বুড়িগঙ্গার বর্জ্য উত্তোলনের চেয়ে বর্জ্য নিক্ষেপ বন্ধ করা বেশি গুরুত্বপূর্ন
বুড়িগঙ্গার বর্জ্য উত্তোলনের চেয়ে বর্জ্য নিক্ষেপ বন্ধ করা বেশি গুরুত্বপূর্ন
 
বুড়িগঙ্গার জীবন ফিরিয়ে আনতে চলমান বর্জ্য উত্তোলনের চেয়ে বর্জ্য নিক্ষেপ বন্ধের উদ্যোগ অধিক জরুরী। কেমিক্যাল মিশ্রিত তরল বর্জ্য নদীতে ফেলা বন্ধ না হলে পানি দূষণ কমবেনা। বুড়িগঙ্গা ২য় সেতুর নিচে থেকে পাড়ের উপর হতে বেয়ে আসা জমাকৃত বালু উত্তোলন করা খুব একটা যুক্তিযুক্ত নয়। ঝাউচর এলাকায় একেবারে বুড়িগঙ্গার তীর ঘেষে উত্তোলিত বর্জ্য ফেলা হচ্ছে এবং কতিপয় ডেভেলপারের মর্জি অনুযায়ী হাউজিং করার নিমিত্ত এ বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। তাছাড়া নদীর একেবারে পাড়ে ফেলায় বৃষ্টির পানিতে যে কোন সময় আবার বর্জ্য নদীতে পড়বে। কঠিন বর্জ্য নদীতে ফেলা কিছুটা কম মনে হলেও বিষাক্ত তরল বর্জ্য ফেলা বন্ধের কোন লক্ষণ দেখা যায়নি। আজ ১৮ ফেব্র“য়ারী ২০১০ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে সকাল ১০:০০টা বিশেষজ্ঞদের বুড়িগঙ্গার বর্জ্য উত্তোলন কার্যক্রম সরেজমিনে পরিদর্শন অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞগণ এ অভিমত ব্যক্ত করেন।      
 
পরিদর্শন টিমে ছিলেনÑ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ.এম.এম সফিউল্লাহ, কেমিক্যাল সোসাইটি’র সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার ফর এক্্িরলেন্স এর ডাইরেক্টর  অধ্যাপক ড. মহিবুর রহমান, ঢা:বি: জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডীন ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল বাসার, ঢা:বি: জীব বিজ্ঞান অনুষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নুরজাহান সরকার, কেমিক্যাল সোসাইট’র ভাইস প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক শফিকুল আলম, পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও নদী বিষয়ক কমিটি’র সদস্য অধ্যাপক ড. আফসারুল করীম, ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টর চিফ অফিসার ক্যাপ্টেন বিপন কুমার সাহা এবং পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান।   
 
একদিকে বুড়িগঙ্গার তলদেশ পরিচ্ছন্ন অভিযান চলছে অন্যদিকে নদীর দু’পাশ হতে নদীতে ময়লা ফেলা অব্যাহত আছে। বর্জ্য উত্তোনের ক্ষেত্রে যতটা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সেই তুলনায় বর্জ্য নিক্ষেপের বিষয়ে একেবারেই গাছাড়া ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ওয়াসা ও সিটি কর্পোরেশনের লাইনের মাধ্যমে কোন কোন কারখানার বর্জ্য আসছে তা চিহ্নিত করা প্রয়োজন এবং এখনও এ উদ্যোগ গ্রহণের তৎপরতা নেই। বর্তমানে কঠিন বর্জ্য নদীতে নিক্ষেপ কিছুটা কমলেও একেবারে বন্ধ হয়নি। অবিলম্বে বিষাক্ত বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে তা নাহলে বুড়িগঙ্গার এই পরিচ্ছন্ন অভিযান করে লাভ হবেনা এবং নদীকে বাঁচানো হবে দুষ্কর। বুড়িগঙ্গার তলদেশ পরিচ্ছন্ন অভিযান সফল করতে যে সকল সমস্যাগুলি সামনে আসছে তা সাইন্টিফিক্যালি বিশ্লেষন করে তার সঠিক সমাধান করা। পাশাপাশি নদীর সাথে সংশ্লীষ্ট সকল সরকারী প্রতিষ্ঠানের সমন্বয় প্রয়োজন।  
 
পূর্ব অভিজ্ঞতা বহির্ভুত এই পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণ করতে গিয়ে অনেকগুলো প্রতিবন্ধকতাই তাৎক্ষনিক দৃষ্টিগোচর হয়নি। এখন পর্যায় ক্রমে বিভিন্ন সমস্যা সামনে আসছে কিন্তু সে সমস্যাগুলো দ্রুততার সাথে সরকারের নদী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলির  সমন্বয়ের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। 
 
আজকের পরিদর্শন টিমের বিশেষজ্ঞগণ আগামী ২৫ ফেব্র“য়ারী বিকেল ৪টায় পবা’র উদ্যোগে বুয়েটের উপাচার্য মহোদয়ের কার্যালয়ে বুড়িগঙ্গার বর্জ্য উত্তোলন কার্যক্রমের উপর সুপারিশমালা প্রণয়ন করবেন।