শব্দ সন্ত্রাস বাসযোগ্য নগরী ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ; শব্দ সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই
আমরা জানি শব্দ এক ধরনের শক্তি, যা কোনো মাধ্যমের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। শব্দ যখন দৈহিক ও মানসিক যন্ত্রণার সৃষ্টি করে তখন তাকে শব্দ দূষণ বলে। সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি শব্দ দূষণের ফলে রাজধানী ঢাকা এখন শব্দ দূষণের শহরে পরিণত হয়েছে। স্বাভাবিক বা সহনীয় শব্দের মাত্রা ৫৫ থেকে ৬০ ডেসিবেল। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ৬০ ডেসিবেলের অধিক শব্দ যদি দীর্ঘসময় ধরে থাকে তাহলে সাময়িক বধিরতা আর ১০০ ডেসিবেলের বেশি হলে স্থায়ী বধিরতা (চবৎসধসবহঃ উবধভহবংং) হতে পারে। একটি ব্যস্ত সড়কে সাধারণত ৭০ কিংবা ৮০ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ তৈরি হয়। বিধিমালা অনুযায়ী আবাসিক এলাকায় রাত নটা থেকে ভোর ছটা পর্যন্ত শব্দের মাত্রা ৪৫ ডেসিবেল এবং দিনের অন্য সময়ে ৫৫ ডেসিবেল অতিক্রম করতে পারবে না। বাণিজ্যিক এলাকায় তা যথাক্রমে ৬০ ও ৭০ ডেসিবেল। সেখানে রাতে ৪০ ও দিনে ৫০ ডেসিবেল শব্দ মাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া আছে। যা সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি ফলে শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাসে পরিণত হয়েছে। এ দূষণের প্রধান উৎস বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কার, টেম্পো, অটো রিক্সা, মোটরসাইকেল সহ বিভিন্ন যানবাহনের হাইড্রলিক হর্ন। ইদানীং কিছু মোটরসাইকেল চালক আইনের তোয়াক্কা না করে ক্রমাগত হর্ণ বাজিয়ে দ্রæত গতিতে গাড়ি চালিয়ে পথ চলে। এতে শব্দ দূষণ তো বটেই পথচারীরা বিভ্রান্ত, আতঙ্কিত হন এবং দুর্ঘটনা ঘটে। এমনকি এক শ্রেণির প্রাইভেট কার চালকদের অহেতুক, অকারণ বিরামহীন হর্ণ বাজানো একটি নেশা কিংবা চালকদের হাম্বরা ভাবের অনাকাক্সিক্ষত ঔদ্ধত্ব প্রকাশ! যা ছোট শিশু, বয়স্ক, অসুস্থ ব্যক্তিবর্গ সহ বসবাসযোগ্য নগরী ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। অতিসত্ত¡র এসব যানবাহনের হর্ণের দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং শব্দ সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। 
আমরা জানি শব্দ এক ধরনের শক্তি, যা কোনো মাধ্যমের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়। শব্দ যখন দৈহিক ও মানসিক যন্ত্রণার সৃষ্টি করে তখন তাকে শব্দ দূষণ বলে। সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি শব্দ দূষণের ফলে রাজধানী ঢাকা এখন শব্দ দূষণের শহরে পরিণত হয়েছে। স্বাভাবিক বা সহনীয় শব্দের মাত্রা ৫৫ থেকে ৬০ ডেসিবেল। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ৬০ ডেসিবেলের অধিক শব্দ যদি দীর্ঘসময় ধরে থাকে তাহলে সাময়িক বধিরতা আর ১০০ ডেসিবেলের বেশি হলে স্থায়ী বধিরতা (চবৎসধসবহঃ উবধভহবংং) হতে পারে। একটি ব্যস্ত সড়কে সাধারণত ৭০ কিংবা ৮০ ডেসিবেল মাত্রার শব্দ তৈরি হয়। বিধিমালা অনুযায়ী আবাসিক এলাকায় রাত নটা থেকে ভোর ছটা পর্যন্ত শব্দের মাত্রা ৪৫ ডেসিবেল এবং দিনের অন্য সময়ে ৫৫ ডেসিবেল অতিক্রম করতে পারবে না। বাণিজ্যিক এলাকায় তা যথাক্রমে ৬০ ও ৭০ ডেসিবেল। সেখানে রাতে ৪০ ও দিনে ৫০ ডেসিবেল শব্দ মাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া আছে। যা সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি ফলে শব্দ দূষণ এখন শব্দ সন্ত্রাসে পরিণত হয়েছে। এ দূষণের প্রধান উৎস বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কার, টেম্পো, অটো রিক্সা, মোটরসাইকেল সহ বিভিন্ন যানবাহনের হাইড্রলিক হর্ন। ইদানীং কিছু মোটরসাইকেল চালক আইনের তোয়াক্কা না করে ক্রমাগত হর্ণ বাজিয়ে দ্রæত গতিতে গাড়ি চালিয়ে পথ চলে। এতে শব্দ দূষণ তো বটেই পথচারীরা বিভ্রান্ত, আতঙ্কিত হন এবং দুর্ঘটনা ঘটে। এমনকি এক শ্রেণির প্রাইভেট কার চালকদের অহেতুক, অকারণ বিরামহীন হর্ণ বাজানো একটি নেশা কিংবা চালকদের হাম্বরা ভাবের অনাকাক্সিক্ষত ঔদ্ধত্ব প্রকাশ! যা ছোট শিশু, বয়স্ক, অসুস্থ ব্যক্তিবর্গ সহ বসবাসযোগ্য নগরী ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ। অতিসত্ত¡র এসব যানবাহনের হর্ণের দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে এবং শব্দ সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। 
 
