবেষক এ্যাডভোকেট জীবনানন্দ জয়ন্ত, কোস্ট ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল আকন্দ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা’র যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, বিআইডবিøউটিএর সাবেক কর্মকর্তা প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ ও পুরনো ঢাকা পরিবেশ উন্নয়ন ফোরামের আহŸায়ক মো. নাজিম উদ্দিনকে নাগরিক তদন্ত কমিটির সদস্য রাখা হয়েছে। 
 
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নাগরিক তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করার পর সুপারিশমালাসহ এই প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থা সংশ্লিষ্ট সংস্থা/অধিদপ্তরগুলো, নৌযান মালিক সমিতি এবং নৌযান শ্রমিক সংগঠনগুলোর কার্যালয়ে দেয়া হবে। এছাড়া অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দু’জন আইনজীবীর করা আলাদা দুটি রিট পিটিশন উচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকায় নাগরিক কমিটির প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে আদালতের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে উপস্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। 
 
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান আশীষ কুমার দে। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন আবু নাসের খান, আমিনুর রসুল বাবুল, পবা’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান ও প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ। আবু নাসের খান বলেন, এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকান্ড ও হতাহতের প্রকৃত কারণ উদঘাটন, দায়ীদের চিহ্নিতকরণ এবং ভবিষ্যতে দুর্ঘটনার ঝুঁকিমুক্ত জনবান্ধব নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি হাজী মো. শহীদ মিয়া, ব্যারিস্টার নিশাদ মাহমুদ, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী প্রমুখ।