এমতাবস্থায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) সহ সমমনা ১২ টি সংগঠন- পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ, মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্র, দেবীদাস ঘাট সমাজ কল্যাণ সংসদ, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগ, বিডি ক্লিক, জাতীয় সচেতন ফাউন্ডেশন (জাসফা), বানিপা, মৃত্তিকা, পরিস্কার ঢাকা, গ্রিনফোর্স, ওল্ড ঢাকা কমিউনিটি এর যৌথ উদ্যোগে আজ ২৬ ফেব্রæয়ারি ২০২২, শনিবার, সকাল ১১ টায় শাহবাগস্থ জাতীয় জাদুঘরের সামনে “শব্দ সন্ত্রাস বাসযোগ্য নগরী ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ; শব্দ সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ ও দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই” শীর্ষক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। 
 
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান-এর সভাপতিত্বে উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ’র সভাপতি আমির হাসান মাসুদ, পুরান ঢাকা নাগরিক উদ্যোগ এর সভাপতি নাজিমউদ্দীন, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ এর সভাপতি আমিনুল ইসলাম টুব্বুস, দেবীদাস ঘাট সমাজ কল্যাণ সংসদের সভাপতি মো: মুসা, বানিপা এর সভাপতি প্রকৌ. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, মৃত্তিকা’র সমন্বয়ক খাদিজা খানম, জাতীয় সচেতন ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম মনির, পরিষ্কার ঢাকা এর সমন্বয়ক মো. শাহজাহান, ওল্ড ঢাকা কমিউনিটি’র সভাপতি মো: আব্দুল্লাহ, মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্রে’র সদস্য শাহিন ইসলাম প্রমুখ। 
 
উক্ত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, মাইকের শব্দ, ভবন নির্মাণের সামগ্রী, ইট গুঁড়া করার যন্ত্র, পণ্যের বিজ্ঞাপন, জেনারেটর, সামাজিক অনুষ্ঠান, সভা সেমিনার, নববর্ষ ইত্যাদি শব্দ দূষণের মূখ্য কারণ না হলেও অতি উচ্চমাত্রার শব্দ সৃষ্টিকারী সাউন্ড সিস্টেম এবং আতশবাজির শব্দ সহনীয় মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। শব্দ দূষণের কারণে বধিরতা, হৃদরোগ, মেজাজ খিটখিটে,  শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ব্যঘাত ঘটছে, ঘুম না হওয়াসহ নানা রকম অসংগতি দেখা দিচ্ছে। তাই সকল উচ্চ শব্দের উৎস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে হবে এবং দায়ীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
 
চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে, যদি টানা ৮ ঘন্টা ৯০ থেকে ১০০ ডেসিবেল শব্দ প্রতিদিন শোনা হয়, তাহলে ২৫ বছরের মধ্যে শতকরা ৫০ জনের বধির হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শব্দ দূষণ চোখ ও মাথার বিভিন্ন সমস্যার জন্যও দায়ী। শহরের বেশীরভাগ মানুষই মাথার যন্ত্রণায় ভোগে-যার অন্যতম কারন শব্দ দুষণ। এছাড়া ক্রমাগত শব্দ দূষণের ফলে মানুষ হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, গ্যাস্ট্রিক এমনকি লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ঢাকা শহরে যেভাবে শব্দ দূষণ বেড়ে চলেছে তাতে এ শহরের অর্ধেক মানুষের শ্রবণ ক্ষমতা ৩০ ডেসিবেল পর্যন্ত কমে যাবে। এজন্য নিজের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে সমাজ থেকে বিতাড়িত করতে হবে শব্দ দূষণ।
আমাদের দাবী সমূহঃ
১. শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা জরুরি বাস্তবায়নেপ পরিবেশ অধিদপ্তর সহ সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সময় ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা  গ্রহণ ও বাস্তবায়নের জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
২. শব্দ দূষণকারী সন্ত্রাসীদের চিহ্নিতকরণ, শব্দ সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণ এবং দায়ীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা।
৩. মোটরযান মালিক ও ড্রাইভারদের উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকারী হর্ণ ব্যবহার থেকে বিরত রাখতে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা।
৪. মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণহীন গতিবেগ ও শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া। 
৫. উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকারী জেনারেটর, হর্ণ, যন্ত্রপাতি আমদানি ও ব্যবহার বন্ধ করা।
৬. বেতার, টেলিভিশন ও সংবাদপত্রের মাধ্যমে জনগণকে শব্দ দূষণের অপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলা।
৭. শব্দ দূষণের প্রকোপ কমাতে হলে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পর্যায়ে প্রত্যেককে শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সংযমী হওয়া।
৮. আবাসিক এলাকার শেষ সীমানা থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যে নির্মাণ কাজের জন্য ইট বা পাথর ভাঙার মেশিন ব্যবহার না করা।
৯. বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক বা অন্য কোনো ধরনের সভা সমাবেশের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সাউট সিস্টেম যেন শব্দের মাত্রা অতিক্রম না করে সে ব্যবস্থা গ্রহণ করা।